যুক্তরাষ্ট্রের নিউ‍ইয়র্ক নগর কাউন্সিলের প্রাথমিক নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শাহানা হানিফ বিজয়ী হয়েছেন। তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী মায়া কর্নবার্গকে পরাজিত করেছেন।

গত মঙ্গলবার নির্বাচন শেষে নিউ‍ইয়র্ক নগরের বোর্ড অব ইলেকশন শাহানাকে বিজয়ী ঘোষণা করে। সাধারণত নিউইয়র্ক নগরে ডেমোক্রেট প্রার্থীরাই জয়লাভ করেন। আগামী ৪ নভেম্বর চূড়ান্ত নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনেও শাহানা হানিফ জয়লাভ করবেন বলে প্রত্যাশা তাঁর সমর্থকদের।

প্রাথমিক নির্বাচনে জয়ের পর শাহানা হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কঠিন একটি নির্বাচনে আমার ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। এই শহরকে সুন্দর করার জন্য তাঁরা মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন জোহানকে (ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী নির্বাচিত জোহরান মামদানি)। আমাদের লক্ষ্য এক। আমরা সুন্দর একটি নিউইয়র্ক সিটির স্বপ্ন দেখি। আমি আমার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সামর্থ্য অনুযায়ী এবং চাইল্ড কেয়ার নিয়ে আগের মতোই কাজ করে যাব। আমি চেষ্টা করব, আর কোনো মানুষ যেন এই শহর ছাড়তে বাধ্য না হয়।’

নিউইয়র্ক নগর ৫১টি ডিস্ট্রিক্ট নিয়ে গঠিত। তার একটিতে জয়লাভ করেছেন শাহানা হানিফ। প্রাথমিক নির্বাচনে বিজয়ের পর তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহানার জয় ব্রুকলিনের রাজনৈতিক চেতনায় একটি নতুন ঢেউ। এই নির্বাচনে ব্যাপক অর্থসংস্থানের বিপরীতে জয়লাভ করেছে তরুণ স্বেচ্ছাসেবক ও ছোট ছোট দাতাদের ঐক্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা জনগণ।’

আরও পড়ুননিউইয়র্কে ইতিহাস গড়া জোহরান কেন ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ দিলেন১২ ঘণ্টা আগে

শাহানা হানিফের বাবা মোহাম্মদ হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থেকে নিউইয়র্কে আসেন। প্রথমে কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসে থাকতেন, পরে কেনসিংটনে চলে যান।

শাহানার জন্ম ব্রুকলিনে। তিনি কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান ও নারী অধিকার বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। সেখানেই তাঁর রাজনৈতিক চেতনার বীজ রোপিত হয়। ২০২১ সালে ২৯ বছর বয়সে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলিম নারী হিসেবে নিউইয়র্ক নগরের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে ইতিহাস গড়লেন জোহরান মামদানি১৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ে কে এগিয়ে

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রার্থী বাছাই নির্বাচন আজ (২৪ জুন)। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থী বাছাই করা হবে। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে আটজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ৩৩ বছর বয়সী জোহরান মামদানি ও নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর মধ্যে। অপর দিকে রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কার্টিস সিলও।

মেয়র নির্বাচন নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। নিউ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ক্লাবের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আহনাফ আলম নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অ্যান্ড্রু কুমো প্রজ্ঞাবান রাজনীতিবিদ। তাঁর ৪০ বছরের পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। তিনি রাজ্যের গভর্নর ছিলেন, সেখান থেকে আরও নিচের অবস্থানে মেয়র নির্বাচন করছেন রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য।

আহনাফ আলম আরও বলেন, চার বছরের জন্য জীবনযাপন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন অ্যান্ড্রু কুমো। মানুষ তাঁর কথায় বিশ্বাস করছে। বিভিন্ন জনমত জরিপে তিনি এগিয়ে আছেন। ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতারা তাঁকে সমর্থন করছেন। তবে বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশির ভাগ মানুষ মামদানিকে ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছে।

ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে যুক্ত মৌমিতা আহমেদ। তিনি ২০২১ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মৌমিতা বলেন, নিউইয়র্কের তরুণ প্রজন্ম জোহরান মামদানির কথায় আস্থা পাচ্ছেন। তিনি সুলভ আবাসনব্যবস্থা, যাতায়াত, নিত্যপণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

জোহরান মামদানি অভিবাসী সমাজের উন্নয়নে কাজ করবেন, বিশেষ করে অভিবাসীদের ব্যাপক ধরপাকড় থেকে রক্ষা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। মুসলিম সম্প্রদায় তাঁর অন্যতম শক্তি। তিনি কতটা জনপ্রিয় তাঁর তহবিল সংগ্রহের পরিমাণ থেকেই বোঝা যায়। তিনি এ পর্যন্ত ৮ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছেন জনগণের মধ্য থেকে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক রানা আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এবারের প্রাথমিক নির্বাচনে আমেরিকান-বাংলাদেশি ভোটাররা একজন তরুণ ও উদ্যমী প্রার্থী হিসেবে মামদানিকে প্রায় একচেটিয়া ভোট দেবেন। কারণ, তাঁরা চাইবেন মামদানি মেয়র হলে অন্তত সহজে তাঁর কাছে যাওয়া যাবে, তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথাগুলো তুলে ধরতে পারবেন। তা ছাড়া মামদানির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে বার্ষিক বাড়িভাড়া কমানো ও বিনা মূল্যে বাসে যাতায়াতের সুবিধার কথা বলা হয়েছে।

অপর দিকে অ্যান্ড্রু কুমো বংশগত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা, বিশেষ করে করোনা মহারারিকালীন তাঁর ভূমিকা সারা যুক্তরাষ্ট্র সাড়া ফেলে দিয়েছিল। ভোটাররা সেই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিউইয়র্ক মূলত ডেমোক্র্যাটদের শহর। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলেছিলেন। তাতে রিপাবলিকান প্রার্থী হেরে গেলেও অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় তিনি বেশি ভোট পাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুননিউইয়র্ক সিটি কি একজন মুসলিমকে মেয়র নির্বাচিত করবে২১ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংগীতশিল্পী থেকে নিউইয়র্কের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি
  • ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ কেন ধন্যবাদ দিলেন জোহরান মামদানি
  • জোহরান মামদানির নিউইয়র্ক জয় যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিকে চাঙা করছে
  • নিউইয়র্কে ইতিহাস গড়া জোহরান কেন ‘বাংলাদেশি আন্টিদের’ ধন্যবাদ দিলেন
  • জোহরানকে ‘পাগল কমিউনিস্ট ও ভয়ংকর’ বলে বিদ্রুপ করলেন ট্রাম্প
  • ঠিকানা টিভিতে আসছে ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’
  • নিউইয়র্কে ইতিহাস গড়লেন জোহরান মামদানি
  • সাবেক গভর্নর কুমোর হার, নিউইয়র্কের সম্ভাব্য মেয়র মুসলিম তরুণ মামদানি
  • নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ে কে এগিয়ে