আগুনঝরা ফাগুনে মেতেছে নাটোরের উত্তরা গণভবন। চারদিকে পাখির কলতান। বাতাসে হাজারো ফুলের সুবাস। ফুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বর্ণিল পোশাকে সেজেছেন দর্শনার্থীরা। সারি সারি ফুলবাগানের পাশে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছেন। শুক্রবার সকালে বসন্তবরণের দিনে (শুক্রবার সকালে) উত্তরা গণভবন ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে।

ছুটির দিনে শীতের সকালে এমনিতেই উত্তরা গণভবনে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে। তবে আজকের ভিড় একটু অন্য রকম। রোববার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন সকাল ১০টা থেকে ২০ টাকায় টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও আজ সকাল ৯টা থেকেই গণভবন দর্শনার্থীতে ঠাসা। সবার শরীরে বর্ণিল পোশাক। মেয়েরা পরেছেন শাড়ি, ছেলেরা পাঞ্জাবি।

গণভবনের প্রধান ফটকে ঢুকে দুই পাশ দিয়ে থাকা হলুদ গাঁদা ফুল দেখে প্রিয়জনের হাত ছেড়ে সবাই ছুটে যাচ্ছেন ফুলগুলো ছুঁয়ে দেখতে। নিরাপত্তাকর্মীদের বাধায় ইচ্ছা অপূর্ণ রেখে সামনে এগোতে হচ্ছে। এরপরই চোখে পড়ে বিশাল আকৃতির কালো রঙের কামান। ডান পাশে রাশি রাশি ফুলের বৃত্তাকার বাগান। বাগানে রয়েছে ডালিয়া, রাজ-অশোক, সৌরভী, পারিজাত, হাপরমালি, কর্পূর, হরীতকী, যষ্টিমধু, মাধবী, তারাঝরা, মাইকাস, নীলমণি লতা, বনপুলক, পেয়ালি, সেঁউতি, ও হৈমন্তী ফুলের গাছ।

বাগানের মালিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এবার উত্তরা গণভবনের বাগান সাজাতে অন্তত ৪০ প্রজাতির ২০ হাজারের বেশি ফুলগাছ লাগানো হয়েছে। এসব গাছ দিয়ে খণ্ড খণ্ড বাগান করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফুল ফুটেছে ইতালিয়ান গার্ডেনে। নিরাপত্তার কারণে সেখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। বাগানটি মূল ভবনের দক্ষিণ আঙিনায়। সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে পুরো ভবনের ছবি পাওয়া যায়। দর্শনার্থীদের ঢোকার আগ্রহ থাকে বেশি। তবে বাগানের ভেতরে থাকা শ্বেতপাথরের মূর্তির নিরাপত্তার কথা ভেবে বাগানটি সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। তবে ফুলের সংখ্যার দিক থেকে উত্তর আঙিনার বাগানে দর্শনার্থীদের সমাগম বেশি। দক্ষিণ বাগানের আকর্ষণ; পাশেই রানির পুকুর ও শ্বেতপাথর দিয়ে বাঁধানো ঘাট।

ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে নাটোরের উত্তরা গণভবন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২’

কক্সবাজার জেলার লোকসংগীত শিল্পী বুলবুল আক্তার। এই শিল্পী নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারের নিজস্ব ভাষা, সুর ও সংস্কৃতি। কালো বোরকার ফ্যাশনে সাধারণ ও সরল চেহারার এই শিল্পীর দরদি কণ্ঠে ফুটে ওঠে প্রেম, বিরহ, সমাজ ও প্রান্তিক জীবনের গল্প। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গেয়েছেন ‘মধু হইহই বিষ খাওয়াইলা’ ও ‘হালাসান গলার মালা’।

রসিক আড্ডার আয়োজনে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় আয়োজিত হয় জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মাঠে এই আয়োজন চলে। দুপুরে বৃষ্টি এলে ভিজে বৃষ্টিবিলাসে মেতে ওঠেন আয়োজক এবং অনুষ্ঠান দেখতে আসা অনেকে।

অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিল বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া। দূর থেকে মঞ্চে তাকালে বাঙালির ঐতিহ্যই চোখে ভেসে ওঠে। মঞ্চ তৈরি করা হয় প্রতীকী গ্রামবাংলার দৃশ্য কলাগাছ ও খড়ের ঘর দিয়ে। তা ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের বর্ষবরণকে ফুটিয়ে তুলতে এই আয়োজনে ছিল ধামাইল নাচ, চাকমা, মারমা ও খুমি জনগোষ্ঠীর নৃত্য ও আধুনিক নৃত্য। ব্যান্ডের মধ্যে ছিল ফিরোজ জঙ, আপনঘর, Sacrament-গারো ব্যান্ড, ব্যান্ড লাউ।

এই আয়োজনে গ্রামীণমেলায় ছিল নাগরদোলা, বানরখেলা, রণপা, বায়োস্কোপ ও পুতুলনাচ। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের খাবার ও পোশাকের স্টল ছিল।  

আয়োজকদের একজন নাহিয়ান ফারুক বলেন,  রসিক আড্ডা বাংলাদেশের সংস্কৃতি পাঠ ও তা চর্চা করে। রসিক আড্ডার তিনটি ম্যাগাজিন রণপা, কলন্দর ও সিনেযোগ বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতি–নির্ভর আলোচনা করে এবং তা জনপরিসরে ফুটিয়ে তোলে। এরই ধারাবাহিকতায় এই আয়োজন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ