ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে গত বৃহস্পতিবার রাতে পুশইনের (ঠেলে পাঠানো) চেষ্টা করেছে ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। এ খবর পেয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সীমান্তে জড়ো হন স্থানীয়রা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে রাত জেগে পাহারা দেয় জনতা। এ নিয়ে সীমান্তে উদ্বেগ-উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায় বিএসএফ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বিমানবন্দরের পাশের গেটের কাছে প্রায় ১৫০ ভারতীয় নাগরিককে জড়ো করা হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি জানার পর বিজিবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি সতর্কতা অবলম্বন করে। রাতভর টহল জোরদার করে।

অন্য একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে ৭৫০ নারী-পুরুষকে পুশইন করতে জড়ো করে বিএসএফ। খবর পেয়ে সতর্ক অবস্থান নেয় বিজিবি। তখন স্থানীয় মসজিদগুলোতে মাইকিং করা হয়। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদের মাইকে ঘোষণা শুনে সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর, নলঘরিয়া, মেরাসানী, নোয়াবাদী সীমান্তে কয়েকশ লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়। অনেকে ফেসবুকে লাইভে এসে লোকজনকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান। কয়েকশ লোক জড়ো হলে পিছু হটে বিএসএফ।
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিজিবির টহল তৎপরতা বেড়ে গেলে সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় কয়েকটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। 

এ ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো.

আতাউল্লাহ রাত ৩টা ৩৩ মিনিটে ফেসবুকে সিঙ্গারবিল ইউনিয়নে যাদের যা কিছু আছে, তা নিয়ে সীমান্তে চলে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বিজিবিকে সহায়তা করার অনুরোধ করেন।

নোয়াবাদী গ্রামের আনিস মিয়া ও নলগড়িয়া গ্রামের ফজলুল হক জানান, বিজিবির টহল তৎপরতা বেড়ে গেলে সীমান্ত এলাকায় গ্রামবাসীর মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় কয়েকটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। এটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ঘটে। এর পরপর ফেসবুকে ঘটনাস্থলের ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধনা ত্রিপুরা বলেন, ‘সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। পুশইনের চেষ্টার খবরে জনগণ বিজিবির সঙ্গে থেকে প্রতিহত করেছে। এখনও সতর্ক অবস্থানে আছেন সবাই।’

২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাব্বার আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে আমরা সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি। বিএসএফ পুশইন করবে বলে খবর আসে। এ অবস্থায় বিজিবি সতর্ক অবস্থান নেয়। পাশাপাশি স্থানীয় জনতা সীমান্তে জড়ো হয়। এখন পর্যন্ত এ সীমান্ত দিয়ে কোনো অনুপ্রবেশ ঘটেনি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে।’
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারতের নানা রাজ্যে অনুপ্রবেশকারী খোঁজার অভিযান শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারীদের আটক করা হয়। এদের অনেককে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। ফিরে আসার পর অনেকে নির্যাতনের অভিযোগও করছেন। ৪ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের পাঁচ জেলার সীমান্ত দিয়ে ৩১৮ জনকে ঠেলে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪ মে মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১০ জন, ৭ মে খাগড়াছড়ি ও সাতক্ষীরা দিয়ে যথাক্রমে ৬৬ ও ৭৮, মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৭, ৮, ১৪ ও ১৫ মে ১৪৮ এবং ১৪ মে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়।

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম ন ত এল ক পর স থ ত ব এসএফ সতর ক অবস থ মসজ দ প শইন

এছাড়াও পড়ুন:

সীমান্তে পুশইনের খবরে রাতে মসজিদে মাইকিং, বিজিবির টহল জোরদার

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পুশইন করতে পারে এমন আশঙ্কায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তের সিংগারবিল ইউনিয়নের নলগড়িয়া ও নোয়াবাদী এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। 

ভারতীয় নাগরিকদের বিএসএফের পুশইনের খবরে রাতে স্থানীয় মসজিদে মাইকিং করে লোকজনদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অনুপ্রবেশ ঘটেনি বলে নিশ্চিত করে বিজিবি জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

জানা গেছে, আগরতলা বিমানবন্দরের পাশের গেটের কাছে প্রায় ১৫০ জন ভারতীয় নাগরিককে জড়ো করা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি রাতজুড়ে সীমান্তে টহল জোরদার করে।

নোয়াবাদী গ্রামের আনিস মিয়া ও নলগড়িয়া গ্রামের ফজলুল হক জানান, বিজিবির টহল তৎপরতা বেড়ে গেলে সীমান্ত এলাকায় গ্রামবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় কয়েকটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘটনাস্থলের ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে, যা আরও আতঙ্ক বাড়িয়ে দেয়।

২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাব্বার আহমেদ বলেন, বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে আমরা সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় নাগরিকদের পুশইনের আশঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি নিয়ে ওই এলাকায় টহল জোরদার করা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবার বিজয়নগর সীমান্তে ‘ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা’, বিজিবি–জনতার তৎপরতায় পিছু হটল বিএসএফ
  • সীমান্তে পুশইনের খবরে রাতে মসজিদে মাইকিং, বিজিবির টহল জোরদার
  • পুশইন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজিবি-বিএসএফ উত্তেজনা
  • জানুয়ারি থেকে মার্চে রাজনৈতিক সংঘাতে ৬৭ জন নিহত
  • জানুয়ারি থেকে মার্চে রাজনৈতিক সংঘাতে ৬৭ জন নিহত 
  • সিলেট সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ, বিজিবির হাতে আটক
  • ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি আটক
  • কানাইঘাট দিয়ে ১৬ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
  • সিলেট সীমান্তে ১৬ নারী-শিশুকে ‘পুশ ইন’ করল বিএসএফ