কয়েক বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সক্ষমতার বিভিন্ন ঝলক দেখা যাচ্ছে। আর তাই এ প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও অনেক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এআই প্রযুক্তি বিভিন্ন কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে মানুষের বিকল্প হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেমিস হাসাবিস যুক্তরাজ্যের কুইন্স কলেজে আয়োজিত এক সাক্ষাৎকারে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, শিক্ষার্থীদের জন্য এআই নতুন সুযোগ তৈরি করবে। আগামী দশকে পরিবর্তনই হবে একমাত্র ধ্রুবক। আর তাই নতুন পরিবর্তন ও প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ডেমিস হাসাবিস বলেন, ‘আমি বিশেষ করে এআই নিয়ে কথা বলতে চাই। ভিআর (ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি), এআর (অগমেন্টেড রিয়েলিটি) ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিং প্রযুক্তির বিষয়ে জানতে হবে। আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে এসব প্রযুক্তি আরও কার্যকর হয়ে উঠবে। যখনই কোনো পরিবর্তন আসবে, তখন বিশাল সুযোগ তৈরি হয়। আমি মনে করি, আমরা এমন একটি নতুন সময়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। নব্বইয়ের দশকের যখন আমরা স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করছিলাম, তখন ছিল আমাদের জন্য ইন্টারনেট, মোবাইল এবং গেমস। আপনাকে খুব বুদ্ধিমান হতে হবে ও সামনে আসা নতুন প্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করতে হবে।’

আরও পড়ুনগান তৈরির এআই মডেল আনছে গুগলের ডিপমাইন্ড১৮ নভেম্বর ২০২৩

এআইয়ের যুগে সফল হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের নতুন প্রযুক্তি শেখার জন্য বেশি সময় ব্যয় করার পরামর্শ দিয়েছেন ডেমিস হাসাবিস। তিনি জানান, স্নাতক ডিগ্রিধারী হিসেবে সময়কে আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে। ভালোভাবে শেখার জন্য সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হবে। নতুন প্রযুক্তি কীভাবে দ্রুত গ্রহণ করা যায় ও তাতে পারদর্শী হওয়া যায়, তা জানতে হবে।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য নত ন প

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ