ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা অমিত হাসানকে এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। মাঝে মধ্যে তাকে চলচ্চিত্র বিষয়ক বিভিন্ন ঘটনায় সরব থাকতে দেখা যায়। এবার তিনি কথা বলেছেন শিল্পী সমিতির সক্রিয়তা নিয়ে। আজ সোমবার নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘শিল্পী সমিতি আছে কিন্তু শিল্পী নেই।’ তার এ মন্তব্যের সঙ্গে অনেকেই একমত পোষণ করেছেন।

আমিত হাসানের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ওমর সানী লিখেছেন, ‘একদম সত্যি ভালো বলছিস।’

পরে আমিত হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, সিনিয়র শিল্পীরা এখন অবহেলিত। তাদের ভেবে গল্প লেখা হচ্ছে না। আমি, রুবেল, ওমর সানী, আমিন খান, বাপ্পারাজ কোনো সিনেমায় নেই। আমাদের জুনিয়রদের হাতেও কাজ নেই। যেমন বাপ্পি চৌধুরী, সায়মন সাদিকরা। তাহলে শিল্পী সমতিতে যাবে কে। এফডফিসিতে যখন শুটিং চলবে তখন শিল্পীরা আসবেন শিল্পী সমিতিতে।

বর্তমান চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক ডিপজল দুজনেই লম্বা সময় ধরে দেশের বাইরে। অমিত হাসানের কথায় সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে।

অমিত হাসান বললেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে এখন গ্রহণযোগ্য কোনো নেতৃত্ব নেই। যাঁরা আছেন, তাঁরাও মাসের পর মাস দেশে নেই। এভাবে তো একটা সংগঠন চলতে পারে না। রাজ্জাক, আলমগীর, মান্না, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিজু আহমেদ, আহমেদ শরীফ, মাহমুদ কলির মতো অভিনয়শিল্পীরা একসময় নেতৃত্বে ছিলেন। আমরা ছিলাম, শাকিব ছিল—তখন দেখতাম, আমরা শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসা থাকলে অনেক শিল্পী আসতেন, দেখা করতেন। আড্ডা দিতেন। দেখা গেল, এফডিসিতে শুটিং করছেন, এক ফাঁকে খোঁজ নিতেন, সমিতিতে কে আছেন, তারপর দেখা করতেন। এই জিনিসগুলোর অভাব এখন এফডিসিতে শিল্পী সমিতিতে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বৃত্তি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা

এবার পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে না কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকার থেকে পাওয়া বইয়ে তারা পড়াশোনা করলেও প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষা থেকে তাদের দূরে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারকে বিব্রত করার ষড়যন্ত্র দেখছেন শিক্ষকেরা।

নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক পরিপত্রে এবার বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। কিন্তু কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী মহানগর শাখা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রিপন বলেন, “সারাদেশে প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। এরমধ্যে পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ৮ লাখ শিক্ষার্থী এবার বৃত্তি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। অথচ ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালের বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “এই শিক্ষার্থীরা একই বই পড়াশোনা করে। বই সরকারই দেয়। অথচ এবার তাদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। বৃত্তি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, এটি একটি শিক্ষার্থীর আত্মমর্যাদা ও অনুপ্রেরণার প্রতীক। কোনো শিশু শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের ধরন ভিন্ন হওয়ার কারণে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলে তা মানসিক আঘাত ও হতাশার সৃষ্টি করবে। এটি জাতীয় শিক্ষানীতির সাম্যের নীতির পরিপন্থী। আমি অবিলম্বে পরিপত্রটি বাতিল করে সবাইকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘‘২০২৩ ও ২০২৪ সালে বৃত্তি পরীক্ষা হয়নি। তার আগের পরীক্ষাগুলোতে অংশ নিয়ে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি অর্জনের হার প্রায় শতভাগ। এই কারণে এবার তাদের পরীক্ষায় সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটি পক্ষ। কারণ, কিন্ডারগার্টেনে ভাল পড়াশোনা হয় বলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী টানতে কিন্ডারগার্টেনকে বাদ দিয়ে শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সুযোগ দেওয়ার হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর নানা বিষয়ে আন্দোলন লেগেই আছে। আমার মনে হয়, এটাও একটা ষড়যন্ত্রের অংশ। কারণ, কিন্ডারগার্টেনে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তাদের বাদ দিলে আন্দোলন হতে পারে। সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে আমলাদের একটি গোষ্ঠী এ ষড়যন্ত্র করেছে বলে আমাদের ধারণা।’’

সংবাদ সম্মেলনের পর বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে সব শিক্ষার্থীকেই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আর আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও এবং ‘মার্চ ফর ঢাকা’সহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান আলী, রাজশাহী মহানগর সভাপতি রফিকুল আলম, সহ-সভাপতি ড. ইব্রাহিম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, সাংগাঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, অর্থ সম্পাদক এম এম রহমান, শিক্ষা সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক শিহাব উদ্দিন প্রমুখ।

ঢাকা/কেয়া/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ