শ্রমিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলে সময় বেঁধে দিল এনসিপি
Published: 3rd, May 2025 GMT
বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আসন্ন নির্বাচনে ছাত্র–জনতা হত্যা মামলার পলাতক শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের পাঁচ নেতার প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) শ্রমিক উইং। গতকাল শুক্রবার বিকেলে এনসিপির নেতারা মিছিল নিয়ে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন এবং মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান। মনোনয়ন বাতিলে আজ শনিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন তাঁরা।
এর আগে গতকাল এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ আল সানী বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আপত্তি জানান।
আপত্তিপত্রে বলা হয়, গঠনতন্ত্রের অজুহাত তুলে কোনো ফ্যাসিস্টকে পুনর্বাসনের চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে পালাতে যেমন কোনো সংবিধানের দরকার হয়নি, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের প্রতিহত করতেও কোনো গঠনতন্ত্রের দরকার হবে না। মনোনয়ন বাতিল করা না হলে এনসিপির পক্ষ থেকে ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করা হবে।
আবদুল্লাহ আল সানী বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট গণ–আন্দোলনে ছাত্র–জনতা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার পলাতক শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের পাঁচ আসামি এই পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, এটি ছাত্র–জনতার আত্মত্যাগের প্রতি চরম অবমাননা। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসরদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে গণ অধিকার পরিষদ ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেও গতকাল পর্যন্ত মনোনয়ন বাতিল করা হয়নি। এনসিপির পক্ষ থেকে আমরা এর নিন্দা জানাই।’
যে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল চাওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও বগুড়া জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ হেলাল, সহসভাপতি পদপ্রার্থী ও বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ইব্রাহীম শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী ও জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি আবদুল গফুর প্রামাণিক, প্রচার সম্পাদক পদপ্রার্থী ও বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন এবং কার্যকরী সভাপতি পদপ্রার্থী ও শ্রমিক লীগের নেতা আনোয়ার হোসেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও বগুড়া আদালতের কৌঁসুলি আবদুল বাছেদ বলেন, পলাতক আসামি হওয়া মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য যথেষ্ট নয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে অভিযোগ এসেছে যে পাঁচ প্রার্থীর স্বাক্ষর জাল করে মনোনয়ন দাখিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে যাচাই–বাছাই করা হবে এবং প্রার্থীদের আজ সশরীর উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। তাঁরা উপস্থিত না হলে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হতে পারে।
২৩ মে বগুড়া জিলা স্কুলে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ১৩তম ত্রিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩০টি পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৪৭২।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব চ ছ স বক ল গ র নয়ন ব ত ল পদপ র র থ এনস প র আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের সভাপতি প্রার্থী জাকির হোসেন
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ২০২৫-২৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ। তাদের প্যানেল লিডার বা সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন জাকির হোসেন। তিনি বাংলাদেশ সিএনজি যন্ত্রপাতি আমদানিকারক সমিতির সভাপতি।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের উপদেষ্টা গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী এই ঘোষণা দেন। তিনি জানান, শিগগিরই পুরো প্যানেলের নাম ঘোষণা করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক গিয়াস উদ্দীন খোকন, বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের সদস্যসচিব মো. জাকির হোসেন, সদস্য বেলায়েত হোসেন, আনিসুর রহমান প্রমুখ।
আগামী নির্বাচনে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের সভাপতি প্রার্থী জাকির হোসেন বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় একটি বিশেষ স্থান থেকে ওহি নাজিলের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হতেন। এ সময় সাধারণ ভোটারের তেমন মূল্য ছিল না। বিরোধী মতের কেউ নির্বাচন করতে চাইলে তাঁকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। ফেডারেশনে ঢুকতে দেওয়া হতো না। এখন সংস্কার হওয়াতে এই চর্চা থাকবে না।
জাকির হোসেন আরও বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিলেন। তাঁদের দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ এসেছে। তা ছাড়া ব্যবসায়ীদের ভেতর নারী উদ্যোক্তা কম। মোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ। তাঁদের সংখ্যা না বাড়ালে ব্যবসা টেকসই হবে না।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের দাবিতে তৎপর হন সদস্যদের একাংশ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি পদ থেকে মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেন। পরে ১১ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআইয়ের পর্ষদ বাতিল করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ড গত বুধবার ২০২৫-২৭ মেয়াদে ফেডারেশনের পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের তফসিল প্রকাশ করেছে। তফসিল অনুযায়ী, ৪৬ জনের পর্ষদের মধ্যে সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সহসভাপতির বাইরে ৪২ জন পরিচালক থাকবেন। তাঁদের মধ্যে পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বা অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার গ্রুপ থেকে ১৫ জন করে ৩০ জন সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। বাকি ১২ জন মনোনীত পরিচালকের মধ্যে অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার থেকে ৫ জন করে ১০ জন এবং নারী চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে ১ জন করে ২ জন আসবেন।
নতুন বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা অনুযায়ী এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে সভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালক পদে এবার সরাসরি ভোট হবে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের সাধারণ পরিষদের সদস্যরা ভোট দিয়ে সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, ২ জন সহসভাপতি এবং ৩০ জন পরিচালক নির্বাচিত করবেন।