মাহবুব উল আলম হানিফ ও নাজমুল হাসান পাপনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
Published: 16th, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন, তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
এর আগে দুদকের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ ও নাজমুল হাসান পাপনের স্ত্রী-সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ ছাড়া তাঁর স্ত্রী ফৌজিয়া আলম, ছেলে ফাহিম আফসার আলম, মেয়ে তানিশা আলম ও ছেলে ফারহান সাদিক আলমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাহবুব উল আলম হানিফের বিরুদ্ধে পদ্মা ও গড়াই নদীর বালুমহাল থেকে চাঁদাবাজি, টেন্ডার–বাণিজ্য, নিয়োগ–বাণিজ্য ও হাটবাজার ইজারা–বাণিজ্য ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এর বাইরে মাহবুব উল আলম হানিফের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচার ও বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
আর নাজমুল হাসান পাপন, তাঁর স্ত্রী রোকসানা হাসান, মেয়ে সুনেহরা রহমান, রুশমিলা রহমান ও ছেলে রাফসান হাসানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়েছে, নাজমুল হাসান পাপন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীর সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ, তাঁর বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ ও তাঁদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় পটুয়াখালীর সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাস বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন।
মহিউদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তিনি বৈধভাবে ৫৫ কোটি ২০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৪ টাকা আয় করেছেন। এর মধ্যে পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ২৪ কোটি ৮২ লাখ ৬২ হাজার ৬৩৭ টাকা। ব্যয় বাদ দিলে তাঁর কাছে ৩৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ১৪৭ টাকার সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে মহিউদ্দিন আহম্মেদ ও তাঁর স্ত্রী মারজিয়া আখতার সুমার ভোগদখলে ৩৯ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৩ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে, যা বৈধ আয়ের তুলনায় ৮ কোটি ৭১ লাখ ৫৪ হাজার ২৩৬ টাকা বেশি। অনুসন্ধানে এ অতিরিক্ত সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, মেয়রের স্ত্রী মারজিয়া আখতারের ভোগদখলে স্বামীর আয়বহির্ভূত ২ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার ৪৬০ টাকার সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদের কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। স্বামীর অবৈধ সম্পদ নিজের ভোগদখলে রাখার অভিযোগে তাঁকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
সাবেক মেয়রের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় দুদক বলেছে, তিনি বৈধভাবে ৫৭ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০ টাকা আয় করেছেন। পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯৫ টাকা। ব্যয় বাদ দিলে তাঁর কাছে ৩৩ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৯৮ টাকার সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে আবুল কালাম আজাদ ও তাঁর স্ত্রী আকলিমা বেগম রুবির ভোগদখলে ৬০ কোটি ৫৩ লাখ ৭১ হাজার ৪০৩ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এটি বৈধ আয়ের তুলনায় ২৬ কোটি ৯১ লাখ ৭২ হাজার ৬০৫ টাকা বেশি। এ অতিরিক্ত সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
দুদক আরও জানিয়েছে, গৃহিণী আকলিমা বেগমের ভোগদখলে ১ কোটি ৯০ লাখ ১৮ হাজার ২৩৭ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে, যার বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। স্বামীর অবৈধ সম্পদ দখলে রাখার অভিযোগে তাঁকেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দুটি মামলার বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আয়ের বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়ে মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।