প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ১১ তারিখ পালিত হয়ে থাকে ‘প্রমিস ডে’ বা ‘প্রতিশ্রুতি দিবস’। ভালোবাসার সম্পর্কে প্রাথমিক শর্ত পাশে থাকা। কঠিন বিপদে হাত না ছাড়ার প্রতিজ্ঞা। তাই সম্পর্কের ক্ষেত্রে দিনটি গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতীয় সংগীতশিল্পী অনুপম রায় ব্যক্তিগত জীবনে একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। আবার ভেঙেও গেছে। অভিজ্ঞতার আলোকে এ সংগীতশিল্পী মনে করেন, সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি না থাকলে সেই সম্পর্ক গড়েই ওঠে না। কিন্তু সেগুলো খুবই ব্যক্তিগত। তাই রাখা বা না-রাখা নিয়ে খুব বেশি ভাবতে বা বাইরের কাউকে জানাতে নারাজ তিনি।

অন্যকে নয় নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুপমের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তার ভাষায়, “অন্যকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলেও খানিক মিথ্যা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়া যায়। কিন্তু নিজেকে দেওয়া কথা না রাখতে পারলে পার পাওয়া যায় না।”

আরো পড়ুন:

‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি

টেকনিশিয়ান-পরিচালকের দ্বন্দ্ব, টলিউডে শুটিং পুরোপুরি বন্ধ

এমন কোনো প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন অনুপম? জবাবে এই গায়ক বলেন, “এই যেমন মাঝেমাঝেই নিজেকে প্রতিশ্রুতি দিই, আগামী ছয় মাসে মিষ্টি ছুঁয়ে দেখব না। কিন্তু রাখতে পারি না। বিশেষত এই শীতের নলেনগুড়, সে কি ছেড়ে থাকা যায়? তাই রোজ সকালে নিজেকে বোঝাই। কিন্তু দুপুর গড়াতে না গড়াতেই দেখি আড়াইখানা মিষ্টি খেয়ে ফেলেছি। এ আমার বড় দুর্বলতা, লোভের ফাঁদ এড়াতে পারি না।”

তবে অন্যের দেওয়া কথায় আজকাল খুব একটা বিশ্বাস করেন না অনুপম। আসলে মানুষের ধর্মই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা। তার ভাষায়, “ছোটবেলায় খুব কষ্ট পেতাম। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এগুলো সয়ে গিয়েছে। মানুষ ভাবে এক আর হয় আর এক— এটাই জীবনের অঙ্গ।”

যে যেভাবেই বলুন না কেন, তাতে খুব একটা ভরসা পান না অনুপম। তাহলে কি নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়ে চলেন? জবাবে গায়ক বলেন, “এত কিছু তো বলতে পারব না।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে: সলিমুল্লাহ খান

লেখক ও অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমাদের বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে হবে, পুলিশের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। পুলিশের যে পজিশনে থাকার কথা ছিল সে পজিশনে নেই। পুলিশ যেই আইনে চলে সেখানে পদে পদে সমস্যা আছে। এসব বিষের মাঝেমধ্যে আলোচনা করা উচিত এবং খোলাখুলি আলোচনা হওয়া উচিত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহের বিশেষ আয়োজন ‘নাগরিক ভাবনায় জনতার পুলিশ: নিরাপত্তা ও আস্থার বন্ধন’ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, পুলিশ শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ নয়, সমাজেরও অংশ। পুলিশের সঙ্গে জনতার বিভক্তির মূলে যেতে হবে, এটা হলো জনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিভক্তি। আর এই সমস্যার সমাধান হলো গণতন্ত্র।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি আব্দুল কায়ুম বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেল, একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল; ছাত্র-জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছে, তারা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়। একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতার পর। কিন্তু সঠিকভাবে আমরা এগোতে পারিনি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই যে একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক স্বপ্ন, এই স্বপ্ন যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত আমরা যা দেখলাম, তা কল্পনা করা যায় না। আগেও গণতন্ত্র ছিল না, কিন্তু আমরা সেবা দিতে পেরেছি। তবে গত ১৫ বছরের মতো আমরা দারোয়ানে পরিণত হইনি। গণতন্ত্র থাকলে যে সুবিধাটা হয়, সেটা হলো, পাঁচ বছর পর আপনাকে ভোটারদের কাছে যেতে হবে এবং মেন্ডেট নিতে হবে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন না। ২০০৯ সালের নির্বাচন যে খুব নিখুঁত হয়েছে, তা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না। তার পরবর্তী তিনটা নির্বাচনে যা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। যখন একচ্ছত্র ক্ষমতা এসে যায় তখন প্রশাসন ভেঙে পড়ে। এটা ভয়, খুন-গুম ও সন্ত্রাস দ্বারা সম্ভব হয়েছে। এ সময়টাতে শুধু এক শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা না সব সেক্টরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা অতি উৎসাহিত হয়ে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, যা হওয়ার হয়েছে, আমাদের আবার নতুন করে মানুষের সেবা দিতে হবে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং করতে হবে।

সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা পুলিশ সংস্কার কমিশনকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেন, সংস্কার কমিশন পুলিশের বিষয়ে বলছে, অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার–যদি এই কথা বলা হয়, তাহলে এই সংস্কার কমিশনের কী দরকার। এই পুলিশ কমিশন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন নিয়ে কিছু বলে না গণ্ডগোল কিন্তু ওইখানেও আছে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যদি না থাকে তাহলে পুলিশ কীভাবে কাজ করবে। যাদের সুবাদে আমরা আজ কথা বলতে পারছি, সেটা কতদিন বলতে পারবো সেটার কোনও গ্যারান্টি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর যদি সদিচ্ছা না থাকে তাহলে সম্ভব না।

তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক কিন্তু ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার। এটা বদলানো পুলিশের হাতে নাই। পুলিশের অনেক অফিসাররা দুর্নীতিতে জড়িয়েছে।

পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন– নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল হুদা, এপেক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির মঞ্জু, কর্ম কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সায়মা চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ