রোমাঞ্চকর এক শেষ দিনের প্রতিশ্রুতি দিয়েই শেষ হলো হেডিংলি টেস্টের চতুর্থ দিনে খেলা। প্রথম টেস্টটা জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে যেতে ইংল্যান্ডকে শেষ দিনে করতে হবে ৩৫০ রান। প্রতিপক্ষ ভারতের দরকার ১০ উইকেট। রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তির বিজ্ঞাপন তো দিচ্ছে হেডিংলি টেস্ট।

ভেন্যুর নাম হেডিংলি আর রান তাড়া করা দলের নাম ইংল্যান্ড না হলে ম্যাচ জয়ে ভারতকেই ফেবারিট মানা যেত। কিন্তু এই ইংল্যান্ড যে অন্য দল। ‘বাজবল’টা খেললেই তো হয়, ৯০ ওভারে তো মোটে ৩৫০ রান!

দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬৪ রানে অলআউট হয়ে ইংল্যান্ডকে ৩৭১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে ভারত। বিনা উইকেটে ২১ রান তুলে চতুর্থ দিন শেষ করে ব্যবধানটা ৩৫০ রানে নামিয়ে এনেছে ইংল্যান্ড।

হেডিংলিতে যদিও ৩৭১ রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া করে টেস্ট জয়ের উদাহরণ মাত্র একটিই। ১৯৪৮ সালে ৪০৪ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সে সময়ের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে ইংল্যান্ডে ৩০০ রানের বেশি তাড়া করে টেস্ট জয়ের যে ছয়টি উদাহরণ আছে তার পাঁচটিই আবার হেডিংলিতে। ইংল্যান্ড শেষ দিনে ষষ্ঠ উদাহরণ গড়তে পারবে কি না প্রশ্ন সেটিই।

ইংল্যান্ড অবশ্য টেস্টে ৩৭১ রানের বেশি তাড়া করে জিতেছে একবারই। ২০২২ সালে এজবাস্টনে ভারতকেই ৩৭৮ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে হারিয়েছিল ইংলিশরা।

এর আগে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসটা গড়ে উঠেছে লোকেশ রাহুল ও ঋষভ পন্তের সেঞ্চুরিতে। রাহুল করেছেন ১৩৭। আর ম্যাচে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়া ঋষভ পন্ত করেছেন ১১৮ রান। ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি পাওয়া পন্ত এবার আর ডিগবাজি দেননি।

ভারত আজ দ্বিতীয় দিনটা শুরু করেছিল ২ উইকেটে ৯০ রান নিয়ে। প্রথম ইনিংসে ৬ রানের লিড নেওয়া দলটি সপ্তম বলে হারিয়ে ফেলে অধিনায়ক শুবমান গিলকে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা গিল এবার ফিরেছেন ৮ রানে।

এরপরই পন্ত-রাহুলের ১৯৫ রানের জুটি। এই ম্যাচের দ্বিতীয় ও টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি পাওয়া পন্তের বিদায়ে ভাঙে জুটি। ১৪০ বলে ১৫ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৮ রান করেছেন পন্ত। পন্ত সেঞ্চুরি পাওয়ার আগেই টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি পেয়ে যান রাহুল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পর রাহুল ১৮ চারে ২৪৭ বলে করেছেন ১৩৭ রান। ব্রায়ডন কার্সের বলে রাহুল যখন বোল্ড হলেন, ভারতের স্কোর ৩৩৩/৫।

এরপর ফিরে গেছেন সাত বছর টেস্টে ফেরা করুণ নায়ারও। প্রথম ইনিংসে রান না পেলেও এবার ২০ রান করেছেন নায়ার।

প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে শেষ ৭ উইকেট হারানো ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ৩১ রানে হারিয়েছে শেষ ৬ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোরভারত: ৪৭১ ও ৯৬ ওভারে ৩৬৪ (রাহুল ১৩৭, পন্ত ১১৮, সুদর্শন, ৩০, জাদেজা ২৫*; টাং ৩/৭২, কার্স ৩/৮০, বশির ২/৯০)।
ইংল্যান্ড: ৪৬৫ ও ৬ ওভারে ২১/০ (ক্রলি ১২*, ডাকেট ৯*)।
(৪র্থ দিন শেষে).

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম ইন ৩৫০ র ন কর ছ ন লক ষ য উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ