গৃহপরিচারিকার কাজ করছেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ জাকিরের স্ত্রী
Published: 5th, May 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে শহীদ জাকির হোসেনের স্ত্রী সালমা বেগম জীবনের তাগিদে গৃহপরিচারিকার কাজ করছেন। সামান্য আয়ে কোনোমতে চলছে মা-মেয়ের সংসার। জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার জন্য সালমা বেগমের স্থায়ী কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জাকির হোসেনের বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে। বাবা মৃত মান্নান খান। তিনি ঢাকায় পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠানে সেলাই মেশিন অপারেটরের কাজ করতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই রায়েরবাগে বোনের বাসায় দুপুরের খাবার শেষে কর্মস্থল কামরাঙ্গীর চরে ফেরার পথে শনির আখরায় গুলিবিদ্ধ হন। ৫ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৪ জুলাই মারা যান। পরে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি বড় গোপালদীতে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন জাকিরের স্ত্রী সালমা ও তার অষ্টম শ্রেণীপড়ুয়া কন্যা জিদনী।
জাকিরের মৃত্যুর পর জুলাই ফাউন্ডেশন এবং জামায়াত ও বিএনপি থেকে তাদের অর্থ সহায়তা করা হয়েছে। কিন্তু ধার দেনা মেটাতেই সিংহভাগ খরচ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পরিবার।
এরপর থেকেই সংসারের খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সালমা বেগম। বিশেষ করে একমাত্র মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি শঙ্কিত। অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বাধ্য হয়ে তিনি গৃহপরিচারিকার কাজ বেছে নিয়েছেন। স্থানীয় একটি মহিলা মাদ্রাসায় ২ হাজার টাকা বেতনে কাজ করছেন তিনি।
সালমা বেগম বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘‘স্বামী মারা যাওয়ার পর আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। কিছু টাকা পেয়েছিলাম। ধার দেনা শোধ করার পর অনেকটাই খরচ হয়ে গেছে। মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মাদ্রাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ নিয়েছি। তিন বেলা রান্না করে দেওয়ার বিনিময়ে যা পাই এ দিয়ে সংসার চলে না। সরকার যদি আমাকে একটি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে মেয়েকে নিয়ে অন্তত খেয়েপরে বেঁচে থাকতে পারতাম।’’
পৈত্রিক ভিটা ছাড়া অর্থসম্পদ রেখে যাননি জাকির হোসেন। তার আরো দুই ভাই রয়েছে। ফলে বসতঘর ভাগ হলে যে জায়গাটুকু থাকবে তাতে শুধু মাথাগোজার ঠাঁই হবে বলে জানান সালমা বেগম।
‘‘আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই,’’ উল্লেখ করে জিদনী (১৪) বলেন, ‘‘আমি দমশিনা সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি। মা ২ হাজার টাকা বেতনে কাজ করে সংসার আর আমার পড়াশোরার খরচ চালাচ্ছে। আরেকটু বড় হলে কীভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যাবো জানি না। অথচ আজ বাবা বেঁচে থাকলে আমাকে এ নিয়ে ভাবতে হতো না।’’
বড় গোপালদী গ্রামের ষাটোর্ধ্ব হাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘জাকির ভালো ছেলে ছিল। পৈত্রিক ভিটা ছাড়া সে কিছুই রেখে যেতে পারেনি। এখন পরিবারটি একেবারে অসহায়। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে সরকারের উচিত তার স্ত্রীকে একটি স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া।’’
একই এলাকার ইসরাত হোসেন বলেন, ‘‘মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হলেও জাকিরের স্ত্রীকে একটি স্থায়ী কাজ দেয়ার অনুরোধ করছি।’’
দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতিজা হাসান বলেন, ‘‘জাকিরের স্ত্রীর স্থায়ী কর্মসংস্থানের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ ছাড়া সরকারী যে কোনো অনুদান আসলে শহীদ পরিবার হিসেবে তারাই অগ্রাধিকার পাবেন।’’
ইমরান//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ হপর চ র ক র ক জ পর ব র ক জ কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাতে ঢাকা আসছেন শোয়েব আখতার
পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার শোয়েব আখতার শনিবার দিবাগত রাতে ঢাকা আসছেন। আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ঢাকা ক্যাপিটালসের মেন্টর হিসেবে যুক্ত হয়েছেন তিনি।
ঢাকা ক্যাপিটালসের সিইও আতিক ফাহাদ রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘‘ঢাকা ক্যাপিটালসের মেন্টর শোয়েব আখতার ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এখানে কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ১৬ তারিখ তিনি ফিরে যাবেন। পরবর্তীতে আমাদের সঙ্গে আবার যুক্ত হবেন।’’
ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬১.৩৭ কিলোমিটার গতির বলের মালিক শোয়েবকে নিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালস লিখেছে, ‘‘কৌশলের সঙ্গে গতির মেলবন্ধ। আমাদের মেন্টর- শোয়েব আখতার। গর্জন শুরু হোক!।’’
গত আসর দিয়ে বিপিএলে অভিষেক হয়েছিল ঢাকা ক্যাপিটালসের। প্রথম মৌসুমে মেন্টর হিসেবে তারা সঙ্গে পেয়েছিল পাকিস্তানের অফ স্পিন কিংবদন্তি সাঈদ আজমলকে। এবার নতুন রূপে, নতুন পরিকল্পনায় মেন্টর হিসেবে যুক্ত করেছে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ শোয়েবকে।
২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান শোয়েব। এরপর চ্যারিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেললেও পেশাদার কোনো টুর্নামেন্টে ৫০ বছর বয়সী সাবেক পাকিস্তানি পেসারকে আর মাঠে দেখা যায়নি।
খেলার ছাড়ার পর ধারাভাষ্যকার ও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ম্যাচ বিশ্লেষণ করতে দেখা যায়।
ঢাকা ক্যাপিটালস তাদের বিপিএল অভিযান শুরু করবে ২৭ ডিসেম্বর সিলেটে। তাদের প্রথম প্রতিপক্ষ রাজশাহী ওয়ারিয়র্স।
ঢাকা/ইয়াসিন