নদীটা আবারও গিলে খেল আমাদের ভিটেমাটি, বাবার সারা জীবনের সম্পদ
Published: 28th, June 2025 GMT
হাতিয়ার তমরদ্দি বাজারের কাছেই ছিল আমাদের বাড়ি। হেঁটে বাড়ি থেকে নদীর পাড়ে যেতে ঘণ্টাখানেক লাগত। কিন্তু বড় হতে হতে দেখলাম মেঘনা নিজেই আমাদের বাড়ির কাছে চলে এসেছে! একসময় এলাকার সবাই বুঝে ফেলল কিছুদিনের মধ্যেই নদীটা গিলে খাবে তাদের ভিটেমাটি। আমার বাবাও উপায়ান্তর না দেখে নতুন জায়গা খোঁজা শুরু করলেন। তখন সুবর্ণচর লাগোয়া হাতিয়ার মূল ভূখণ্ডে সদ্য একটা চর জেগে উঠছে। ২০০৫ সালে নতুন চরে একখণ্ড জায়গা নিলেন বাবা। বছর চারেক পরে আদি ভিটা ছেড়ে আমরা একেবারে স্থানান্তরিত হলাম নতুন চরে, নতুন ভিটায়।
তখন আমি সদ্য এইচএসসি পাস করা তরুণ। জন্মভিটা, ছোটবেলার বন্ধু, আত্মীয়স্বজন, উঠানভরা স্মৃতি ছেড়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়েছিল। তবু বুকে স্বপ্ন নিয়ে নতুন জায়গায় গেলাম। নতুন মানুষদের আপন করে নিতে থাকলাম। চরে আরও অনেক নদীভাঙা মানুষ এসে বসত গড়ল। দুঃখে–সুখে আমরা আপন হলাম।
নতুন বাড়ি থেকে নদী প্রায় ১৫ কিলোমিটার। কিন্তু বছর পাঁচেক যাওয়ার পরই সেই চরেও শুরু হলো ভাঙন। গত বছর নদীর ভাঙন এসে থামল আমাদের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে। এই নতুন চরে মানুষগুলো নতুন জীবন শুরু করেছিল। তাদের ঘরে তেমন একটা অভাবও ছিল না। প্রত্যেকের ছিল চাষের জায়গা, নিজস্ব পুকুর এবং বড় বাড়ি। কিন্তু মানুষগুলো আজ অন্যের জায়গায় মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমরাও আবার নতুন জায়গার খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করলাম। পেলামও একটা জায়গা। ভাঙন শুরুর আগে সেখানেই চলে গেলাম। এটাই যেন চরের মানুষের নিয়তি।
এ মাসে নদী আমাদের বাড়িটা ভেঙেছে। ভিটার সঙ্গে শেষ হয়ে গেল আমার বাবার সারা জীবনের অর্জিত সম্পদ। আমাদের শেষ হয়ে গেল হাজারো জমানো স্মৃতি। সদ্য হারানো বাড়িতে আমি নতুন জীবনের শুরু করেছি, কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছি। আমাদের হাজারো দুঃখ–কষ্টের জীবন্ত সাক্ষী আজ নদীগর্ভে।
আরও পড়ুনসব হারিয়ে যেভাবে ‘মেয়ে হামিদাকে’ পেয়েছেন নাটোরের অলোকা ভৌমিক২১ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র ব ড় নত ন জ
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিন কি আজও ট্রাম্পকে অপেক্ষায় রাখবেন?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে জানিয়েছিলেন, শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের ‘প্রথম দুই মিনিটের’ মধ্যেই তিনি জানতে পারবেন যে রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করার ব্যাপারে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে, আরো আগেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত আসতে পারে - যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিমান অ্যাঙ্কোরেজে অবতরণ করবে।
সাত বছর আগে হেলসিঙ্কি শীর্ষ সম্মেলনে পুতিন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বৈঠকের জন্য এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে একটি অতিথিশালায় অপেক্ষা করিয়ে রেখেছিলেন। শীর্ষ সম্মেলন শুরু হওয়ার মাত্র ১০ মিনিট আগে পুতিন বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিলেন।
পুতিনের এই ঘটনাকে ব্যাপকভাবে একটি পাওয়ার প্লে হিসেবে দেখা হয়েছিল। কারণ তিনি একবার সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলকে চার ঘন্টা অপেক্ষা করিয়ে রেখেছিলেন।
অবশ্য পুতিনের জন্য এখন অনেক কিছু বদলে গেছে। তিনি ট্রাম্পের সাথে মুখোমুখি আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ব মঞ্চে তার অবস্থান পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন। এই মুহূর্তে তার সময়ানুবর্তিতা ইঙ্গিত দেবে যে তিনি কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রস্তুত কিনা।
ক্রেমলিন অবশ্য জানিয়েছে, পুতিন আজ সময়মতো পৌঁছাবেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট সবসময় সময়মতো পৌঁছান।”
ঢাকা/শাহেদ