পুরো একটি প্রজন্ম সুষ্ঠু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ছাড়াই বেড়ে উঠেছে: আসিফ মাহমুদ
Published: 23rd, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময় দেশের মানুষ অধিকার হারিয়ে ফেলেছিল। তারা সাধারণ মানুষকে নির্বিচার গ্রেপ্তার ও বিচারবহির্ভূত হত্যায় মেতে উঠেছিল। ১৬ বছরের শাসনামলে তারা ন্যূনতম গণতন্ত্রের ধার ধরেনি। কোনো প্রকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ছাড়া তারা ক্ষমতায় ছিল। পুরো একটি প্রজন্ম কোনো প্রকার সুষ্ঠু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা ছাড়াই বেড়ে উঠেছে।
আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানে কমনওয়েলথ চার্টারবিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন আসিফ মাহমুদ।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেশের তরুণেরা জীবন উৎসর্গ করেছেন বলে উল্লেখ করেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে স্বৈরাচার দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। বাক্স্বাধীনতার বিলোপ ও মানুষের সব অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। তারা দেশের অর্থ বিদেশে পাচারসহ গুরুতর সব অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল।
স্বৈরাচারী আমলে দেশের তরুণরা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী ছিলেন বলে মন্তব্য করেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, স্বৈরাচার দেশের তরুণদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সব ধরনের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। কিন্তু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তরুণেরা স্বৈরাচারী কাঠামো ভেঙে নতুন যুগের সূচনা করেছেন। তরুণদের সাহস ও ত্যাগের মাধ্যমে এই নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখা সম্ভব হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গৃহীত সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ আর কখনো গণতন্ত্র নিয়ে আপস করবে না বলে মন্তব্য করেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে পড়া এই রাষ্ট্র পুনর্গঠনে কাজ করছে। সরকার গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশন একগুচ্ছ প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। কমিশনগুলো দেশের সব স্তরের অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছে। সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সরকার ১২১টি প্রস্তাবকে চিহ্নিত করেছে, যেগুলো দ্রুত সময়ে বাস্তবায়নযোগ্য।
জুলাই সনদে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, জুলাই সনদের মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধশীল ভবিষ্যতের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। গণ-অভ্যুত্থানে তরুণদের দেখা স্বপ্ন এই সনদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সব অংশীদার ও তরুণদের সঙ্গে নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে উল্লেখ করেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, তাঁরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি সমৃদ্ধিশালী ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এসব বাস্তবতাকে সামনে রেখে আজকের ওয়ার্কশপটি শুধু সময়োপযোগীই নয়, তরুণদের দক্ষ করে তুলতে এটা অপরিহার্য ভূমিকা রাখবে।
কমনওয়েলথ চার্টারকে সম্মিলিত বিশ্বাসের একটি মৌলিক দলিল হিসেবে অভিহিত করেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, এই চার্টার আইনের শাসন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে তুলে ধরে। এটি একটি নৈতিক কম্পাস, যা ৫৬টি সদস্যরাষ্ট্রকে একই লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যায়। ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়া তরুণেরা এর মাধ্যমে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারবে।
কমনওয়েলথ চার্টার ওয়ার্কশপটি বাংলাদেশের তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে শেখাবে বলে আশা প্রকাশ করেন কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল লুইস গ্যাব্রিয়েল ফ্রান্সেসচি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণেরা ইতিমধ্যে এমন কিছু করেছেন, যা গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়া তরুণেরা জয়ীদের অন্তর্ভুক্ত।
কমনওয়েলথ চার্টার ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়া তরুণেরা প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ নিজ অঞ্চলের মানুষকে সেবা দেবে বলে আশা করেন লুইস ফ্রান্সেসচি। তিনি বলেন, তরুণেরা এমন বিশ্ব গড়তে সহায়তা করবে, যেখানে সবাই সবার সহযোগী।
তরুণদের বিশ্বের পরিবর্তক হিবেসে বর্ণনা করেন লুইস ফ্রান্সেসচি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও পরিবর্তিত হচ্ছে। আপনি আজকে কী করছেন, সেটা মুখ্য নয়। বরং ৩০ বছর পর কী করবেন, সেটাই মুখ্য। সেই কর্মের ওপর আপনার পরিবার ও দেশ আপনাকে নিয়ে গর্ব করবে। কখনোই কাউকে ঘৃণা করা যাবে না। বরং ভালোবাসা দিয়ে জয় করতে হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ শ র তর ণ গণতন ত র প রক শ তর ণ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পিআর পদ্ধতি আনতে চাইলে জনগণের কাছে যান: ফারুক
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, “পিআর পদ্ধতি আনতে চাইলে জনগণের কাছে যান, নির্বাচিত হয়ে সংসদে যান, সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করুন, তারপর সংবিধান পরিবর্তন করে পিআর পদ্ধতি চালু করুন।”
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আরো পড়ুন:
এনসিপি পাবে ১৫০ আসন, তবে বিএনপি ৫০-১০০ এর বেশি পাবে না
যশোরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে পেট্রোল পাম্প দখলচেষ্টার অভিযোগ
তিনি বলেন, “গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের মানুষ বুঝে ফেলেছে-নির্বাচন মানেই আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। কিন্তু সেই ভোটকে মৃত ব্যক্তির ভোট দিয়ে জালিয়াতি করেছে শেখ হাসিনা। এখন তিনি দিল্লিতে বসে দোসরদের দিয়ে বাংলাদেশে চক্রান্ত চালাচ্ছেন।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় আওয়ামী দোসর কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা যাবে না। হাসিনার প্রেত্মাতারা এখনো সচিবালয়ে বসে আছে। তাই আমাদের দাবি-আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে যারা ২০১৪ সালে ‘কুকুরের উপস্থিতিতে’, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে এবং ২০২৪ সালে দিনের ভোট রাতেই করেছেন, সেই প্রেত্মাতারা যেন কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না হতে পারে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “আপনাকে আমরা একজন সৎ ও দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে জানি। অনুরোধ থাকবে-আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচন পরিচালনায় যেন কোনোভাবেই আওয়ামী প্রেত্মাতারা, যারা অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তারা দায়িত্ব পালন করতে না পারে। এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।”
গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ওবাদুর রহমান টিপুর সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলামসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/রায়হান/এসবি