কমনওয়েলথ সনদে অন্তর্নিহিত মূল্যবোধ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

সোমবার (২৩ জুন) রাজধানীর লেক সোর হাইটস হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ‘কমনওয়েলথ চার্টার’ বা সনদবিষয়ক একটি দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

কমনওয়েলথ ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে এ কর্মশালায় ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার শতাধিক যুব প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের সদস্য ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অংশ নেন।

আরো পড়ুন:

স্থানীয় সরকার বিভাগের দুই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত 

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “কমনওয়েলথ সনদ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন ও আইনের শাসনের প্রতি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর যৌথ প্রতিশ্রুতি। এটি বিশ্বের ৫৬টি দেশের ২.

৫ বিলিয়নের বেশি মানুষের জন্য একটি নৈতিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “গত ১৬ বছরে দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া, সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের সীমাহীন লুটপাট হয়েছে। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জিম্মি করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞসহ অংশীজনদের সাথে ব্যাপক পরামর্শের ভিত্তিতে ১২১টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রক্রিয়া নির্ধারণে কাজ করছে এবং ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।”

আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে গণতন্ত্র কখনো সংকুচিত হবে না, নাগরিক অধিকার, স্বাধীনতা ও মর্যাদা চিরস্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকবে। কমনওয়েলথ সনদের মূল্যবোধ সম্পর্কে জানার মাধ্যমে আমাদের তরুণ প্রজন্ম একটি কার্যকর ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম, কমনওয়েলথের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর লুইস ফ্রান্সিস এবং মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা ও অংশীজন।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, কমনওয়েলথ সনদের আদর্শ তরুণদের মূল্যবোধপূর্ণ নেতৃত্ব গঠনের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এক নীতির বাংলাদেশ হবে, বিদেশি কোনো প্রভু থাকবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এই বাংলাদেশ হবে এক নীতির বাংলাদেশ। সবার আগে বাংলাদেশ। বিদেশি কোনো প্রভু থাকবে না, বন্ধু থাকবে। এই বাংলাদেশ তাবেদারমুক্ত থাকবে।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া বিজয় র‍্যালি-পূর্ব সমাবেশে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রাজধানী ঢাকায় এই ‘বিজয় র‍্যালি’ করেছে বিএনপি। এতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই ঐক্য হবে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য হবে আমাদের শক্তি। এই শক্তিকে সমুন্নত রেখে এই জাতিকে শীর্ষ উচ্চতায় নিয়ে যাব। সমৃদ্ধির শিখরে নিয়ে যাব। আমাদের শক্তি হবে আমাদের ঐক্য।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে তাঁরা কোনো বিভেদ চান না। যারা বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। যারা নির্বাচনের বিপক্ষে কথা বলছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। যারা ঐক্য ভঙ্গের চেষ্টা করছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে, গণতন্ত্রের সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে সংস্কারের সঙ্গে সবাই মিলে এগিয়ে যেতে হবে। এই রাষ্ট্রকে পৃথিবীর বুকে সমৃদ্ধি ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে।

শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যখনই দেশে গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা হয়েছে, তখনই জনগণ তা প্রতিহত করেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যার পক্ষে ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, ‘অতি দ্রুত আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করবে বলে আশা করছি।’ তবে নির্বাচন ঠেকাতে বিরোধী শক্তি ষড়যন্ত্র করছে বলেও মনে করেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে যেন কেউ ষড়যন্ত্র না করতে পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

জুলাই ঘোষণাপত্রে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নাম না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা আব্বাস। সমাবেশে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নাম না থাকার বিষয়টি তাঁকে পীড়া দিয়েছে। এরপরও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করার কারণে স্বাগত জানান তিনি।

সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে, মাথা নত করেনি।

র‍্যালি-পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।

আরও পড়ুননির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমানতা কেটে গেছে: সালাহউদ্দিন আহমদ১৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলও কি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে
  • জাতীয় পার্টির সম্মেলন কাল, ইসির প্রতিনিধি চেয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে
  • যুক্তরাষ্ট্রে এখনই যে রাজনীতি দরকার
  • অন্তর্বর্তী সরকারের ১২ সাফল্য তুলে ধরলেন প্রেস সচিব
  • রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়: তারেক রহমান
  • এক নীতির বাংলাদেশ হবে, বিদেশি কোনো প্রভু থাকবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • ঐক্যবদ্ধ থাকুন, মুখ দেখাদেখি যেন বন্ধ না হয়: তারেক
  • আমার জুলাই সনদ
  • গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র‍্যালি, নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা
  • ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা ঐতিহাসিক, গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম করবে: বিএনপি