বর্তমান বিশ্বের অনেক মানুষ শুষ্ক চোখ বা ‘ড্রাই আই’ সমস্যায় ভুগছেন। বর্তমানে আমাদের স্ক্রিন নির্ভর প্রফেশনাল কাজ অনেক বেড়ে গিয়েছে। ফলে শুষ্ক চোখের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চোখের শুষ্কতা দূর করতে চিকিৎসকেরা আর্টিফিশিয়াল টিয়ার প্রেসক্রাইব করেন। কিন্তু এমন একটি উপায়ও রয়েছে যে উপায়ে চিকিৎসা করালে আর্টিফিশিয়াল টিআর ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না।

ডা.

আশরাফুল হক, এমবিবিএস, এফসিপিএস, চক্ষু বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইন্সটিটিউট একটি পডকাস্টে বলেন, চোখ শুকিয়ে যাওয়াকে Meibomine Gland Dysfunction বলা হয়ে থাকে। দেখা যায় যে স্ক্রিনের অনেক সময় কাজ করার পরে চোখ লাল হয়ে যায়। কারও চোখ খচখচ করতে পারে বা মনে হতে পারে চোখের ভেতর কিছু বিঁধে আছে।’’

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘এই সমস্যা সমাধানে আমরা কৃত্রিম চোখের পানি প্রেসক্রাইব করি। অনেক রোগীকে এই কৃত্রিম চোখের পানি বছরের পর বছর ব্যবহার করতে হয়। Lipiview এর মাধ্যমে আমরা পরীক্ষা করে দেখি যে চোখের পানি যে গ্লান্ডগুলোর মাধ্যমে আসে, সেগুলো কি কাজ করছে কিনা। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়। যদি দেখি যে গ্লান্ডগুলো ঠিক মতো কাজ করছে না, তখন Lipflow মেশিনের মাধ্যমে আমরা কৃত্রিম তাপ বা ম্যাসাজিং করি চোখের পাতায়। তার ফলে যে গ্লান্ড থেকে চোখের পানি নিঃস্মরণ হচ্ছে সেটি স্বাভাবিক হয়ে যায়। তখন কৃত্রিম টি আর দেওয়ার প্রয়োজন থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে রোগী ১ থেকে দুই বছর এমনকি সারাজীবন বেশ ভালো থাকেন।’’

আরো পড়ুন:

গরমে শিশুর শরীরে কি ময়েশ্চারাইজার দিতে হবে

তীব্র দাবদাহে শরীর সুস্থ রাখতে কী কী খাবেন

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় পুরস্কার পাওয়া রাব্বীর তৎপরতায় উদ্ধার হয়েছিল ৪৯টি পদ্মগোখরা

২০২০ সালের ১২ আগস্ট নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার এক গ্রামে ঘটেছিল অদ্ভুত এক ঘটনা। ওই দিন শাহাদত হোসেন নামের এক ব্যক্তি অবৈধভাবে ৪৯টি বিষধর পদ্মগোখরা সাপ আটকে রেখেছিলেন। অপ্রশিক্ষিত কারও কাছে এতগুলো সাপ থাকায় গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে প্রচণ্ড আতঙ্ক। বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয় পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী। তিনি দ্রুত যোগাযোগ করেন বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সঙ্গে। বিভাগের কর্মকর্তারা গিয়ে সাপগুলো উদ্ধার করে সংরক্ষিত স্থানে ছেড়ে দেন। এতে আতঙ্কমুক্ত হয় গ্রামবাসী।

এই একটি ঘটনা নয়, ফজলে রাব্বীর কর্মকাণ্ডে প্রাণ পেয়েছে বহু বন্য প্রাণী। শিকারিদের কবল থেকে তিনি উদ্ধার করেছেন ৯ হাজারের বেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, ৫টি হনুমান, ৮২টি সাপ, ১টি শকুন, ৫টি বেজি, ১টি মেছো বিড়াল, ১৮টি বনবিড়াল, ১টি নেপালি ইগল, ৫টি দেশি ইগল, ২৮টি কাছিম ও ২টি ময়ূর। এ ছাড়া উদ্ধার করেছেন বন্য প্রাণী শিকারির ৩৫০টি ফাঁদ ও জাল।

পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরিতে ফজলে রাব্বী রোপণ করেছেন ৩০ হাজার গাছ, বিতরণ করেছেন ১ লাখ ৩০ হাজার লিফলেট ও মাইকিং করেছেন ১৮০ বার।
নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর হাজীপাড়ার বাসিন্দা ফজলে রাব্বীর বয়স ৩২ বছর। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি পরিবেশ ও বন্য প্রাণী রক্ষায় কাজ করে আসছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের (বিবিসিএফ) প্রচার সম্পাদক। পরিবেশ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে ২০২৫ সালের বন্য প্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

২৫ জুন ঢাকায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

ফজলে রাব্বী বলেন, ‘নলডাঙ্গা পুরোপুরি বন্য প্রাণীর জন্য নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত আমার কাজ চলবে।’ তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিবেশ সচেতন করতে গড়ে তুলেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সবুজ বাংলা’।

গ্রামের শিশুসহ নানা বয়সের নারী-পুরুষ এই সংগঠনের সদস্য। হালতি বিলসহ আশপাশের যেকোনো জায়গায় বন্য প্রাণী বিপদে পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে খবর পান ফজলে রাব্বী। ছুটে যান ঘটনাস্থলে।

নেপালী একটি অসুস্থ ঈগলকে নলডাঙ্গার হালতি বিল থেকে উদ্ধার করে ফজলে রাব্বী ও তাঁর সহকর্মীরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ