জুয়া খেলা নিয়ে হাতাহাতির এক পর্যায়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ব্যবসায়ী নজরুলকে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার দুপুরে এসব তথ্য জানান গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার দুইজন হলেন- গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের হোসেন মন্ডল পারার রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেন (২২) ও একই এলাকার ইসমাইল মোল্লা ঝড়ু (২০)। গত শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তারের পর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে গত সোমবার (২৩) জুন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় নজরুল বেপারী (৩২) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। দৌলতদিয়া যৌনপল্লী সংলগ্ন মুক্তি মহিলা সমিতির অফিসের সামনে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত নজরুল বেপারী গোয়ালন্দ উপজেলার ঈমানখান পাড়ার মৃত শাহাজউদ্দিন বেপারীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দৌলতদিয়া যৌনপল্লী এলাকায় একটি দোকান চালিয়ে আসছিলেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যারহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। গত শুক্রবার দুইজনকে গ্রেপ্তান করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জুয়া খেলা নিয়ে হাতাহাতির এক পর্যায়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে ব্যবসায়ী নজরুলকে বলে জানান তারা।

এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান ওসি রাকিবুল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ লতদ য় নজর ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইলিশ চুরি: দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এবং একজন মাছ ব্যবসায়ী জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা পরিবারের সদস্যরা।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চর মহিউদ্দিন এলাকার ওয়াপদা নতুন স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। 

আরো পড়ুন:

মন্দির থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি চুরি, ওসি প্রত্যাহারসহ ৭ পুলিশ বরখাস্ত

বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়ে নিহত

ফেইসবুক থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা যায়, দুই শিশুকে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের হাতে দুইটি ইলিশ মাছ। 

ভুক্তভোগীদের পরিবার জানায়, গত রবিবার রাতে স্থানীয় জেলে জয়নাল খার নির্দেশে নতুন স্লুইসগেটে নৌকায় করে নদীতে মাছ ধরতে যায় দুই শিশু। স্লুইস ঘাটে তারা নৌকায় রাত্রিযাপন করে। পরদিন সকালে ইমরান ও কাইয়ুম প্যাদা দুই শিশুকে ধরে নতুন স্লুইস বাজারে নিয়ে যান। সেখানে ইমরান বয়াতির গদির ১০ পিস ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগ তুলে দুই শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটান ইউপি সদস্য হাসান সরদার। পরে হাত-পা বেঁধে রাস্তায় ফেলে সূর্যের দিকে তাক করিয়ে রাখা হয় তাদের। পরে হাতে ইলিশ মাছ দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিশু বলে, “রাতে আমরা নৌকায় ঘুমায় ছিলাম। সকালে আমাদের নৌকা থেকে ধরে নিয়ে যায় বাজারে। সেখানে হাত-পা বেঁধে আমাকে মারধর করেছে হাসান সরদার। পরে রাস্তায় বসিয়ে হাতে মাছ দিয়ে ছবি তুলছে।”

ভুক্তভোগী শিশুর নানা বলেন, “সোমবার সকাল ৮টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি নাতি ও আরেক শিশুকে হাত-পা বেঁধে রোদে শুইয়ে রেখেছে। তাদের হাতে মাছ দিয়ে ছবি তুলছে। প্রতিবাদ করলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেন ইউপি সদস্য হাসান সরদার। পরে ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা দাবি করে। আমি গরিব মানুষ বলে অনুরোধ করলে আমাকে ৫ হাজার টাকা দিতে বলে। আমি দশদিন সময় চাইলে তারা সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে আমাদের ছেড়ে দেয়। বাসায় এসে দেখি নাতির দুই পা ফুলে কালো হয়ে গেছে। এভাবে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।” 

তিনি বলেন, “আমার নাতি ছোট থেকে আমার কাছে বড় হয়েছে। তার দুই বছর বয়সের সময় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে অনেক কষ্ট করে তাকে বড় করছি। এ ঘটনার বিচার চাইতে ও সাংবাদিকদের জানানোর কারণে অভিযুক্ত হাসান সরদার ও তার সহযোগীরা আমাদের গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে।”

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হাসান সরদার বলেন, “ওদের কাউকে মারধর করা হয়নি। ইমরানের গদির ১০ পিচ ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগে দুইজনকে ধরে আনলে আমিও ছিলাম সেখানে। শিশুর স্বজনদের মাছের টাকা দিয়ে দিতে বলি। তাদের কাছে টাকা ছিলো না তাই সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখা হয়েছে। দুইজনকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করি।” 

মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি বলেন, “রাতে গদি থেকে মাছ চুরি হয়। এজন্য দুইজনকে ধরে আনি। তারা দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে পারে এ কারণে হাত-পা বেঁধে রাখছিলাম। চোর তাই গদির মাছ হাতে দিয়ে ছবি তোলা হয়েছে।” 

তাদের পুলিশে না দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে কেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “এরকম চুরি তারা আরো করছে। স্থানীয়ভাবে সালিশ করা হয়েছে সবসময়।” 

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশাদুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইলিশ চুরি: দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ