মাছের খামার দখলের জন্যই সাভারের আশুলিয়ায় রুবেল মণ্ডলকে (৩৫) হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ হত্যাকাণ্ডের হোতা আমজাদ মণ্ডল ও তার সহযোগী জুয়েল মাদবরকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব-৪। শুক্রবার রাতে সংস্থাটির নবীনগর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহামুদ খানের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিহত রুবেল মণ্ডল আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম দক্ষিণপাড়া এলাকার নায়েব আলী মণ্ডলের ছেলে। তাঁর বড় ভাই রুহুল আমিন মণ্ডল আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। রুহুল আমিন মণ্ডল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকাছাড়া।
তাঁকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আমজাদ মণ্ডল (৪৫) ও জুয়েল মাদবর (৩৬) আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। র‍্যাব জানায়, ভাইয়ের মাছের খামার, ঝুট ব্যবসা ও বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করতেন রুবেল মণ্ডল। বেশকিছু দিন ধরে আমজাদ মণ্ডলের সঙ্গে মাছের খামার নিয়ে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধ মীমাংসার নাম করে গত বুধবার সকালে রুবেল মণ্ডলকে ডেকে নেয় প্রতিপক্ষ। পরে নিজ মাছের খামারে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন লাশ দেখতে পেয়ে আশুলিয়া থানায় খবর দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। লাশের পাশেই তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পড়ে ছিল। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
রুবেলের ভাই আলমগীর মণ্ডলের ভাষ্য, তাদের বড় ভাই রুহুল আমিন মণ্ডল পরপর দুইবার আশুলিয়া ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ঝুটের ব্যবসাসহ এলাকায় মাছের খামার ও গরুর খামার রয়েছে তাঁর। এসব ব্যবসা দখলে নেওয়ার জন্য ৫ আগস্টের পর তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন এলাকাছাড়া। তাঁর (রুহুল) অনুপস্থিতে ওই ব্যবসা-বাণিজ্য দেখভাল করতে ছোট ভাই রুবেল মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতেই বিপত্তি দেখা দেয়। ব্যবসা দখলের পথে বাধা মনে করেই তাঁকে হত্যা পরিকল্পনা করে বলে তাঁর অভিযোগ।
আলমগীর বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার বেলা ১১টার দিকে আলাউদ্দিন নামের একজন তাঁকে (রুবেল) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর তাঁকে আমাদের মাছের খামারে নিয়ে যায়। সেখানে ডা.

জাকির, আমজাদ মণ্ডল, জাইদুর মণ্ডল, হামেদ মাদবর, কুদ্দুস মণ্ডল, জুয়েল মাদবর, মুনসুর মণ্ডল, মিজান মণ্ডল ওরফে হায়েল মণ্ডল, সেলিম মণ্ডল, আবুল কাশেম দেওয়ান ও মিলন মণ্ডলসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ছয়-সাতজন রুবেলকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের ১৫-২০ দিন আগে থেকেই রুবেলকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। দুই দিন আগেও জোর করে তাদের খামার থেকে মাছ লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় পুলিশ আগেই আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। র‍্যাব-৪ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরই তাদের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এতে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ধামরাই থানাধীন কালামপুর বাজার এলাকা থেকে ওই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। 

নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়।  পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ