বিএনপি-জামায়াত দল হিসেবে নয়, জনগণ হিসেবে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি বা জামায়াত এসে বলছে, আমরা কী অংশগ্রহণ করি নাই? হ্যাঁ, আপনারা অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু দল আকারে করেন নাই। জনগণ আকারে করেছেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী জনগণ নেতৃত্ব দিয়ে নির্দলীয়ভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। জনগণের শক্তি কায়েম করেছে।’

আজ শুক্রবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ফরহাদ মজহার এসব কথা বলেন।

সংবিধান সংস্কার ইস্যুতে বিএনপির অবস্থানের সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আগে গঠনতন্ত্র তারপর সরকার নির্বাচন। সবার আগে গণপরিষদ নির্বাচন। কিন্তু একটা শ্রেণি সবকিছু বাদ দিয়ে শুধু নির্বাচন চাচ্ছে। কারণ তারা মনে করে ১৫ বছর এক দল শাসন ও লুটপাট করেছে, আমরাও ১৫ বছর লুটপাট করব। এ ছাড়া আর কোনো যুক্তি নেই। এত মানুষ মারা গেল, কারও কোন কি দায় নেই! নির্বাচন অবশ্যই চাই। নির্বাচন কিসের ভিত্তিতে হবে? ফ্যাসিষ্ট সরকারের সংবিধানের মাধ্যমে?’

আরও পড়ুনবিএনপি কি জিয়াউর রহমানের অনুসারী নাকি বিরোধী, প্রশ্ন ফরহাদ মজহারের০১ মে ২০২৫

সরকার নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘যারা আইন বোঝে, রাজনীতি বোঝে, কিন্তু দল বোঝে না, যারা যোগ্য ব্যক্তি, ওদেরকে গণপরিষদে পাঠিয়ে খসড়া গঠনতন্ত্রের বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ একটি খসড়া গঠনতন্ত্র পাস করাতে হবে। তারপর গণভোট হবে। জনগণ তাতে সম্মতি দিলে নতুন গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত হবে। সেই নতুন গঠনতন্ত্রের অধীনে নতুন সরকার গঠনের নির্বাচন হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য নির্বাচন দাবি করা হচ্ছে। নির্বাচনের জন্য ক্রমাগতভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ফলে এই সরকারের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব নয়।’

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে ফরহাদ মজহার বলেন, আওয়ামী লীগ দল আকারে ফ্যাসিস্ট হতে পারে, আইন দিয়ে নিষিদ্ধ করতে পারেন, আওয়ামী লীগ করলেই কি খারাপ হয়ে গেল? তারাও তো দেশের জনগণ। তাদের বাদ দিয়ে তো রাষ্ট্র গঠন করতে পারবেন না। তাদের কোথায় ভুল হয়েছে, কথা বলার জায়গা তো লাগবে। পরস্পরের ভুল–বোঝাবুঝির নিরসন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের প্রতি দায় স্বীকার করে, ভুলের আত্ম উপলন্ধি করে, সবাইকে নিয়ে নতুন সমাজ গঠন করতে হবে। যাতে বাইরের কেউ এসে আমাদের ব্যবহার করতে না পারে।’

ফরহাদ মজহার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠনের সমালোচনা করে বলেন, ‘জনগণের অভিপ্রায় কী হবে, সেটা সাঈদ বা মুগ্ধ বলে যাননি। তাঁদের অভিপ্রায় কী ছিল, সেটা বুঝতে হলে আগে ড.

ইউনুসের নেতৃত্বে যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁদের উচিত ছিল আমার জায়গায় এখানে বসে মতবিনিময় করা। জনগণ কী ধরনের আইন চায়, কী ধরনের রাষ্ট্র চায়, কী ধরনের অধিকার চায়, সেটা প্রশ্ন রাখা উচিত ছিল। তারা কী কখনো জনগণের কাছে এসে বলেছে জনগণ কী চায়? কোনো কৃষকের কাছে এসে বলেছে, এত বড় গণ–অভ্যুত্থঅন হয়ে গেল, কী ধরনের কৃষক নীতি দরকার? পানি নিয়ে, নদী সম্পর্কে, প্রাণ-পরিবেশ-গাছপালা সম্পর্কে জনগণের কী আকাঙ্ক্ষা, কী ইচ্ছা? জনগণ বিচার পাচ্ছে না। সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থা গড়ে তুলতে কী করা দরকার?’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিরোধিতা করে রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষের একজন মানুষ হিসেবে বলব যে এই ধরনের করিডর দেওয়া উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে আমাদের ব্যবহার করতে চাইছে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইছে, আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াবে, আমি চাই না বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এ ধরনের প্রক্সি ওয়ারে জড়িয়ে যাক।’

সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অন্যদের মধ্যে লেখক মাহবুব সিদ্দিকী বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনযে পন্থীই হোন না কেন, একাত্তর আমার ইতিহাসের অংশ: ফরহাদ মজহার০১ মে ২০২৫আরও পড়ুনড. ইউনূস গণ–অভ্যুত্থানের ফসল, নেতা নন: ফরহাদ মজহার২৮ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র ব গঠনতন ত র জনগণ র সরক র ধরন র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাও. জব্বারের ব্যাপক গণসংযোগ

নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবদুল জব্বার বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফতুল্লা বক্তাবলী, কানাই নগর, রামনগর  প্রসন্ন নগর,খাজা মার্কেট, ছমির মার্কেট এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলেও তিনি তার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করেননি।

দুপুর ২টা থেকে থেকে তিনি ফতুল্লার কানাই নগর, রাধানগর, রাম নগর, প্রসন্ন নগর এবং এর আশপাশের এলাকায় হেঁটে হেঁটে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যান এবং ভোট প্রার্থনা করেন। 

এসময় মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, "জনগণের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং তাদের সমর্থন আমাকে এই প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও থামতে দেয়নি। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের সেবা করাই আমার প্রধান কর্তব্য। বৃষ্টির মতো সামান্য বাধা আমাকে এই দায়িত্ব থেকে দূরে সরাতে পারে না।"

তিনি আরও বলেন, "মানুষের দুঃখ-কষ্টের সঙ্গী হতে পারলে তবেই একজন নেতা সত্যিকারের নেতা হতে পারেন। আমি সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।"

তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই তার এই অদম্য স্পৃহার প্রশংসা করেছেন এবং তাকে সমর্থন জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গণসংযোগে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জামায়াত ইসলামীর কর্ম পারিষদ সদস্য হাফেজ আবদুল মোমিন,ফতুল্লা পশ্চিম থানা আমির মাওলানা নুরুল হক, আদর্শ শিক্ষিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারী আব্দুল করিম খান, ফতুল্লা পশ্চিম থানা তরবিয়ত সেক্রেটারি মাওলানা আবু হানিফ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও পশ্চিম থানা সভাপতি নুরুল আমিন, বক্তাবলী ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর আবু বকর সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে ও ইউনিয়ন তরবিয়ত সেক্রেটারি আবু সাঈদ সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, আলেম-ওলামা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ব্যপক উপস্থিত ছিলেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুদ্ধাপরাধী শক্তিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা জুলাই অভ্যুত্থানের সাংঘর্ষিক : কমরেড রতন
  • ফতুল্লায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাও. জব্বারের ব্যাপক গণসংযোগ
  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ