আহসান মঞ্জিলে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের মন খারাপ
Published: 1st, April 2025 GMT
স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে অনেকেই রাজধানী ছেড়েছেন। ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। বিভিন্ন কারণে যারা ঢাকা ছাড়তে পারেননি, তাদের অনেকেই পরিবার নিয়ে বের হয়েছেন ঘুরতে। পরিবারের সদস্যদের আনন্দ দিতে ছুটছেন বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কুমারটুলী এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক স্থাপনা আহসান মঞ্জিল। প্রতি বছর ঈদসহ বিভিন্ন ছুটির দিনে ঢাকার নবাবদের এ আবাসিক এলাকা দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। তবে, এবার আহসান মঞ্জিলে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের মন খারাপ। সরকারি ছুটিতে জাদুঘর বন্ধ থাকায় দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারছেন না।
মঙ্গলবার সকাল থেকে অনেকেই ভিড় করেন এখানে। কিন্তু, জাদুঘরের গেটে ঝোলানো নোটিশ দেখে মন খারাপ করে ফিরে গেছেন। অনেকে গেছেন অন্য বিনোদনকেন্দ্রে।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে আহসান মঞ্জিলের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, রিকশা ও অটোরিকশায় চেপে অথবা পরিবারের সদস্যদের হাত ধরে অনেকে সেখানে এসেছেন। ধীরে ধীরে সেখানে ভিড় জমে যায়। তবে, গেটে ঝোলানো নোটিশ দেখে তাদের মন খারাপ হয়ে যায়।
মালিবাগ থেকে আসা আবুল খায়ের বলেন, “পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছিলাম। এসে দেখি, জাদুঘর বন্ধ। মন খারাপ হয়ে গেল। এখন বাচ্চাদের নিয়ে অন্য কোথাও ঘুরতে যাব।”
এ সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলে বলে, “আসার আগে গুগলে দেখে আসছি। সরকারি ছুটির দিনে যে বন্ধ থাকবে, এটা লেখা নেই। আগে জানলে তো আর কষ্ট করে আসতাম না।”
মীর হাজীরবাগ থেকে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, “বাসা কাছাকাছি। ভাবলাম, ঘুরে আসি। এসে তো দেখি বন্ধ। এখন শাহবাগ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাব।”
এ সময় কথা বলার জন্য জাদুঘরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি।
গেটের সামনে ঝোলানো একটা নোটিশ দেখা যায়। সেখানে লেখা, ‘পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের দিন আহসান মঞ্জিল যাদুঘরের গ্যালারি দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ঈদ উপলক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বিনামূল্যে এবং সাধারণ দর্শনার্থীরা যথারীতি টিকিটের বিনিময়ে গ্যালারি পরিদর্শন করতে পারবেন। সরকারি ছুটি থাকায় ১, ২ ও ৩ এপ্রিল যাদুঘর বন্ধ থাকবে। ৪ এপ্রিল থেকে যথানিয়মে যাদুঘর খোলা থাকবে।’
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন খ র প জ দ ঘর পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ
কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।
স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।
জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।