বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, জনগনের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান দীর্ঘ ১৫ বছর দেশে আসতে পারেন না, আমাদের নেত্রী ৬ বছর জেল খেটেছেন।

কিন্তু এখনো আমাদের দাবি পূর্ণ হয়নি। যতোদিন দাবি পূর্ণ না হবে ততোদিন আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকালে ফতুল্লার ঐতিহাসিক ডিআইটি মাঠে ফতুল্লা থানা বিএনপির জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, এই সরকার যেদিন শপথ নিয়েছে সেদিন বলেছিল গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে তারা সড়ে যাবে। বিএনপিও তাদের যৌক্তিক একটি সময় পর্যন্ত অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাবে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করলে ছাড় দেয়া হবে না। 

অধ্যাপক মামুন মাহমুদ সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, অনেকেই বলেন বিএনপি সংস্কার চায় না। আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৩ সালেই ৩১ দফা দিয়েছেন। যেখানে সংস্কারের সব কথা বলা হয়েছে। 

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান করেছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, আর খালেদা জিয়া ক্ষমতা গ্রহন করে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জনগনের জন্য কাজ করে। আগামিতে বিএনপি ক্ষমতা আসলে আবারো জনগনের উন্নয়ণে কাজ করবে।

বিএনপি মানুষের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে। আমাদের নেত্রী ৬ বছর জেল খাটলেও স্বৈরাচারী হাসিনার সাথে আপোষ করেননি, ৯ বছর আন্দোলন করলেও এরশাদের সাথে আপোষ করেনি। বিএনপি মানুষের উন্নয়নের চিন্তা করে।

বাংলাদেশের মানুষ আবারও বিএনপিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। তারেক রহমানের নেতৃত্বে এসকল নেতাকর্মীরা বিগত ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আমরা রাজপথ ছেড়ে যাইনি। বিএনপি মানুষের ভোটাধিকারের জন্য সবসময় সংগ্রাম করেছে। বেগম খালেদা জিয়া ৬ বছর জেল খেটেছে, শেখ হাসিনার সাথে আপোষ করেনি। বিএনপি প্রতারণা করে না, মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে।

আজ আমরা যে উচ্ছ্বাস দেখেছি, সেটা একটা নির্বাচনী আমেজের মতো। এই যে নির্বাচনী আমেজ আপনাদের মধ্যে দেখতে পেলাম। কিন্তু একটি কথা বলি- বিগত ১৫ বছরে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে। ফতুল্লার শাওন পুলিশের নির্মম গুলিতে নিহত হয়েছে। নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারেনি। বাবার লাশ কবর দিতে পারেনি। 

সেইসব নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ছিল ফ্যাসিবাদ সরকার হটিয়ে একটি অবাধ অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন। আমদোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ কে বিদায় করা হয়েছে। 

মামুন মাহমুদ বলেন, অবৈধ হাসিনা সরকার বিগত সময়ে জনগনের জন্য কাজ করেননি। এই আসনের সাবেক সাংসদ ফতুল্লার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন আর বড় বড় কথা বলেছিলেন। আর বিদেশে টাকা পাচার করেছিলেন। এইগুলো শেখ হাসিনার নির্দেশেই করা হয়েছিল। দেশের মানুষের পকেটের টাকা তারা বিদেশে পাচার করে মানুষকে দরিদ্র থেকে আরো দরিদ্র করেছে। দেশলে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত করেছিল। 

আমরা বিশ্বাস করি আগামিতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। যে বির্বাচনে ভালো মানুষ এমপি নির্বাচিত হবে। আমরা চাইনা আবারো কোন গড ফাদার জন্ম হোক। আগামিতে কেমন এমপি চান, সেটা আপনাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আপনারা যাকে চান নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে তাদেরকে দল মনোনয়ন দেবে। আমরা সন্ত্রাসের কলঙ্ক ঘুচিয়ে একটি সুন্দর নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই। আমরা বিদেশে গাড়ি বাড়ি করে আপনাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাই না। আপনাদের পাশে থাকতে চাই। 

সমাবেশে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে ও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। 

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, জেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ার সাদাত সায়েম, ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ভূইয়া  জেলা ছাত্রলের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান ভূঁইয়া প্রমূখ।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আম দ র ন ত ব এনপ র স ন ত কর ম ল ইসল ম আপন দ র জনগন র ক জ কর কর ছ ল র জন য ক ষমত রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিকেএমইএ সভাপতি হাতেম ‘গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু’ : এনসিপি নেতা আল আমিন

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ও উত্তরণের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীক সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমকে গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু আখ্যা দিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আব্দুল্লাহ আল আমিন। এ সময় তিনি হাতেমকে এ আয়োজনে স্পেস দেয়া উচিৎ হয়নি বলেও মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে এক বিশেষ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।

সভায় আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, ‘আজ আসার পর দেখলাম একজন স্টেজে এসে ছাত্ররা কীভাবে পড়ালেখা করবে, রেজাল্ট ভালো করবে, ওই পরামর্শ দিচ্ছেন; যে ব্যক্তি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে কীভাবে ছাত্রদের আন্দোলন দমন করতে হবে, সেই অনুরোধ করেছিলেন।’

আব্দুল্লাহ আল আমিন আরও বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালীন শেখ হাসিনার সামনে দাঁড়িয়ে সে ছাত্রদের দমনের ব্যাপারে বলেছে। তাকে আমরা এই স্পেস দিতে পারি না। খুবই দুঃখ লেগেছে, নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমরা এগুলো জানি। জানার পরও কেন আমরা এটা করি? আমরা কি সব ভুলে গেলাম। এই ভুলে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।

এর আগে এই এনপিসি নেতা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নানান ধরনের জটিলতা হয়েছে মানে ম্যানেজিং কমিটি এড কমিটি কোথাও কমিটি নাই কোথাও অধ্যক্ষ বা শিক্ষক আছে নাই বা নানান ধরনের ইস্যু সৃষ্টি হয়েছে। 

এইজন্য এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ছিল যেই ধরনের চেইন অফ কমান্ডে স্কুল কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চলে ওভাবে চলতে পারেনি। ছাত্রদের মধ্যেও গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক একটা ট্রমা আছে। আমরা যখন শহীদ পরিবার বা আহতদের সাথে কাজ করি, আন্দোলনকারীদের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা আছে। 

তাদের যে আবার পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে। সে মানসিকতা সবার হয়ে ওঠে নাই। আমরা যেই প্রফেশনে ছিলাম অভুত্থানের পরে আবার যে আমাদের কাজটা আমরা করব এই মানসিকতাটা হয় নাই। তো আমাদের পুরা ন্যাশনাল একটা গ্রুমিং এর প্রয়োজন। 

তিনি বলেন, “গ্রীক পৌরাণিক কাহিনীতে আমরা দেখছিলাম যে, একিলিস হিল বলতে একটা ব্যাপার আছে। একিলিসের মতো এত বছরে হাসিনা প্রশ্নফাস, জালিয়াতি অটোপাসের মতো নানা ধরনের বড় বড় লুপস তারা রেখে দিছে। কিন্তু তারা উপস্থাপন করছে একটা বিশাল সাফল্য। এই দুর্বলতাটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি এটা সামনে আমাদের জেনারেশন, ছাত্র, দেশের জন্য ভালো হবে।”

নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ, বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবির, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শোয়াইব আহমাদ খান, নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আ.ফ.ম. মশিউর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম সুজন, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদ, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মাইনুদ্দীন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুদ বিল্লাহ প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিকেএমইএ সভাপতি হাতেম ‘গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু’ : এনসিপি নেতা আল আমিন
  • বাবুল’র উদ্যোগে ৩০০ শয্যা হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চলমান
  • আড়াইহাজারবাসী ও বিএনপির নেতাকর্মীদের আজাদের বিশেষ বার্তা
  • যে কারণে নারায়ণগঞ্জ-৪ খালি রাখলো বিএনপি
  • বিএনপি কৃষকদের ফারমার্স কার্ড দিবে : সাখাওয়াত
  • তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে বন্দরে মহানগর বিএনপির কৃষক সভা
  • ১১২ টাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনে চাকরি পেলেন ১৪ জন
  • সোনারগাঁয়ের কাইকারটেক হাটে নির্বাচনী প্রচারণায় মামুন মাহমুদ 
  • রূপগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
  • তারুণ্যের চোখে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার