Prothomalo:
2025-05-01@05:46:46 GMT

কালোগলা দামা

Published: 23rd, April 2025 GMT

সুন্দরবন থেকে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে ফিরেছি মাত্র তিন দিন আগে। এতই ব্যথা যে সপ্তাহখানেক বিশ্রাম প্রয়োজন। কিন্তু ঢাকার অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পলাশপুরের এক পরিত্যক্ত আবাসন প্রকল্পে বিরল একটি পাখির আগমনের কথা শুনে ব্যথা ভুলে চলে গেলাম ধলেশ্বরীর পাড়ে।

প্রায় এক যুগ আগে পরিত্যক্ত হওয়া আবাসন প্রকল্পটির ভরাট করা বেলে মাটিতে তরতর করে বেড়ে উঠেছে নানা প্রজাতির কাষ্ঠল, ফলদ ও বুনো গাছপালা, ঝোপঝাড় এবং লতাগুল্ম। যেন চমৎকার এক গ্রামীণ বন! এক পাশে বিশাল আকারের মেঘশিরীষগাছের সারি। তার খানিকটা সামনে একটি ডকইয়ার্ড। পরিত্যক্ত এই আবাসন প্রকল্প বর্তমানে বহু প্রজাতির পাখি-প্রাণীর আশ্রয়স্থল। দিনের বেলায়ও এখানে শিয়ালের আনাগোনা।

পুরো এলাকায় ছোট-বড় ৮–১০টি শিমুলগাছ। বেশির ভাগ গাছেই টকটকে লাল ফুল। ফুলের রস পানের জন্য প্রচুর পাখির আগমন ঘটেছে। কাঠশালিক, হলদে পাখি, হাঁড়িচাঁচা, দাঁড়কাক, বুলবুলি, ছাতারে, বসন্তবাউরি, কাঠঠোকরা, শ্বেতাক্ষী আরও কত-কী? কিন্তু বহুক্ষণ শিমুলগাছের তলায় দাঁড়িয়ে থেকেও বিরল পাখিটির সন্ধান মিলল না। অসুস্থ শরীরে এত কষ্ট করে খোঁড়াতে খোঁড়াতে এসে খালি হাতে ফেরত যেতে চাইছি না। তাই গাছের নিচে দাঁড়িয়ে একদৃষ্টে শিমুল ফুলের দিকে তাকিয়ে রইলাম। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর হঠাৎই পাখিটি এল। কিন্তু অতিচঞ্চল পাখিটির অস্থিরতার কারণে ভালো ছবি তোলা গেল না। মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময় দিয়ে পাখিটি চলে গেল। মনটাই খারাপ হয়ে গেল।

ক্যামেরা হাতে ধীরপায়ে ধলেশ্বরীর পাড়ে ছোট একটি শিমুলগাছের কাছে গেলাম। শিমুল ফুলে কাঠশালিকের ছবি তুললাম। বেলা প্রায় তিনটার সময় নদীর দিক থেকে তিরবেগে উড়ে এসে পাখিটি শিমুল ফুলে বসল। আর যায় কোথায়? ক্যামেরায় ক্লিকের বন্যা বয়ে গেল। তবে বেশিক্ষণ এখানে থাকল না। আগের সেই বড় গাছের দিকে উড়ে গেল। নদীর পাড় থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে কোনোরকমে ওখানে পৌঁছালাম। শেষ পর্যন্ত শিমুল ফুলে ওর ভালো ছবি তোলা গেল। ঘটনাটি ২০২৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির।

বিরল পাখিটি এ দেশের শীতের পরিযায়ী কালোগলা দামা। ইংরেজি নাম ব্ল্যাক-থ্রটেড থ্রাস। গোত্র তুরডিডি। বৈজ্ঞানিক নাম Turdus atrogularis। পূর্ব ইউরোপ থেকে পশ্চিম সাইবেরিয়া হয়ে উত্তর-পশ্চিম মঙ্গোলিয়া পর্যন্ত পাখি বিস্তৃত। শীতে দক্ষিণ, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পরিযায়ী হয়। একসময় লালগলা দামার একটি উপপ্রজাতি হিসেবে কালো গলা দামা গণ্য হতো। সম্প্রতি আলাদা প্রজাতি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

অতিচঞ্চল কালোগলা দামা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ