চার উইকেট হারাল জিম্বাবুয়ে, সিলেটে আবার বৃষ্টি
Published: 23rd, April 2025 GMT
বৃষ্টি বিঘ্নিত সিলেট টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংস থেকে জিম্বাবুয়ের পাওয়া ৮২ রানের লিড শোধ করে জয়ের জন্য সফরকারীদের ১৭৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছে। ওই লক্ষ্য তাড়ায় ওপেনিং জুটিতে ৯৫ রান করা জিম্বাবুয়ে একশ’ রানের পর ৪ উইকেট হারিয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে বৃষ্টি।
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের লক্ষ্যে ৩৪.
প্রথম বলেই আউট শান্ত, ব্যর্থ মিরাজ: বাংলাদেশ দল সিলেট টেস্টে অধিনায়ক শান্তর ব্যাটে আশা দেখছিল। তিনি ৬০ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তৃতীয় দিন নির্ভার ব্যাটিং করতে দেখা গেছে তাকে। কিন্তু চতুর্থ দিন বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে ক্রিজে ফিরে প্রথম বলেই আউট হয়ে যান এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।
তার মতো হতাশ করেন মেহেদী মিরাজও। তিনি ক্রিজে এসে ব্যাট তুলে খেলতে শুরু করেন। ১১ রান করে ফিরে যাওয়ার আগে ছক্কাও হাঁকান। এরপর টেলেন্ডে বাংলাদেশ দলকে বিপদে ভরসা দেওয়া তাইজুল ইসলাম ব্যর্থ হয়ে ফিরলে চাপটা প্রবল হয় বাংলাদেশ দলের ওপর।
জাকেরের লড়াই: সকালে দ্রুত উইকেট হারানোর পর এক প্রান্ত দিয়ে লড়াই চালিয়ে যান জাকের আলী। তিনি শেষ ব্যাটার হিসেবে ১১১ বল খেলে ৫৮ রান করে আউট হন। চারটি চার ও একটি ছক্কা মারেন। জাকেরকে সঙ্গ দিতে পারেননি টেলেন্ডে খালেদ আহমেদ। তবে হাসান মাহমুদ৫৮ বল খেলে ১২ রান করেন। তাদের জুটি থেকে আসে ৩৫ রান।
প্রথম ইনিংসে বিপর্যয়: সিলেট টেস্টে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় শান্ত, মুমিনুল, মুশফিকরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে মুমিনুল ৫৬ ও শান্ত ৪০ রানের ইনিংস খেলেন। জাকের আলী ২৮ রান যোগ করেন। জিম্বাবুয়ের ব্লেজিং মুজুরাবানি ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩টি করে উইকেট নেন। মেধেভেরে ও নায়োচি নেন দুটি করে উইকেট।
জিম্বাবুয়ের লিড: প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে দারুণ ব্যাটিং শুরু করে। তবে নাহিদ রানা ও মেহেদী মিরাজের বলে তাদের নাগালে রাখা সম্ভব হয়েছিল। জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২৭৩ রান তোলে। ৮২ রানের লিড নেয়। দলটির হয়ে ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ৫৬ ও শন উইলিয়ামসন ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন। মিরাজ ৫টি ও নাহিদ নেন ৩ উইকেট।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কমিটি নেই, সবাই নেতা
কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর।
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু।
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ।
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।