সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ১০ দিন রিমান্ড চায় পুলিশ
Published: 23rd, June 2025 GMT
দিনের ভোট রাতে করাসহ প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার ১০ দিন রিমান্ড চায় পুলিশ।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের কাছে এই আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নূরুল হুদাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের ওপর আজ বিকেলে শুনানি হবে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা) তৈরি করে নূরুল হুদাকে হেনস্তার পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গতকাল রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক তাঁকে বের করে আনেন, জুতার মালা পরিয়ে দেন। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ জানায়, বিএনপির করা একটি মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বিএনপি গতকাল মামলাটি করে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায়। এই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেছে বিএনপি। সেই মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুনসাবেক তিন সিইসিসহ ২৪ জনকে আসামি করে বিএনপির মামলার আবেদন২২ জুন ২০২৫নূরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাকালে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোটে আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখার অভিযোগ রয়েছে, যা পরে রাতের ভোট নামে পরিচিতি পায়।
আরও পড়ুন‘মব’ তৈরি করে সাবেক সিইসিকে হেনস্তার পর পুলিশে সোপর্দ১৮ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে জামায়াত-বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ২০
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসলামপুর-হরিপুর কবি ফজের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয় চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপি–সমর্থিত মাসুদুর রহমান, রহমত উল্লাহ, গোলাম মোস্তফা ও ইমদাদুর রহমান, জামায়াত–সমর্থিত শামীম হোসাইন, মুক্তার বিশ্বাস, সফর আলী, তোতা মিয়া, জহুরুল ইসলামসহ ১৫ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় চার মাস আগে ইসলামপুর-হরিপুর কবি ফজের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য চার সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে আহ্বায়ক হন জামায়াত–সমর্থিত জহুরুল ইসলাম। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের বিরোধ তৈরি হয়। আজ সকালে বর্তমান আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বিদ্যালয়ে গেলে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, কয়েক দিন আগে অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটিতে জহুরুল ইসলাম সভাপতি নির্বাচিত হন। এ নিয়ে জামায়াত ও বিএনপির কর্মীরা বিবাদে জড়ান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী কমিটি গঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে কমিটির অনুমোদন করা হয়েছে।
জামায়াত–সমর্থিত আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সব পক্ষ মিটিং করে অ্যাডহক কমিটি হয়েছে। প্রথম দিন আমরা স্কুলে গেলে তারা বাধা দেয়। আজ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় এবং তারই জেরে এই মারামারি।’
এ বিষয়ে মহারাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান আলী বলেন, স্কুলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হতে পারে, এমন আশঙ্কায় তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে ছুটে যান মীমাংসা করার জন্য। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলার সময় জহুরুল, তাঁর ভাইসহ তাঁদের সমর্থকেরা তাঁদের লোকজনকে মারধর শুরু করেন। তাঁরা ভোর থেকেই লাঠি, রামদা নিয়ে স্কুলে বসে ছিলেন। বর্তমান যে আহ্বায়ক, তাঁর তো কোনো বৈধতা নেই।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি এবং থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।