এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও অনুপস্থিত বেশি
Published: 26th, June 2025 GMT
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মতো এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। পরীক্ষার প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার মোট ১৯ হাজার ৭৫৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। গত বছর এ পরীক্ষায় প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিলেন ১৫ হাজার ২০৩ পরীক্ষার্থী।
সারা দেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন। এবার মোট পরীক্ষার্থী গতবারের চেয়ে ৮১ হাজারের বেশি কমেছে। তিন বছরের মধ্যে এবারই পরীক্ষার্থী সবচেয়ে কম। এ ছাড়া দুই বছর আগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির পর রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করেও সোয়া চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষা দিচ্ছেন না।
প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আজ এইচএসসির বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ১৪ হাজার ৫১৩ জন। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন কোরআন মাজিদ বিষয়ের পরীক্ষায় ৪ হাজার ১৯৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীন বাংলা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫০ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।
অবশ্য কী কারণে এসব পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এ ছাড়া অসদুপায়ের জন্য প্রথম দিন ৪৩ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুনএসএসসিতে অনুপস্থিতির বড় কারণ বাল্যবিবাহ ১৬ জুন ২০২৫গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও তুলনামূলক অনুপস্থিতি বেশি ছিল। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এই পরীক্ষার প্রথম দিনে অনুপস্থিত ছিল ২৬ হাজার ৯২৮ পরীক্ষার্থী। অথচ গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিল ১৯ হাজার ৩৫৯ পরীক্ষার্থী। এসএসসি পরীক্ষায় নিজেদের বোর্ডের অধীন পরীক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধান করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ৬ হাজার ৩৮৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৩৫০ জন অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর তথ্য পাওয়া যায়। তথ্য পাওয়া এসব পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৪১ শতাংশের (৫৪৯) বিয়ে হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৯৭ শতাংশই ছাত্রী। ৩ শতাংশ ছেলে পরীক্ষার্থী বিয়ে করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুপস্থিতির প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ। এ ছাড়া পারিবারিক অসচ্ছলতার জন্য কর্মক্ষেত্রে যোগ দেওয়া, অসুস্থতা, প্রস্তুতি ভালো না থাকাসহ নানা কারণে বাকিরা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
এইচএসসি পরীক্ষা দেখতে আজ রাজধানীর ভাষানটেক সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সবাই সচেতন থাকলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না। কেউ গুজব ছড়ালেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিবারই হুমকি থাকে, এবারও আছে। তবে এসএসসি পরীক্ষার মতো এইচএসসি পরীক্ষাতেও তাঁরা তৎপর আছেন।
আরও পড়ুনএইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা দিচ্ছেন না সোয়া ৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ১৭ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন পর ক ষ র থ ন পর ক ষ র থ পর ক ষ য় প প রথম দ ন বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আবরার বলেছেন, “আমরা এসএসসি পরীক্ষার মতো এবারও তৎপর আছি। আশা করি, প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না। কেউ গুজব ছড়ালেও আমরা ব্যবস্থা নেব।”
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “আমি কেন্দ্র ঘুরে দেখলাম, সব পরীক্ষার্থী মাস্ক পরে এসেছে; সবাই নিরাপদ দূরত্বে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। ডেঙ্গুর বিষয়েও আগে থেকেই আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালিয়েছি। সব মিলিয়ে ডেঙ্গু-করোনা নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি ভালো। ফলে এ নিয়ে ভয়ের বা শঙ্কার কিছু দেখছি না।”
আরো পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু বৃহস্পতিবার
এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে পরীক্ষার্থীদের অবস্থান
কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে গাড়ি প্রবেশ ও অভিভাবকদের জটলা করতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেগুলো ঠিকঠাক মানা হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি সচিবালয় থেকে এখানে এসেছি। খুব বেশি জটলা বা ঝামেলা দেখিনি।”
“যদিও আমি পরীক্ষা শুরুর পর এসেছি। তবে এটা সত্য যে, সব নিয়ম মানানো যাচ্ছে না। আমরা ধীরে ধীরে এগুলো নিয়ে কাজ করব। আশা করি সামনে আরো ভালো পরিস্থিতি হবে।”
তিনি বলেন, “নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসহ এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সারা দেশের ৯৩০০ প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।”
এবার ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তত্ত্বীয় এই পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট, ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে সাংদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “প্রশ্নপত্র দেখার সুযোগ আমার হয়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে, কেউ বলবে প্রশ্নপত্র ভালো হয়েছে, আবার কেউ বলবে খারাপ হয়েছে। এটা তাদের বোঝাপড়া এবং প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে। আমরা যেটা নিশ্চিত করতে পারি তাহলো, প্রশ্নপত্রের মান ঠিকঠাক রাখা।”
উপদেষ্টা আবরার বলেন, “সমস্যা যেটা হচ্ছে, এটার জন্য পরবর্তীকালে আরো কি করা যাবে সেগুলো নিয়েও আমরা ভাবব। কিন্তু ব্যবস্থাগুলো অতীতের থেকে ইম্প্রুভ করেছে তার পরেও সমস্যা থাকছে। সবকিছু নিরসন করা হঠাৎ করে সম্ভব হবে না। এগুলো নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে।”
ঢাকা/আসাদ/সাইফ