রাগবি, অ্যাথলেটিকস, বক্সিং, ফুটবলের পর ক্রিকেট—কোন খেলায় নেই তিনি
Published: 1st, March 2025 GMT
‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র।’
জেমস থমাসের নিশ্চয়ই সুনির্মল বসুর কবিতা পড়া নেই। পড়া থাকলে কবিতার এই লাইনকে খানিকটা ঘুরিয়ে নিজের মতো করে তিনি বলতে পারেন, ‘খেলার ভুবন পাঠশালা মোর, সব খেলার আমি ছাত্র।’
কেন? সে কথা বলতে গিয়ে সবার আগে জানিয়ে রাখা ভালো, ৪২ বছর বয়সী এই ভদ্রলোক এখন নিজে আর খেলেন না। কিন্তু খেলাধুলার জগতে বিভিন্ন ক্লাব বা সংস্থা পরিচালনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর মজাটাও ঠিক এখানেই। নিজে ছিলেন পেশাদার রাগবি খেলোয়াড়। সেখান থেকে পা রাখেন ক্রীড়া শিক্ষকতায়। তারপর ব্যবস্থাপক হিসেবে অ্যাথলেটিকস দিয়ে শুরু করে বক্সিং, জুডো ও জিমন্যাস্টিকস হয়ে এখন ফুটবল দুনিয়ায়। তবে এখানেই থাকছেন না; সামনে তাঁর পা পড়তে যাচ্ছে ক্রিকেটেও।
অর্থাৎ থমাসের পেশাদার কাজকর্ম শেখা বা করার পাঠশালা কোনো নির্দিষ্ট একটি খেলা নয়, বরং খেলাধুলার পুরো জগৎই। আর কে না জানে, যেকোনো কাজে জড়ালেই সেখান থেকে যেমন কিছু না কিছু শেখা যায়, তেমনি বিভিন্ন খেলায় মাঠের বাইরের কাজকর্ম থেকে থমাসও তো কিছু না কিছু শিখছেন!
সেই পথে থমাসের পা এখন ক্রিকেটে পড়ার অপেক্ষায়। ভদ্রলোক আপাতত ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির পারফরম্যান্স ডিরেক্টর। আগামী জুনে সিটি ছেড়ে ইংল্যান্ডের কাউন্টি দল ওয়ারউইকশায়ারের পারফরম্যান্স ডিরেক্টরের দায়িত্ব নেবেন। ওয়ারউইকশায়ার তাঁকে নিয়োগ দেওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেছে, টমাস ‘খেলাধুলার অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয় হাইপারফরম্যান্স বিশেষজ্ঞ’
ইংল্যান্ডের নর্থইস্ট থেকে উঠে আসা থমাস রাগবি খেলেছেন লিডসে। ২০০৪ সালে বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পোর্টিং এক্সিলেন্সে শিক্ষক হিসেবে তাঁর যাত্রা শুরু। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে থমাস ওয়েলশ অ্যাথলেটিকসে পারফরম্যান্স পাথওয়েজ ম্যানেজারের দায়িত্ব পান। এরপর ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন হুইলচেয়ার রাগবির সঙ্গেও নিজেকে জড়ান টমাস। সেখানে হেড অব অপারেশনসের দায়িত্বে ছিলেন।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ওয়েলস অ্যামেচার বক্সিং অ্যাসোসিয়েশনে পারফরম্যান্স ডিরেক্টরের পদ সামলান টমাস। সেখান থেকে ব্রিটিশ জুডো অ্যাসোসিয়েশনে যোগ দিয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পারফরম্যান্স পাথওয়ের সিনিয়র ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০২২ সাল পর্যন্ত সেখানে স্পোর্টস কনসালট্যান্সির পদও ধরে রেখেছিলেন থমাস। এর মধ্যেই আবারও অন্য খেলার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন তিনি। এবার ব্রিটিশ জিমন্যাস্টিকসের পারফরম্যান্স ডিরেক্টর, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত এই পদে ছিলেন থমাস।
ব্রিটিশ জিমন্যাস্টিকসেও ছিলেন জেমস টমাস.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা
দুই ঘণ্টার বৃষ্টিবিঘ্নের পর অবশেষে নাবি মুম্বাইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০২৫ এর প্রতীক্ষিত ফাইনাল। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ব্যাট হাতে মাঠে নামে ভারত।
শুরুটা দারুণ করে ‘উইমেন ইন ব্লু’। ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা গড়েন ১০৪ রানের জুটি। এই রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৫ রানে আউট হন মান্ধানা। আর তাতেই রচনা হয় নতুন ইতিহাস। মিতালি রাজকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের এক আসরে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হয়ে যান মান্ধানা।
আরো পড়ুন:
গৌহাটি টেস্টে ‘লাঞ্চের আগে টি-ব্রেক’! জানুন কেন এই ব্যতিক্রম
রোহিতের সেঞ্চুরির ‘হাফ-সেঞ্চুরি’, ঢুকলেন এলিট ক্লাবে
চলতি বিশ্বকাপে ৯ ইনিংসে মান্ধানার মোট রান ৪৩৪, যা ২০১৭ সালের আসরে মিতালি রাজের করা ৪০৯ রানের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ভারতের হয়ে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকা:
৪৩৪ – স্মৃতি মান্ধানা (২০২৫)
৪০৯ – মিতালি রাজ (২০১৭)
৩৮১ – পুনম রাউত (২০১৭)
৩৫৯ – হারমানপ্রীত কৌর (২০১৭)
৩২৭ – স্মৃতি মান্ধানা (২০২২)
এবারের আসরে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন মান্ধানা:
এখন পর্যন্ত দুইটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছেন স্মৃতি মান্ধানা। ২০১৭ সালের আসরেই প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। করেছিলেন ৩২৭ রান। আর এবার ২০২৫ বিশ্বকাপে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৪.২৫ গড়ে ৪৩৪ রান। যা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স।
তবে শুরুটা কিন্তু খুব একটা উজ্জ্বল ছিল না। প্রথম তিন ম্যাচে তিনি করেছিলেন মাত্র ৪৬ রান। কিন্তু এরপরই যেন জেগে ওঠেন। টানা দুটি ফিফটির পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে করেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি।
সেমিফাইনালে ভালো শুরু করেও বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি ২৯ বছর বয়সী এই ওপেনার। ফাইনালেও ভালো সূচনা করে ৫৮ বলে ৮টি চার মেরে ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরেন।
ঢাকা/আমিনুল