গোড়ায় মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত, লাল কাপড় বাধাকে ‘শিরক ও গুনাহর কাজ’ আখ্যা দিয়ে মাদারীপুরে শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা আলম মীরার কান্দি এলাকায় শতবর্ষী বটগাছটি কেটে ফেলেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান প্রতিক্রিয়াও দেখা যাচ্ছে। 

এ দিকে বটগাছটি কেটে ফেলার বিষয়ে তদন্ত শুরু কাজ করেছে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন। 

জানা যায়, শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা আলম মীরার কান্দি এলাকায় শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলেন স্থানীয়রা। মূলত শতবর্ষী বটগাছটির গোঁড়ায় স্থানীয় ও দূর-দূরান্তের মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত করতো, মনোবাসনা পূরণে লাল কাপড় বেঁধে রাখত। যা ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক আখ্যা দিয়ে তা কেটে ফেলা হয়েছে।

গাছটি কাটার সমালোচনা করে মাইনুল ফয়সাল নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘শিরক করল কারা আর ক্ষতিগ্রস্ত হলো কে? গোটা জাতি এতটা অশিক্ষিত কি করে হয় আমার মাথায় ঢোকে না। বটগাছের অপরাধ কি?’

সোহেল সিকদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদে অনেকে এই গাছের ছায়ায় বসে থাকত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শত শত পাখির অভয়ারণ্য এ গাছ। এভাবে গাছটি কেটে ফেলা ঠিক না।’

তবে গাছ কাটার পক্ষ নিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘এই বটগাছের গোঁড়ায় মিষ্টি দেয়, সিন্নি দেয়, লাল কাপড় বাধা হয়। এই গাছকে কে মনে করে সৃষ্টিকর্তা, দেবতা, যা শিরক ও গুনাহর কাজ। এই গুনাহর কাজ যাতে না হয় সেজন্য স্থানীয়রা গাছটি কেটেছেন। এত বড় গাছ যে পরিমাণে অক্সিজেন দেয় তা আমাদের ও পরিবেশের জন্য বড্ড উপকারী তা আমরা জানি। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করেছি, এখানে তিনটি গাছ রোপণ করব। আমরা জমির মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি গাছটি কাটার বিষয়ে। তিনি আমাদের বলেছেন, যেহেতু গাছটির জন্য গুনাহ হচ্ছে, তাই কেটে ফেলেন ও আমাদের মসজিদে ১৫০০ টাকা দিয়েন।’

মাদারীপুর বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলম খান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং আশপাশের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে আগে যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাছটি কাটার পরিকল্পনা হয়েছিল, তা অস্বীকার করছেন গাছমালিক। জমির মালিক সত্তর হাওলাদার বলেছেন, গাছ তিনি ১৫০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আমার ধারণা, ঘটনা আগেরটা ঠিক, তবে জমির মালিককে ম্যানেজ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি এবং তদন্ত করা হচ্ছে।’ 

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোসা.

ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি জেনে সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শতবর ষ বটগ ছ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রিকেট খেলতে যাওয়ার সময় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

নীলফামারীতে ক্রিকেট খেলতে যাওয়ার পথে বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলে থাকা আরও দুজন। আজ শুক্রবার সকালে নীলফামারী সদর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম রাশেদ পারভেজ (২৪)। তিনি জেলা শহরের কলেজপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তিনি নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড কোম্পানির প্যাকেজিং শাখার কর্মী ছিলেন। আহত মো. খোকা ইসলাম (২৩) জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের কাজীরহাট গ্রামের বাসিন্দা। তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহত মোরছালিন ইসলাম (২৩) নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে তিন বন্ধু ক্রিকেট খেলার উদ্দেশ্যে নীলফামারী শহর থেকে জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের বাবুরহাট যাচ্ছিলেন। পথে সদর উপজেলার দারোয়ানী টেক্সটাইল মিল এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইককে অতিক্রম করার সময় মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সময় পেছন দিক থেকে আসা নীলফামারী থেকে সৈয়দপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস তাঁদের ধাক্কা দেয়। এতে তাঁরা সড়কে ছিটকে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রাশেদ পারভেজ ও খোকা ইসলামকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সেখানে নেওয়ার পথে রাশেদ পারভেজের মৃত্যু হয়।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, দুর্ঘনার পর বাসটি নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন। বাসটি শনাক্তে কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ