ঢাকার দর্শকদের জন্য নতুন নাটক মঞ্চে আনছে নাট্যদল ‘তাড়ুয়া’। ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ শিরোনামে নাটকটির তিন দিনে প্রদর্শনী হবে চারটি। আজ জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে। এরপর একই মিলনায়তনে আগামীকাল সন্ধ্যা ৭টা এবং শুক্রবার বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৭টায় নাটকটির আরও দুটি প্রদর্শনীর আয়োজন রাখা হয়েছে। 

এটি ‘তাড়ুয়ার’ চতুর্থ প্রযোজনা। ২০১৮ সালে ‘লেট মি আউট’ নাটক দিয়ে ঢাকার মঞ্চে যাত্রা শুরু করেছিল নাট্যদলটি। এরিখ মারিয়া রেমার্কের উপন্যাস অবলম্বনে ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ নাট্যরূপ দিয়েছেন রুনা কাঞ্চন। নির্দেশনা দিয়েছেন বাকার বকুল। নির্দেশক বকুল বলেন, ‘যুদ্ধবিমুখ-শান্তিকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আবশ্যকতায় এই নাটক বহুল চর্চিত হওয়া প্রয়োজন। পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া দুটি বিশ্বযুদ্ধের নির্মম ক্ষতচিহ্ন থাকার পরও পৃথিবীকে যুদ্ধাহত করা হচ্ছে বারবার। ভয়াবহ পারমাণবিক মারণাস্ত্রের চর্চা এবং যুদ্ধমুখী বিশ্বরাজনীতির গতিপথ এখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে, যা পৃথিবীকে নিশ্চিহ্নের অশনিসংকেত। এমন বাস্তবতায় ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ মরণঘাতী যুদ্ধের নৃশংসতাকে উন্মুক্ত করার এক নাট্যপ্রয়াস।’

 নাটকের গল্পে দেখা যাবে, দেশের জন্য শিক্ষার্থীদের জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেন শিক্ষক কান্টারেক। জন্মভূমির জন্য জীবন দেওয়ার চেয়ে মহত্তম কিছু নেই– এই চেতনায় উজ্জীবিত হয় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পল বাউমার ভালোবাসে প্রজাপতি, হতে চায় লেখক। কেমোরিখ হতে চায় ফরেস্ট অফিসার। বেন, মুলার ও আলবার্টেরও রয়েছে নিজেকে নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভবিষ্যৎ স্বপ্ন। প্রতিকূল এই যুদ্ধপরিস্থিতিতে সব স্বপ্ন বিসর্জন দেওয়া পাঁচ বন্ধুর শরীরে ও চিন্তায় ঘোরে যুদ্ধের রোমান্টিসিজম। প্রশিক্ষণ শেষে কণ্ঠে দেশাত্মবোধক গান নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হয় সবাই। কল্পনায় ভাবা যুদ্ধ বাস্তবে মেলে না। নৃশংস আর হিংস্রতায় ব্যক্তি এখানে মৃত্যুর জন্য তৈরি হওয়া শুধুই এক টুকরো মাংসপিণ্ড। একসময় সৈনিকদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে, যুদ্ধটা আসলে কেন বাঁধে, কারা বাঁধিয়ে রাখে। প্রতিপক্ষ দেশের কেউ তো তাদের ক্ষতি করেনি, তাহলে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়া এই যুদ্ধ আসলে কাদের স্বার্থে।’

নির্দেশক বাকার বকুল আরও বলেন, ‘যুদ্ধটা আসলে কাদের স্বার্থে? তারা কি সংখ্যাগরিষ্ঠ? নাকি আত্মাহুতি দেওয়া ক্ষতিগ্রস্ত এবং শান্তিকামী মানুষ সংখ্যায় বেশি? একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে জাতিবাদ-মতবাদ এবং পরিচয়বাদের নামে চতুর্দিকে যে যুদ্ধের ডামাডোল তা আমাদের শুধু পশ্চাৎপদই করে না, আত্মহননের প্রক্রিয়াকে সুদৃঢ় করে। মানবজাতির দায় রয়েছে সংখ্যালঘু যুদ্ধবাজদের কবল থেকে পৃথিবীকে মুক্ত করার। ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ নাটকটি নির্দেশনা দেবার চেষ্টা সেই দায় মোচনেরই ক্ষুদ্র প্রতিফলন। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন কুমার উদয়, তামিম আহমেদ, রিপন ঘোষ, জুবায়ের মাহমুদ, জীবন, অর্ণব, তারেক, সানি, সাক্ষ্য, কাইয়ুম, অভিজিৎ, ফরহাদ, অর্পিতা, মুন্নিসহ আরও অনেকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন টকট র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ