সকালে ঘুরে বেড়াচ্ছিল রুবেল, দুপুরে খামারের পাশে পড়ে ছিল রক্তাক্ত লাশ
Published: 7th, May 2025 GMT
সাভারের আশুলিয়ায় একটি মাছের খামারের পাশ থেকে রুবেল মণ্ডল (৩৫) নামে এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম দেউন এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, রুবেল মণ্ডলকে সকালেও ঘুরতে দেখা যায়। পরে আর এলাকায় দেখা যায়নি। দুপুরে তার রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত রুবেল আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম দক্ষিণপাড়া এলাকার মো.
পুলিশ জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম দেউন এলাকার একটি মাছের খামারের পাশে নির্জন স্থানে রুবেল মণ্ডলের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান এলাকাবাসী। পরে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হয়। খবর পয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় পাশেই রুবেলের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পড়ে ছিল।
নিহতের বড় ভাই আলমগীর মণ্ডল বলেন, ‘সকালে রুবেল মণ্ডলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় স্থানীয় বাসিন্দা আব্বাস মণ্ডলের ছেলে শান্ত (৩০), মৃত আশক আলী মণ্ডলের ছেলে কুদ্দুস মণ্ডল ও তার ভাই আমজাদ মণ্ডল। এর আগে ১৫ দিন আগেই তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল শান্ত, মুনসুর, আকবর, কুদ্দুস, আমজাদ, জাহিদুল, জাকির হোসেন, ও আলাউদ্দিন। দুই দিন আগেও তারা আমাদের খামার থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়।’
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর হত্যার কারণ ও হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে পুলিশ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, তাহলে রাজনৈতিক মোড়টা ঘুরতে পারে, নির্বাচন বানচাল হতে পারে। সে জন্যই জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র এ কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের সনাতনীদের নিয়ে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ মুজিব বিহারি-বাঙালি দাঙ্গা লাগিয়ে, বিহারি-বাঙালি আলাদা করে ১৯৭০–এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিলেন এই অঞ্চলের লোকদের বাঙালি বানিয়ে। এ ধরনের ঘটনা ঘটানোরও পেছনে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পটু। দরকার হলে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে দেবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা আরও বলেন, সাম্প্রদায়িকতার মাঝে একটা রাজনীতি আছে। এ ভারতবর্ষে, এ উপমহাদেশে অনেক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। কিছু গুজবের কারণে। ভারতে এসব দাঙ্গা এখনো চলমান। রাজনৈতিক কুটিলতার মধ্যে এ সাম্প্রদায়িকতা এখন না, হাজার বছর আগে থেকে আছে।
কোনো মানুষ কিংবা ধর্ম সাম্প্রদায়িক নয় উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কখনো কোনো কিছু মোকাবিলা করার জন্য দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করাতে হয়। যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরেক দিকে চলে যায়। এইচ এম এরশাদও ’৮৮ সালে এ কাজটা করেছিলেন। বাংলাদেশে মুসলমান নয়, হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু, হিন্দুরাই হিন্দুদের ক্ষতি করে।
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমি হিন্দু–মুসলমানের ব্যবধান বুঝি না। আমি খারাপ আর ভালো লোকের ব্যবধান বুঝি। সৎ লোক–প্রতারকের ব্যবধান বুঝি। আমি সাম্প্রদায়িকতা পছন্দ করি না, অসাম্প্রদায়িক জীবন যাপন করতে পছন্দ করি।’
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘হিন্দু-মুসলমান আমরা একটা বৃহত্তর সংস্কৃতির অংশ। এখানে কোনো প্রভেদ ছিল না, কোনো বিভেদ ছিল না। এটাকে শেখ হাসিনা ভাঙতে চেয়েছেন।
দেখাতে চেয়েছেন এই দেশ বিভেদ–বিভাজনে ভরপুর। সুতরাং আমাকে সমর্থন করো। অন্য বিরোধী দল কাউকে সমর্থন করবে না। এ কারণে তিনি জোর করে জনসমর্থন ব্যতিরেকে দিনের ভোট রাতে করে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যেতে না দিয়ে নির্বাচন কমিশন দিয়ে ভোট করেছেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করেছেন।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব মীর সরাফত আলী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক।