মাছের খামার দখলের জন্যই রুবেলকে হত্যা
Published: 10th, May 2025 GMT
মাছের খামার দখলের জন্যই সাভারের আশুলিয়ায় রুবেল মণ্ডলকে (৩৫) হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ হত্যাকাণ্ডের হোতা আমজাদ মণ্ডল ও তার সহযোগী জুয়েল মাদবরকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব-৪। শুক্রবার রাতে সংস্থাটির নবীনগর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহামুদ খানের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিহত রুবেল মণ্ডল আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম দক্ষিণপাড়া এলাকার নায়েব আলী মণ্ডলের ছেলে। তাঁর বড় ভাই রুহুল আমিন মণ্ডল আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। রুহুল আমিন মণ্ডল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকাছাড়া।
তাঁকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আমজাদ মণ্ডল (৪৫) ও জুয়েল মাদবর (৩৬) আশুলিয়ার পাড়াগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। র্যাব জানায়, ভাইয়ের মাছের খামার, ঝুট ব্যবসা ও বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করতেন রুবেল মণ্ডল। বেশকিছু দিন ধরে আমজাদ মণ্ডলের সঙ্গে মাছের খামার নিয়ে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধ মীমাংসার নাম করে গত বুধবার সকালে রুবেল মণ্ডলকে ডেকে নেয় প্রতিপক্ষ। পরে নিজ মাছের খামারে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন লাশ দেখতে পেয়ে আশুলিয়া থানায় খবর দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। লাশের পাশেই তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পড়ে ছিল। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
রুবেলের ভাই আলমগীর মণ্ডলের ভাষ্য, তাদের বড় ভাই রুহুল আমিন মণ্ডল পরপর দুইবার আশুলিয়া ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ঝুটের ব্যবসাসহ এলাকায় মাছের খামার ও গরুর খামার রয়েছে তাঁর। এসব ব্যবসা দখলে নেওয়ার জন্য ৫ আগস্টের পর তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন এলাকাছাড়া। তাঁর (রুহুল) অনুপস্থিতে ওই ব্যবসা-বাণিজ্য দেখভাল করতে ছোট ভাই রুবেল মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতেই বিপত্তি দেখা দেয়। ব্যবসা দখলের পথে বাধা মনে করেই তাঁকে হত্যা পরিকল্পনা করে বলে তাঁর অভিযোগ।
আলমগীর বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার বেলা ১১টার দিকে আলাউদ্দিন নামের একজন তাঁকে (রুবেল) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর তাঁকে আমাদের মাছের খামারে নিয়ে যায়। সেখানে ডা.
এ ঘটনায় পুলিশ আগেই আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। র্যাব-৪ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরই তাদের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এতে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ধামরাই থানাধীন কালামপুর বাজার এলাকা থেকে ওই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার পাচ্ছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু
বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্যখাতে দীর্ঘদিনের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন ২০২৫ সালের জন্য পুরস্কৃত করেছে দেশের শীর্ষ কৃষি উদ্যোক্তা আবদুল আউয়াল মিন্টুকে।
প্রতিষ্ঠানটি গত মঙ্গলবার রাতে এক ঘোষণায় ২৭ দেশের ৩৯ জনকে ‘টপ এগ্রি ফুড পাইওনিয়ার’ হিসেবে মনোনীত করে। সেই তালিকায় রয়েছেন লাল তীর সীডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিশিষ্ট রাজনীতিক আবদুল আউয়াল মিন্টু।
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বীজ, সবজি ও প্রাণিসম্পদ খাতসহ কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তায় কাজ করছেন মিন্টু। ১৯৯৪ সালে মাত্র ২৫ একর জমির ওপর তিনি ‘লাল তীর সীডস লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শীর্ষ বেসরকারি কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম। বর্তমানে এটি জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাগুলোর পর্যবেক্ষণে আঞ্চলিকভাবে সপ্তম স্থানে রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশে তিনিই প্রথম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন (আইএসটিএ স্বীকৃত) বীজ পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠা করেন, যা দেশে একমাত্র। মিন্টুর উদ্যোগে দেশে হাইব্রিড ও উন্নত বীজের ব্যবহার জনপ্রিয় হয় এবং সবজি উৎপাদনে বিপুল সাফল্য আসে।
উদ্যোক্তা হিসেবে সফলতার পাশাপাশি কৃষি অর্থনীতি, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ও প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় উচ্চতর ডিগ্রি ও গবেষণার মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তার গবেষণার মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো মহিষের জীবন রহস্য উন্মোচন হয়। পাশাপাশি উন্নত জাতের গরু মোটাতাজাকরণে সীমেন প্রযুক্তির প্রচলনও তারই হাত ধরে শুরু হয়।
পুরস্কার প্রসঙ্গে আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘আমি সবসময় কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে অবদান রাখতে চাই। এই সম্মান আমাকে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে।’
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি বছর ৩৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২১–২৩ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ডেস মইনসে আয়োজিত নরম্যান ই. বোরলাগ আন্তর্জাতিক সংলাপে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাশাল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ব এখন খাদ্য, পুষ্টি ও জলবায়ুভিত্তিক সংকটের সম্মুখীন। এই ৩৯ জন সম্মানিত ব্যক্তি সাহসী পরিবর্তনকারী, যারা বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছেন।’
এ বছর মনোনীতদের মধ্যে রয়েছেন বিজ্ঞানী, কৃষক, নীতিনির্ধারক, উদ্যোক্তা ও মানবতাবাদীরা। যারা বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।