যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে এবং বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।

শনিবার (১০ মে) মধ্য রাতে ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

দুটি কথা শিরোনাম দিয়ে মাহফুজ আলম সেখানে লেখেন, '৭১ এর প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে। পাকিস্তান এদেশে গণহত্যা চলিয়েছে।( পাকিস্তান অফিসিয়ালি ক্ষমা চাইলেও, তদুপরি আবারো ক্ষমা চাইতে রাজি হলেও, যুদ্ধাপরাধের সহযোগীরা এখনো ক্ষমা চায়নি)। ইনিয়ে বিনিয়ে গণহত্যার পক্ষে বয়ান উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। জুলাইয়ের শক্তির মধ্যে ঢুকে স্যাবোট্যাজ করা বন্ধ করতে হবে। সাফ দিলে আসতে হবে।

২.

মুজিববাদী বামদের ক্ষমা নাই। লীগের গুম-খুন আর শাপলায়, মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞের মস্তিস্ক এরা। এরা থার্টি সিক্সথ ডিভিশন। জুলাইয়ের সময়ে এরা নিকৃষ্ট দালালি করেও এখন বহাল তবিয়তে আছে। আজ পর্যন্ত মুজিববাদী বামেরা কালচারালি ও ইন্টেলেকচুয়ালি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করে যাচ্ছে। দেশে বসে জুলাইয়ের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে এরা চক্রান্ত করেই যাচ্ছে। লীগের এসকল বিটিম ও শীঘ্রই পরাজিত হবে। অন্য কারো কাঁধে ভর করে লাভ নেই।

তার ওই লেখায় ২৭ হাজার মানুষ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শেয়ার করেছেন প্রায় ৪ হাজার মানুষ।

দীপু দাস তুষার নামে একজন লেখেন, “প্রথম কথাটা যদি আন্দোলনের পরে দৃঢ় ভাবে বলতে পারতেন, তাহলে হয়তো আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক বিশাল গোষ্ঠীকে এখনো পাশে পাইতেন। তবে, এখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে।”

রেদওয়ান আহমেদ রিফাত নামে একজন লেখেন, “এই ধরনের বক্তব্য উপদেষ্টার কাছ থেকে আসা উচিত না বরং এই বক্তব্যগুলো যারা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়েছিল তাদের কাছ থেকে আসা করে মানুষ।”

রিফাতের এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমি আর লিখব না। অলরেডি শিবিরের হাতে খরচের খাতায় ঢুকে গেসি। শিবির ও আমাকে মারবে, মুজিববাদী বামেরাও মারবে। তথাস্তু! এই শেষ লিখলাম। বাকিটা রাজনৈতিক বোদ্ধারা, নেতারা যা ভালো মনে করেন, করবেন। ইতিহাস আমাকে মুক্তি দিবে।”

ঢাকা/ইভা

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জোহরান মামদানির উত্থান: ফিলিস্তিনপন্থি রাজনীতির সুযোগ বাড়ার আভাস

চমক সৃষ্টি করে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদপ্রার্থী হওয়া জোহরান মামদানি তার শহর নিয়ে সাহসী পরিকল্পনা সামনে এনেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো, তিনি সরকারি মুদি দোকান চালু করতে চান, আরো বাড়ি নির্মাণ করতে চান, বাস ভাড়া সম্পূর্ণ ফ্রি করতে চান এবং ভর্তুকি পাওয়া ভাড়াটিয়াদের জন্য ভাড়া স্থির করে রাখতে চান। 

তবে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির আগে তার প্রতিপক্ষ ও কিছু সংবাদমাধ্যম বরং তার ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে মতামতের দিকেই বেশি নজর দিয়েছে। মামদানি ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে তার দৃঢ় সমর্থন বজায় রেখেছেন। তিনি ইসরায়েলি নিপীড়নের নিন্দা করেছেন এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতো করে গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। মামদানি তার অবস্থান থেকে পিছু হটেননি এবং শেষ পর্যন্ত তিনিই জয়লাভ করেন। 

মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বিী নিউ ইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বিত্ত-বৈভব ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাবের দিক থেকে তার চেয়ে এগিয়ে। কিন্তু নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাটদের মন করে নিয়েছেন তরুণ রাজনীতিক মামদানি, যার বয়স মাত্র ৩৩ বছর। মামদানির চমকপ্রদ রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালেই, যেবছর তিনি নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেমব্লির প্রতিনিধি নির্বাচিত হন।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাখ্যার তীব্র নিন্দা জানালো ইরান

নেতানিয়াহুর দুর্নীতির বিচার বাতিল করার আহ্বান ট্রাম্পের

মামদানির সমর্থকেরা বলছেন, মেয়র প্রার্থীর দৌড়ে তার বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে একটি নতুন বাঁকবদলের ইঙ্গিত হতে পারে, যা বামপন্থ এবং ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে নির্বাচনি গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করে।

“এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা,” বলেছেন প্রগতিশীল সংগঠন জাস্টিস ডেমোক্র্যাটস-এর মুখপাত্র উসামাহ আন্দরাবি।

তিনি বলেন, “সত্যিকারের প্রগতিশীলরা, যারা ধনী ব্যবসায়ী এবং করপোরেট সুপার প্যাকগুলোর বিরুদ্ধে শ্রমজীবী শ্রেণিকে ঐক্যবদ্ধ করতে চান এবং একই সঙ্গে গণহত্যার মতো গুরুতর ইস্যুতে আপস না করে দৃঢ় থাকেন, তাদের জন্য এখন আর কোনো সীমা নেই।”

যদিও আনুষ্ঠানিক ফলাফল এখনো চূড়ান্ত হয়নি, মামদানি কুয়োমোর চেয়ে সাত শতাংশেরও বেশি ব্যবধানে এগিয়ে আছেন এবং প্রায় সব ভোটই গণনা শেষ। এর ফলে তার মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত।

নিউ ইয়র্ক শহরের র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং পদ্ধতিতে পরবর্তী রাউন্ডের গণনার পর তার ব্যবধান আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

কুয়োমো এরইমধ্যে পরাজয় মেনে নিয়েছেন এবং মামদানি বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছেন, যা তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরের পরবর্তী মেয়র হওয়ার পথে এগিয়ে নিয়েছে।

নিউ ইয়র্কে ডেমোক্রেটিক দল অত্যন্ত প্রভাবশালী, তাই দলীয় প্রার্থী হিসেবে জোহরান মামদানি নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে সহজেই জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে; যদিও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার জনসমর্থন ছিল মাত্র ১ শতাংশ, তখন এই ফলাফল একেবারেই অসম্ভব মনে হয়েছিল।

‘তিনি পিছু হটেননি’
ডিজিটাল মিডিয়ায় দক্ষ, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ও সহজপ্রাপ্য ৩৩ বছর বয়সি এই রাজ্য প্রতিনিধি মামদানির বহু ভিডিও ভাইরাল হয়। নিউ ইয়র্কের রাস্তায় সরাসরি প্রচারে নেমে ধীরে ধীরে নিজের সমর্থক-ভিত্তি তৈরি করতে থাকেন।

গত বছরের নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক ও যারা ভোট দেননি, যারা প্রচলিত রাজনীতির প্রতি অখুশি; তাদের সঙ্গে কথা বলেন মামদানি। তাদের সামনে তিনি তার নিজের রাজনৈতিক পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি একটি ভিডিও তৈরি করেন, যাতে দেখা যায়, তাদের অনেকে তাকে মেয়র হিসেবে সমর্থন করতে আগ্রহী।

মামদানির সমর্থকরা বলছেন, মামদানি হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবকের একটি বিশাল বাহিনী গড়ে তুলতে সক্ষম হন, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার প্রচারের বার্তা ছড়িয়ে দেয়।

নিউ ইয়র্ক সিটির সিটি ইউনিভার্সিটির (সিইউএনওয়াই) সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক হেবা গাওয়ায়েদ বলেন, মামদানির ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান অনেক তরুণকে তার দিকে আকৃষ্ট করে এবং তারা সক্রিয়ভাবে তার প্রচারে যুক্ত হয়।

“ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান থেকে পিছু না হটা, তার জন্য বিশাল এক ঘটনা হয়ে ওঠে,” গাওয়ায়েদ আলজাজিরাকে বলেন। 

“আমরা বারবার শুনে এসেছি, এমন অবস্থান রাজনৈতিকভাবে আত্মঘাতী অথচ এই আন্দোলন কেবল সেই অবস্থানই নেয়নি, বরং বলা যায় এই অবস্থানই ছিল এর (মামদানির জনপ্রিয়তার) ভিত্তি।”

হেবা গাওয়ায়েদ আরো বলেন, যদি মামদানি তার সমালোচকদের খুশি করতে অবস্থান পরিবর্তন করতেন, তাহলে তার প্রতি মানুষের আগ্রহ ও সমর্থন হারিয়ে যেত। বরং ফিলিস্তিনি অধিকারের পক্ষে তার অবস্থানই তার প্রচারকে আরো শক্তিশালী করেছে।

ডেমোক্রেটিক মনোনয়নপ্রাপ্ত হওয়ার পথে থাকা মামদানিকে একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে তার প্রচারাভিযানে অর্থের ঘাটতি ছিল, এমনকি মানুষজন তার নামও খুব একটা জানত না। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন অ্যান্ড্রু কুয়োমো; নিউইয়র্কের এক রাজনৈতিক রাজবংশের সদস্য ও সাবেক গভর্নর।

কুয়োমোর পিতা নিজেও নিউ ইয়র্কের গভর্নর ছিলেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে কুয়োমো জাতীয় ডেমোক্রেটিক পার্টির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের, যেমন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও আইনপ্রণেতা জিম ক্লাইবার্নের সমর্থন অর্জন করেন।

অন্যদিকে মামদানির পক্ষে সমর্থন আসে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টস অব আমেরিকার (ডিএসএ) স্থানীয় শাখা থেকে।

এই কারণেই মামদানির বিজয় তার সমর্থকদের কাছে অভাবনীয় মনে হয়েছে। এটি যেন এক ‘দাবিদ বনাম গোলিয়াথ’-এর যুদ্ধ ছিল, যাকে বলে পুরনো ধারা বনাম নতুন প্রজন্মের সংঘাত।

“পুরোনো ধারা প্রতীকীভাবে হার মানল একজন ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট, তরুণ, ফিলিস্তিনপন্থি, বাদামী মুসলিম ছেলের কাছে; যার ফেব্রুয়ারিতে পরিচিতি ছিল মাত্র ১ শতাংশ,” বলেন গাওয়ায়েদ। 
তিনি বলেন, “এটা একেবারে বিস্ময়কর এবং ব্যতিক্রমধর্মী একটি ঘটনা।”

উগান্ডায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাবা-মায়ের ঘরে জন্ম নেওয়া জোহরান মামদানি ২০২১ সাল থেকে নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অনেকেই কুয়োমো বনাম মামদানির মুখোমুখি লড়াইকে ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রগতিশীল ও মধ্যপন্থিদের শক্তি পরীক্ষার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। এই সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্নহীন সমর্থন নিয়ে বিতর্ক।

ইসরায়েল ইস্যুতে কুয়োমোর মনোযোগ
একজন রাজ্য-আইনপ্রণেতা হিসেবে মামদানি গাজার ওপর ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও সরব অবস্থান নিয়েছেন, যে অভিযানে অন্তত ৫৬ হাজার ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এমনকি তিনি ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে হোয়াইট হাউসের সামনে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে অনশনেও অংশ নেন।

তবে মেয়র পদে প্রচার শুরু করার সময় মামদানি স্থানীয় ইস্যুগুলোকেই অগ্রাধিকার দেন।

২০২১ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে গভর্নরের পদ থেকে পদত্যাগ করা ‍কুয়োমো তার প্রচারণায় মামদানির ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সম্পর্কিত অবস্থানকে কেন্দ্রীয় ইস্যুতে পরিণত করার চেষ্টা করেন।

এই মাসের শুরুতে কুয়োমো বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ উত্থাপন করা আমেরিকান ইহুদিদের বিরুদ্ধে হামলাকে উস্কে দেয়। তার এই বক্তব্যের লক্ষ্য ছিল মামদানি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে কুয়োমো লিখেছিলেন, “ঘৃণা ঘৃণাকে উসকে দেয়। ‘গণহত্যা’, ‘যুদ্ধাপরাধী’, ‘হত্যাকারী’-এই ধরনের ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য বন্ধ করতে হবে। এটি রাজনীতির শরীরজুড়ে ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।” 

কুয়োমো বর্তমানে সেই আইনজীবী দলের সদস্য, যারা গাজায় যুদ্ধাপরাধসহ ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়া ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পক্ষে সাফাই গাইছেন।

যখন মামদানি ও তার কয়েকজন সহ-প্রার্থীর মধ্যে সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার কুয়োমোর বিরুদ্ধে একসঙ্গে প্রচারে নামেন, তখন কুয়োমো আবার ইসরায়েল প্রসঙ্গ তোলেন।

তিনি বলেন, “কীভাবে... একজন ব্র্যাড ল্যান্ডার জোহরান মামদানিকে সমর্থন করেন? তার ইসরায়েল নিয়ে অবস্থানকে সমর্থন করেন? তার বক্তব্যগুলোকে সমর্থন করেন?”

ব্র্যাড ল্যান্ডার, যিনি নিজে একজন ইহুদি, মামদানিকে সমর্থন করেন এবং দুজনই একে অপরকে প্রার্থিতায় সমর্থন দেন। এমনকি তাদের সমর্থকদের উৎসাহ দেন ব্যালটে একে অপরকে উচ্চ র‌্যাংকে রাখতে।

কুয়োমোপন্থি একটি নির্বাচনি সুপার প্যাক, যেটির নাম ফিক্স দ্য সিটি, মামদানির ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিষয়ে অবস্থানকে আক্রমণের কেন্দ্রে তুলে আনে।

এই সুপার প্যাকটি (সামাজিক সংগঠন) প্রো-ইসরায়েলপন্থি ধনকুবের ও ট্রাম্প-সমর্থক বিল অ্যাকম্যানের কাছ থেকে ৫ লাখ ডলার পায়। সাবেক নিউ ইয়র্ক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ, যিনি ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক, এই গ্রুপে দিয়েছেন ৮ মিলিয়ন ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলোও মামদানির ইসরায়েলবিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘিরে বারবার প্রশ্ন তোলে। তাকে বারবার জিজ্ঞাসা করা হয় পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে, যেমন: তিনি কি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেন? অথবা তিনি মেয়র হিসেবে ইসরায়েল সফরে যাবেন কি না।

‘একটি বাঁক বদলের মুহূর্ত’
অ্যাডভোকেসি গ্রুপ জিউস ভয়েস ফর পিস (জেভিপি) অ্যাকশন-এর রাজনৈতিক পরিচালক বেথ মিলার বলেন, মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত নিয়ে মামদানির দৃষ্টিভঙ্গিকে ইস্যু বানিয়ে কুয়োমো ভুল করেছেন।

গাজায় নৃশংসতার পর ডেমোক্র্যাটিক সমর্থকেরা ক্রমেই ইসরায়েলের প্রতি শর্তহীন সমর্থন থেকে সরে আসছেন। এপ্রিল মাসে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার-এর এক জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের ৬৯ শতাংশই ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন।

মিলার আলজাজিরাকে বলেন, “কুয়োমো এখনো রাজনীতি নিয়ে এক পুরনো যুগের ডাইনোসরের মতো চিন্তা করেন।”

জেভিপি অ্যাকশন শুরু থেকেই মামদানির প্রচারকে সমর্থন জানায়। 

মিলার বলেন, মামদানি নিউ ইয়র্ককে আরো সাশ্রয়ী করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে প্রচার চালালেও তার প্রগতিশীল রাজনীতির মূলভিত্তি হলো, সব মানুষের মানবিক মর্যাদা রক্ষা করা, যার মধ্যে ফিলিস্তিনিরাও অন্তর্ভুক্ত।

“কুয়োমো ধরে নিয়েছিলেন, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে মামদানির অবস্থান তার জন্য একটি দুর্বলতা হবে। কিন্তু গত রাত দেখিয়ে দিল, এটা সত্য নয়,” বলেন মিলার।

“বরং আমি যা দেখেছি, তা হলো, ফিলিস্তিনি অধিকারের প্রতি মামদানির সমর্থনই ছিল তার প্রচারের একটি শক্তি। এটা তরুণ ভোটারদের সক্রিয় করেছে। এটা বহু প্রগতিশীল ইহুদি, মুসলিম এবং আরো অনেককে উদ্দীপ্ত করেছে।”

গত কয়েক বছরে আমেরিকান ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটিসহ (এআইপিএসি) বিভিন্ন প্রো-ইসরায়েল গ্রুপ ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে প্রগতিশীল প্রার্থীদের হারানোর লক্ষ্যে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ঢেলেছে। গত নির্বাচনি পর্বে তারা ইসরায়েল সমালোচক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য জামাল বোম্যান ও কোরি বুশকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছে।

প্রগতিশীল আন্দোলনের নেতারা বলছেন, মামদানির বিজয় এবার তাদের পক্ষে রাজনৈতিক গতিপথ পাল্টে দিতে পারে।

জাস্টিস ডেমোক্র্যাটস গ্রুপের উসামাহ আন্দরাবি বলেন, “আমরা অবশেষে একটি বাঁক বদলের সময় দেখতে পাচ্ছি। এআইপিএসি প্রায়ই বলে থাকে, ইসরায়েলকে সমর্থন করা ভালো নীতি এবং ভালো রাজনীতি। কিন্তু এখন যেটা খুব পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হচ্ছে, তা হলো, বর্ণবৈষম্যমূলক ইসরায়েলকে সমর্থন করা যেমন নীতির দিক থেকে খারাপ, তেমনি সেই রাজনীতিও খারাপ।”

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি
  • ইসরায়েল-ভারত যেভাবে পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে চেয়েছিল
  • কেবল ব্যক্তির বদল নয়, পুলিশের সংস্কারও প্রয়োজন: সামান্তা শারমিন
  • যে পাঁচ ক্লাব হতে পারে রদ্রিগোর নতুন ঠিকানা
  • যে পাঁচ ক্লাব হতে পারে রদ্রিগোর নতুন ঠিকান 
  • জোহরান মামদানির উত্থান: ফিলিস্তিনপন্থি রাজনীতির সুযোগ বাড়ার আভাস
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার চায় হেফাজত
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার চায় হেফাজতে ইসলাম
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে: হেফাজত
  • নতুন করে আরেক ফ্যাসিস্ট জন্ম নিয়েছে: ফয়জুল করীম