এইচএসসিতে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পেতে হলে কী করবে
Published: 26th, June 2025 GMT
প্রিয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী, বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় তোমাকে অবশ্যই ভালো করে পরীক্ষা দিতে হবে। কারণ, বাংলা বিষয়ে এ+ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। তাই সে সুযোগ তোমাকে গ্রহণ করতে হবে। ব্যাকরণ অংশে ৩০ ও নির্মিতি অংশে ৭০ নম্বর মিলে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পাওয়া নির্ভর করবে ব্যাকরণ ও নির্মিতি দুই অংশের প্রশ্নের উত্তর যথাযথভাবে লেখার ওপর। তাই যথাযথভাবে লেখার সঠিক নিয়মগুলো জেনে নাও।
ব্যাকরণ অংশ—নম্বর ৩০: উত্তর দিতে হবে ছয়টি প্রশ্নের
১ নম্বর প্রশ্ন: বাংলা উচ্চারণের নিয়ম, থাকবে পাঁচ নম্বর
বাংলা উচ্চারণের নিয়ম অংশে দুটি প্রশ্ন থাকবে, যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
একটি প্রশ্নে ‘অ’-ধ্বনি, ‘এ’-ধ্বনি, ‘ব’-ফলা, ‘ম’-ফলা বা ‘য’-ফলার উচ্চারণের যেকোনো পাঁচটি নিয়ম লিখতে বলবে। আরেকটি প্রশ্নে আটটি শব্দ দেওয়া থাকবে, সেখান থেকে যেকোনো পাঁচটি শব্দের শুদ্ধ উচ্চারণ লিখতে হবে। এ ক্ষেত্রে শব্দের উচ্চারণ সঠিকভাবে লিখতে পারলে সে প্রশ্নের উত্তর করাই ভালো, তা না হলে উদাহরণসহ উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম লেখতে হবে।
২ নম্বর প্রশ্ন: বাংলা বানানের নিয়ম, থাকবে পাঁচ নম্বর
বাংলা বানানের নিয়ম অংশে দুটি প্রশ্ন থাকবে, যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। একটি প্রশ্নে বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানানের (তৎসম শব্দ/অর্ধতৎসম শব্দ) পাঁচটি নিয়ম লিখতে বলবে। আরেকটি প্রশ্নে ভুল বানানের আটটি শব্দ দেওয়া থাকবে, সেখান থেকে যেকোনো পাঁচটি শব্দের শুদ্ধ বানান লিখতে হবে। এ ক্ষেত্রে শব্দের শুদ্ধ বানান লেখাই বেশি যুক্তিসংগত।
৩ নম্বর প্রশ্ন: ব্যাকরণিক শব্দ শ্রেণি, থাকবে পাঁচ নম্বর
বাংলা ভাষার ব্যাকরণিক শব্দ শ্রেণি অংশে ব্যাকরণিক শব্দ শ্রেণির শ্রেণিবিভাগ, বিশেষ্য, বিশেষণ, ক্রিয়াপদ এবং আবেগ শব্দের শ্রেণিবিভাগ-সম্পর্কিত একটি বর্ণনামূলক প্রশ্ন থাকবে। এর বিকল্প প্রশ্ন হিসেবে থাকবে প্রদত্ত অনুচ্ছেদ থেকে উক্ত ব্যাকরণিক শব্দ শ্রেণি নির্দেশকরণ। এ ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ থেকে ব্যাকরণিক শব্দ শ্রেণি নির্ণয় করাই উত্তম। লিখতে হবে কম, কিন্তু সঠিক হলে পুরো নম্বর পাবে।
৪ নম্বর প্রশ্ন: বাংলা শব্দ গঠন, থাকবে পাঁচ নম্বর
বাংলা শব্দ গঠন অংশে উপসর্গ থেকে উপসর্গের সংজ্ঞা, শ্রেণিবিভাগ ও প্রয়োজনীয়তা-বিষয়ক একটি বর্ণনামূলক প্রশ্ন থাকবে এবং বিকল্প প্রশ্ন হিসেবে থাকবে ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয়। শুধু এই প্রশ্নের ক্ষেত্রেই নয়, বরং ব্যাকরণ অংশের সব প্রশ্নের ক্ষেত্রেই সময় ও বেশি নম্বর পাওয়ার দিক বিবেচনায় বর্ণনামূলক প্রশ্নের উত্তর করার চেয়ে ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় করা প্রশ্নের উত্তর করাই সবচেয়ে ভালো।
৫ নম্বর প্রশ্ন: বাক্যতত্ত্ব অংশ, থাকবে পাঁচ নম্বর
বাক্যতত্ত্ব অংশে বাক্য, সার্থক বাক্যের বৈশিষ্ট্যগুলো ও বাক্যের শ্রেণিবিভাগ থেকে বর্ণনামূলক একটি প্রশ্ন থাকবে এবং এর বিকল্প প্রশ্ন হিসেবে থাকবে বাক্যান্তরকরণ। অর্থাৎ নির্দেশনা অনুযায়ী এক ধরনের বাক্যকে অন্য ধরনের বাক্যে রূপান্তর করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাক্যান্তর যথাযথভাবে করতে পারলে পূর্ণ নম্বর পাওয়া যাবে।
৬ নম্বর প্রশ্ন: বাংলা ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ, থাকবে পাঁচ নম্বর
বাংলা ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগ অংশে কোনো একটি অনুচ্ছেদে শব্দ ও বাক্যের অশুদ্ধ ও অপপ্রয়োগ দূর করে শুদ্ধ প্রয়োগ করতে হবে। এর বিকল্প প্রশ্ন হিসেবে আটটি ভুল বাক্য দেওয়া থাকবে, সেখান থেকে যেকোনো পাঁচটি অশুদ্ধ বাক্যকে শুদ্ধ করতে হবে। বাংলা ভাষার অপপ্রয়োগ ও শুদ্ধ প্রয়োগের বিভিন্ন উদাহরণ আগে থেকেই অনুশীলন করলে এ অংশে পূর্ণ নম্বর পাওয়া যাবে।
নির্মিতি অংশ—নম্বর ৭০: উত্তর দিতে হবে ছয়টি প্রশ্নের
৭ নম্বর প্রশ্ন: বঙ্গানুবাদ/পারিভাষিক শব্দ, থাকবে ১০ নম্বর
নির্মিতি অংশের শুরুতেই ১০ নম্বরের জন্য একটি ইংরেজি অনুচ্ছেদের বঙ্গানুবাদ করতে বলবে অথবা ১০টি ইংরেজি শব্দের পারিভাষিক রূপ লিখতে বলবে। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষার ওপর যদি তোমার যথেষ্ট দখল না থাকে, তাহলে বঙ্গানুবাদ উত্তর দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ, ইংরেজি ভাষার ওপর ভালো দক্ষতা ছাড়া সার্থক ভাবানুবাদ করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে পারিভাষিক শব্দ প্রশ্নের উত্তর করাই ভালো। নির্ভুল বানানে প্রদত্ত শব্দগুলোর বাংলা পরিভাষা লিখতে পারলে পূর্ণ নম্বরই পাবে।
৮ নম্বর প্রশ্ন: দিনলিপি/প্রতিবেদন, থাকবে ১০ নম্বর
‘দিনলিপি’ লিখন থেকে একটি, ‘প্রতিবেদন’ লিখন থেকে একটি করে মোট দুটি প্রশ্ন থাকবে, নম্বর ১০। যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ‘দিনলিপি’ লিখন আইটেমটি তোমাদের জন্য একেবারেই নতুন। এ জন্য অনেকেরই এর ধরন-গড়ন বা রীতিনীতি সম্পর্কে সম্যক ধারণার অভাব রয়েছে। এ ক্ষেত্রে মনে রেখো, একটি বিশেষ দিন তুমি কীভাবে পার করলে, অর্থাৎ ওই দিনে তুমি কী কী করলে, তার ধারাবাহিক বর্ণনা জানতে চাওয়া ‘দিনলিপি’ লিখনের মূল উদ্দেশ্য নয়, বরং উদ্দেশ্য হলো ওই একটি দিনকে কেন্দ্র করে তোমার চিন্তাচেতনা, স্বপ্ন-কল্পনা, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সময়-সমাজ, ইতিহাস-ঐতিহ্য, ধর্ম-বিজ্ঞান-দর্শন-মনস্তত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়কে তুমি কীভাবে তোমার লেখায় তুলে আনতে পারলে, ওই দিনের ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে এগুলোকে কীভাবে সম্পৃক্ত করতে পারলে। যদি মনে করো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগপর্যন্ত তুমি যা যা করলে তা-ই দিনলিপি, তাহলে তোমার দিনলিপি লেখার দরকার নেই।
দিনলিপির বিকল্প হিসেবে থাকবে প্রতিবেদন লিখন। ইংরেজি ‘Report writing’-এর পারিভাষিক রূপ হলো ‘প্রতিবেদন লিখন’। আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা, বিষয় বা প্রসঙ্গ সম্পর্কে নির্মোহ, নিরপেক্ষভাবে তথ্যমূলক বিবৃতি লিখনকেই বলে প্রতিবেদন লিখন। বিষয় ও বৈচিত্র্য অনুসারে প্রতিবেদন বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। মূলত সাধারণ প্রতিবেদন বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন ও সংবাদ প্রতিবেদন লিখতে বলা হয়।
সাধারণত আমরা যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকি, সেই প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা, বিষয় বা প্রসঙ্গ সম্পর্কে যে প্রতিবেদন লিখতে হয়, সেটিই প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বা সাধারণ প্রতিবেদন। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব অনুষ্ঠানাদি হয়ে থাকে, যেমন বার্ষিক বিজ্ঞান মেলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বিতর্ক উৎসব, নবীনবরণ, বর্ষবরণ, বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদ্যাপন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিদায় অনুষ্ঠান, মিলাদ মাহফিল, বইমেলা ইত্যাদি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, অর্থাৎ অধ্যক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদনই সাধারণ প্রতিবেদন বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন।
১.
২. আবেদনপত্রের ওপরের বাঁ দিকে তারিখ, এরপর কর্তৃপক্ষের পদবি-ঠিকানা, এরপর বিষয় ও সূত্র বা স্মারক নম্বর লিখতে হয়। (কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত চিঠির নম্বরই সূত্র বা স্মারক নম্বর)।
৩. আবেদনপত্রের শেষে নিচের বাঁ দিকে শিক্ষার্থীর নাম-ঠিকানা (প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত নাম-ঠিকানা) লিখতে হয়।
৪. পরে শিরোনামসহ মূল প্রতিবেদন লিখতে হয়।
৫. মূল প্রতিবেদনের প্রথম অনুচ্ছেদটি 5W + 1H সূত্র ব্যবহার করে লিখতে হয়। অর্থাৎ
W= What (কী ঘটছে/ঘটেছে)
W= Where (কোথায় ঘটছে/ঘটেছে)
W= When (কখন ঘটছে/ঘটেছে)
W= Who (কারা এর সঙ্গে জড়িত/সংশ্লিষ্ট)
W= Why (কেন ঘটছে/ঘটেছে)
H= How (কীভাবে ঘটছে/ঘটেছে)
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর একত্র করে শিক্ষার্থী প্রথম অনুচ্ছেদটি লিখবে।
৬. প্রথম অনুচ্ছেদের পর একাধিক অনুচ্ছেদে ধারাবাহিকভাবে পুরো বিষয়টি বর্ণনা করতে হবে।
৭. মূল প্রতিবেদন লেখা শেষে বিনীত নিবেদক, ইতি, প্রতিবেদক এই কথাগুলো লেখা যাবে না।
৮. সাধারণ প্রতিবেদন বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখায় কোনো খাম দিতে হয় না। তবে প্রতিবেদন লেখা শেষে প্রতিবেদক ও প্রতিবেদন-সম্পর্কিত একটি তথ্যছক দেওয়া যেতে পারে।
অন্যদিকে নাগরিক জীবনের বিভিন্ন সমস্যা, কোথাও ঘটে যাওয়া জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা, দুর্ঘটনা বা বিষয় প্রসঙ্গ সম্পর্কে তথ্যমূলক বিবৃতি তুলে ধরে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করাই সংবাদ প্রতিবেদনের লক্ষ্য। এ ক্ষেত্রে আমরা হয়ে যাই কোনো পত্রিকার সাংবাদিক, অর্থাৎ নিজস্ব সংবাদদাতা বা স্টাফ রিপোর্টার বা নিজস্ব প্রতিবেদক বা কোনো জেলা বা থানা প্রতিনিধি। একজন রিপোর্টার হিসেবে সংবাদপত্রে প্রকাশ উপযোগী করে এ ধরনের প্রতিবেদন লিখতে হয়।
১. সংবাদ প্রতিবেদন লিখতে সম্পাদক বা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনপত্র লিখতে হয় না।
২. শিরোনাম (হেডলাইন) দিয়ে প্রতিবেদন লেখা শুরু করতে হয়। হেডলাইন লেখার কতগুলো রীতি আছে। যেমন হেডলাইনের ফন্ট সাইজ সাধারণ লেখার ফন্ট সাইজ থেকে একটু বড় হয়, মূল প্রতিবেদনের ওপরে মাঝখান বরাবর লিখতে হয়। এ ক্ষেত্রে অন্য রঙের কালি ব্যবহার করলে ভালো।
৩. এরপর ডেটলাইন লিখতে হয়। প্রতিবেদকের নাম বা পদবি, প্রতিবেদন লেখার স্থান ও প্রতিবেদন লেখার তারিখ—এই তিন তথ্যকে একত্রে ডেটলাইন বলে।
৪. ডেটলাইনের পর ইন্ট্রো বা প্রথম পরিচ্ছেদ লিখতে হয়। 5W +1H সূত্র ব্যবহার করে দারুণভাবে প্রথম অনুচ্ছেদটি লেখা যায়।
৫. প্রথম অনুচ্ছেদের পর একাধিক অনুচ্ছেদে ধারাবাহিকভাবে বিষয়টি বর্ণনা করতে হবে।
৬. মূল প্রতিবেদন লেখা শেষে প্রতিবেদকের নাম, পদবি, বিনীত নিবেদক, ইতি—এসব লেখা যাবে না।
৭. প্রতিবেদন লেখা শেষে খাম দিতে হবে না।
৮. সংবাদ প্রতিবেদন লিখনে প্রতিবেদককে অবশ্যই নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিক হতে হবে। সংবাদ প্রতিবেদনে ভালো করতে হলে গাইড বই ছেড়ে দৈনিক কোনো পত্রিকার রিপোর্ট মনোযোগ দিয়ে পড়বে।
৯ নম্বর প্রশ্ন: বৈদ্যুতিন চিঠি/আবেদনপত্র, থাকবে ১০ নম্বর
বৈদ্যুতিন চিঠি থেকে একটি ও আবেদনপত্র থেকে একটি করে মোট দুটি প্রশ্ন থাকবে, যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
ইতিপূর্বে ইংরেজি বিষয়ে ই-মেইল লিখলেও বাংলা বিষয়ে ই-মেইল বা বৈদ্যুতিন চিঠি তোমাদের জন্য এই প্রথম। যদিও ইংরেজি ই-মেইল ও বাংলা বৈদ্যুতিন চিঠির মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তোমরা জানো, ই-মেইলের দুটি প্রধান ও দুটি অপ্রধান অংশ থাকে। প্রধান অংশ দুটির একটি হচ্ছে ইউজার বা ব্যবহারকারীর নাম (user name) এবং অন্যটি হচ্ছে ই-মেইল সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের নাম। যেমন জিমেইল (Gmail), ইয়াহু (Yahoo), হটমেইল (Hotmail)। অপ্রধান অংশ দুটি হচ্ছে @ চিহ্ন ও ‘com’—এ দুটি অংশের মধ্যে ‘@’ চিহ্নটি ব্যবহারকারীর নামের পরে এবং ‘com’ সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের নামের শেষে লিখতে হয়, যেমন [email protected]। বৈদ্যুতিন চিঠি লেখার সময় খেয়াল রাখতে হবে বৈদ্যুতিন চিঠিটির ভাষা যেন সহজ-সরল, প্রাঞ্জল ও বোধগম্য হয়, যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত হয়, বাহুল্যবর্জিত হয়। মনে রাখবে, যতি বা বিরামচিহ্নের ব্যবহার যাতে যথার্থ হয়, বানানের বিশুদ্ধতা থাকে এবং আবেগের মাত্রাজ্ঞান থাকে। জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো বৈদ্যুতিন চিঠি অনেক সময় একাধিক ব্যক্তির কাছে পাঠাতে হয়। সে ক্ষেত্রে CC বা BCC-তে তাদের ঠিকানাও লিখতে হয়।
বৈদ্যুতিন চিঠির সঙ্গে কোনো অতিরিক্ত লেখা বা ছবি সংযুক্ত করতে হলে attach files লেখা অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ফাইল থেকে তা আপলোড করতে হয়। এক/দেড় পৃষ্ঠার মধ্যে একটি বৈদ্যুতিন চিঠি চমৎকারভাবে লেখা যায়।
বৈদ্যুতিন চিঠির বিকল্প থাকবে আবেদনপত্র। তোমরা হয়তো জানো, বিভিন্ন বিষয় বা প্রসঙ্গে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন ধরনের আবেদনপত্র লিখতে হয়। আবেদনপত্রের মূল বিষয় হলো, তুমি যে বিষয়ে আবেদন করছ, সেটি তথ্য-উপাত্তের সাহায্যে যুক্তিগ্রাহ্য করে উপস্থাপন করতে হবে। অর্থাৎ তোমার আবেদনপত্রটি পড়ে কর্তৃপক্ষ যেন সন্তুষ্ট হন এবং তিনি যেন তোমার আবেদনটি গ্রহণ করতে সম্মত হন, এমনভাবে লিখতে হবে। আবেদনপত্র এক পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ করতে হবে বা শুধু বাঁ পৃষ্ঠায় লিখতে হবে, এ ধরনের কোনো নিয়ম নেই। উত্তরপত্রের যেকোনো পৃষ্ঠায় আবেদনপত্র লেখা যায় এবং পত্রের বক্তব্য যে কয় পৃষ্ঠা ডিমান্ড করে, সে কয় পৃষ্ঠাই লেখা যাবে। বিষয় ও বৈচিত্র্য অনুসারে দুই থেকে আড়াই পৃষ্ঠার মধ্যে একটি সার্থক আবেদনপত্র লেখা যায়। অনেক সময় কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে চাকরির আবেদনপত্র লিখতে বলা হয়। সে ক্ষেত্রে এক পৃষ্ঠার মধ্যে ফরমাল একটি আবেদনপত্র এবং পরের পৃষ্ঠাগুলোয় তোমরা সিভি বা জীবনবৃত্তান্ত লিখবে। জীবনবৃত্তান্ত লেখার আধুনিক রীতি-পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারলে ভালো। এরপর পেনসিল দিয়ে খাম বা ইনভেলপ এঁকে তার ডান দিকে প্রাপকের ঠিকানা ও বাঁ দিকে প্রেরকের, অর্থাৎ তোমার ঠিকানা লিখবে। মনে রেখো, যেকোনো ধরনের পত্রের অপরিহার্য অংশ হচ্ছে ইনভেলপ বা খাম।
১০ নম্বর প্রশ্ন: সারাংশ বা সারমর্ম/ভাবসম্প্রসারণ, থাকবে ১০ নম্বর
সারাংশ/সারমর্ম থেকে একটি ও ভাবসম্প্রসারণ থেকে একটি করে মোট দুটি প্রশ্ন থাকবে, যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, নম্বর ১০।
আমরা জানি, গদ্য রচনার অন্তর্নিহিত বক্তব্যকে সংক্ষেপে লেখার নাম সারাংশ এবং কাব্য ভাষায় লেখা কোনো রচনার মূলভাবকে সংক্ষেপে লেখার নাম সারমর্ম। সারাংশ ও সারমর্ম লেখায় বিশেষ দক্ষতা থাকলে এখান থেকে উত্তর করাই উত্তম। কারণ, খুব অল্প সময়ে ১০ নম্বরের একটি প্রশ্নের উত্তর করা যায় এবং বাকি সময়টা অন্য প্রশ্নের উত্তর লেখায়, বিশেষ করে প্রবন্ধ লেখার সময় ব্যবহার করা যায়। তবে সারাংশ ও সারমর্ম লেখায় পারঙ্গমতা না থাকলে হুট করে এর উত্তর করতে যাওয়া ঠিক হবে না। কারণ, সারাংশ ও সারমর্ম লেখার বেশ কিছু রীতি-পদ্ধতি আছে। যেমন—
১. সারাংশ ও সারমর্ম লিখনের উদ্দেশ্য হলো কোনো একটি উদ্ধৃতি পড়ে তার মূল সুরটি ধরতে পারা এবং স্বল্প কথায়, শব্দ ব্যবহারের পারঙ্গমতার মাধ্যমে সেই মূলকথা তুলে ধরা। কাজেই এখানে ব্যাপক বা বিস্তৃত লেখার কোনো সুযোগ নেই। তাই সারাংশ ও সারমর্মের আয়তন দুই বা তিন বাক্যের বেশি হবে না। এদের মধ্যে প্রথম বাক্যটিতে সাধারণত কোনো দার্শনিক তত্ত্ব বা সত্য প্রকাশ পায় এবং অবশিষ্ট বাক্য প্রথম বাক্যের সহযোগী হিসেবে থাকে।
২. সারাংশ ও সারমর্মে সব প্রকার বাহুল্য বর্জনীয়, অর্থাৎ মূল উদ্ধৃতির সব উদাহরণ, উপমা, উদ্ধৃতি, পরিসংখ্যান, তথ্য-উপাত্ত, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ইত্যাদি পুরোপুরি বাদ দিতে হয়।
৩. কোনোক্রমে একই ভাবের পুনরাবৃত্তি করা যায় না এবং নতুন কোনো ভাবের অবতারণাও করা যায় না।
৪. সারাংশ ও সারমর্ম সাধারণত ভাববাচ্যে বা পরোক্ষ ভঙ্গিতে লিখতে হয়। সরাসরি প্রত্যক্ষ ভঙ্গিতে উত্তম পুরুষ ব্যবহার করে লেখা যায় না।
৫. সারাংশ ও সারমর্মের ভাষায় কোনো ধরনের কাব্যধর্মিতা রাখা যায় না, ভাষা হতে হয় দ্ব্যর্থহীন ও আবেগবর্জিত।
৬. সারাংশ ও সারমর্ম লেখার সময় নিজস্ব বক্তব্য, মন্তব্য বা মতপ্রকাশের কোনো সুযোগ নেই।
সারাংশ ও সারমর্মের বিকল্প প্রশ্ন হিসেবে থাকবে ভাবসম্প্রসারণ। চিন্তাশীল কবি ও সাহিত্যিকদের কোনো কোনো বক্তব্যের মধ্যে গভীর কোনো ভাব, দর্শন বা তত্ত্ব নিহিত থাকে। ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ ভাবসত্যকে সহজবোধ্য করে তোলার নামই ভাবসম্প্রসারণ। ভাবসম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রেও কতগুলো রীতিনীতি মেনে চলতে হয়। যেমন—
১. যে উক্তি বা অংশের ভাবসম্প্রসারণ করতে হবে, তা ভালোভাবে পড়ে মূলভাবটি উদ্ঘাটন করতে হবে।
২. ভাবসম্প্রসারণকে প্রধানত তিনটি অংশে বিভক্ত করা যায়, যথা প্রথম অংশে ভাবের অর্থ, দ্বিতীয় অংশে ভাবের ব্যাখ্যা এবং তৃতীয় অংশে ভাবের তাৎপর্য। তাই ভাবসম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিনটি অনুচ্ছেদ করতে হয়। তবে প্রয়োজনে আরও অধিক অনুচ্ছেদ হতে পারে।
৩. যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ভাবটিকে বিশ্লেষণ করতে হয়। অর্থাৎ প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দিতে হয়, বিভিন্ন বিষয় বা প্রসঙ্গের সঙ্গে তুলনা করতে হয়। মূলভাবটি কোনো রূপক বা প্রতীকের আড়ালে থাকলে তা স্পষ্ট করতে হয়। প্রয়োজনে সংক্ষিপ্ত কোনো উদ্ধৃতি দেওয়া যেতে পারে।
৪. ভাবসম্প্রসারণের বাক্যগুলো যাতে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকে এবং একই কথার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়।
৫. ভাবসম্প্রসারণে আলাদা কোনো শিরোনাম দরকার হয় না এবং প্রদত্ত অংশের রচয়িতার নাম উল্লেখ করতে হয় না।
৬. উত্তরের কলেবরে কোনো সুনির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। ভাবটি যথার্থভাবে সম্প্রসারিত হওয়ামাত্রই উত্তর শেষ করতে হয়। তবে ২৫০ থেকে ৩০০ শব্দের মধ্যে বা আড়াই থেকে তিন পৃষ্ঠার মধ্যে একটি ভালো মানের ভাবসম্প্রসারণ লেখা যায়।
৭. ভাবসম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে মূলভাব, সম্প্রসারিত ভাব, মন্তব্য—এই শিরোনামগুলো লেখার প্রয়োজন নেই।
১১ নম্বর প্রশ্ন: সংলাপ/খুদে গল্প, থাকবে ১০ নম্বর
‘সংলাপ’ থেকে একটি এবং ‘খুদে গল্প’ রচনা থেকে একটি করে মোট দুটি প্রশ্ন থাকবে, যেকোনো একটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে, নম্বর ১০।
ইংরেজি ‘Dialogue’-এর বাংলা প্রতিশব্দ সংলাপ। সংলাপ হলো দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে কথোপকথন বা আলাপচারিতা বা মতবিনিময়। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে সংলাপ লিখন পাঠ্য করার উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা যেন তাদের কল্পনাশক্তি প্রয়োগ করে কাল্পনিক কিছু চরিত্রের মধ্যে কথোপকথনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোনো বিষয় সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক তথ্য পাঠকের সামনে তুলে ধরতে পারে। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর নাট্য রচনার গুণেরও বিকাশ সাধন সম্ভব। সেই সঙ্গে উক্ত বিষয়ের সামগ্রিক দিক, অর্থাৎ তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো কথোপকথনের মধ্য দিয়ে তুলে ধরে নেতিবাচকতাকে দমন করে ইতিবাচকতার জাগরণ ঘটানোর প্রয়াস চালানো হয়। সমসাময়িক কোনো বিষয় নিয়ে শিক্ষক-ছাত্র বা দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ হতে পারে, পিতা ও পুত্রের মধ্যেও সংলাপ হতে পারে। দুর্দান্ত সংলাপ লিখতে হলে প্রথমেই একটি চরিত্রকে উক্ত বিষয় সম্পর্কে অধিক তথ্যসমৃদ্ধ ও ইতিবাচক হিসেবে ধরতে হবে এবং অন্য চরিত্রটি উক্ত বিষয় সম্পর্কে কম তথ্যসমৃদ্ধ ও অনেকটা নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। এরপর উভয়ের মধ্যে উক্ত বিষয় নিয়ে কথোপকথন শুরু হবে। উভয়ের যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে উক্ত বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে এবং কম তথ্যসমৃদ্ধ নেতিবাচক চরিত্রটি ইতিবাচকে পরিণত হবে। নাটকের গঠনবৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকলে দারুণ সংলাপ রচনা করা যায়।
অন্যদিকে বিকল্প প্রশ্ন হিসেবে ‘খুদে গল্প’ রচনার জন্য কোনো ঘটনার সূত্রপাত দেওয়া হতে পারে অথবা কোনো বিষয় বা প্রসঙ্গ উল্লেখ থাকতে পারে। যেটাই থাকুক না কেন, তোমাকে ছোটগল্পের মতো করে কাহিনিটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কাহিনির প্রয়োজনে চরিত্র সৃষ্টি, সংলাপের মধ্য দিয়ে চরিত্রগুলো বিকাশ, কাহিনির অতৃপ্তিসূচক সমাপ্তি এবং সুন্দর একটি শিরোনাম ‘খুদে গল্প’ লেখার জন্য অপরিহার্য বিষয়। এ ছাড়া গল্পের বিষয়বস্তু বা ভাববস্তুও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সৃজনশীল লেখালেখিতে যাদের পূর্বাভিজ্ঞতা নেই, তাদের পক্ষে হঠাৎ একটি ‘খুদে গল্প’ লেখা দুরূহ ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে সংলাপ লিখনে যাওয়াই ভালো।
১২ নম্বর প্রশ্ন: প্রবন্ধ লিখন, থাকবে ২০ নম্বর
পাঁচটি বিষয় থেকে যেকোনো একটি বিষয়ে প্রবন্ধ লিখতে হবে।
নৈতিকতা ও মূল্যবোধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জাতীয় চেতনা, শিল্প ও অর্থনীতি এবং সাম্প্রতিক বিষয়—এগুলোর ওপর ভিত্তি করে পাঁচটি প্রবন্ধ থাকবে। রচনা ও প্রবন্ধের মধ্যে কিন্তু অনেক পার্থক্য। ওপরের শ্রেণিগুলোয় তুমি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রচনা লিখেছ, এখন লিখতে হবে প্রবন্ধ। অর্থাৎ তত্ত্ব, তথ্য, শব্দ চয়ন, বাক্য গঠন, ভাষাশৈলী, উপস্থাপনা, বিষয়বস্তুর গভীরতা, প্রাসঙ্গিকতা—এসব উঁচু মার্গের হতে হবে। সস্তা দরের কথাবার্তা, অপ্রাসঙ্গিক তথ্য, পৃষ্ঠা ভরার প্রবণতা ইত্যাদি প্রবন্ধের ক্ষেত্রে কাম্য নয়। বিষয় ও বৈচিত্র্য অনুসারে প্রবন্ধের বিভিন্ন অংশের শিরোনাম, উপশিরোনাম দেওয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, একটি প্রবন্ধের নম্বর ২০। কাজেই মানসম্পন্নভাবে একটি প্রবন্ধ লেখার চেষ্টা করবে।
লেখক: মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, প্রভাষক, সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ও স রমর ম ল খ প রবন ধ ল খ ব যবহ র কর প রবন ধ র অর থ ৎ ত প রসঙ গ প রথম অ প রদত ত বন ধ র র কর ই ন ল খত ত তর ক চর ত র পর ক ষ র জন য তত ত ব র ওপর রচন র র করত ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় আজ বসছে সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী
উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ ছাত্রী। সারাদেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে।
আজ প্রথম দিনে সাধারণ ৯ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ হাজার ৬০৫ কেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা হবে। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন ৪৫৯টি কেন্দ্রে আলিমের কোরআন মাজিদ এবং কারিগরি বোর্ডের অধীন ৭৩৩টি কেন্দ্রে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) পরীক্ষা নেওয়া হবে। সব বোর্ডের প্রথম দিনের পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়।
ঢাকা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৯১ হাজার ২৪১, রাজশাহীতে ১ লাখ ৩৩ হাজার ২৪২, কুমিল্লায় ১ লাখ ১ হাজার ৭৫০, যশোরে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ ও চট্টগ্রামে ১ লাখ ৩৫ জন। এ ছাড়া বরিশালে পরীক্ষার্থী ৬১ হাজার ২৫, সিলেটে ৬৯ হাজার ৬৮৩, দিনাজপুরে ১ লাখ ৩ হাজার ৮৩২ এবং ময়মনসিংহে ৭৮ হাজার ২৭৩ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজার ১০২ জন। কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯ হাজার ৬১১ জন।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির গতকাল সমকালকে বলেন, করোনা ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার মুহূর্তেই এবার পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিয়ে তারা অত্যন্ত সতর্ক। পাশাপাশি প্রশ্ন ফাঁস ও নকল প্রতিরোধেও সবাই তৎপর। স্বাস্থ্যবিধিসহ সব নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, সেগুলো তদারকি করার জন্য বোর্ডের একাধিক টিম কাজ করবে।
স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে কড়াকড়ি
পরীক্ষার কেন্দ্রে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে মেডিকেল টিম রাখার পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়ানো ও কেন্দ্রের সামনে যেন জটলা না থাকে, তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কেন্দ্রের অভ্যন্তর ও আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং পরীক্ষা শুরুর আগে মশক নিধন ওষুধ স্প্রে করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পরীক্ষা বিলম্বে শুরু হলে যত মিনিট পরে শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের ততটুকু সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।