জুলাই অভ্যুত্থান: জামায়াতের ৩৯ দিনের কর্মসূচি
Published: 28th, June 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে ৩৯ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘জুলাই অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত ঐতিহাসিক স্মৃতিকে ধারণ করে আমরা মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করছি। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের একটি সর্বজনীন আন্দোলনের মাধ্যমে এই রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের কালো যুগ পেরিয়ে আমরা জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।’’
৩৯ দিনের কর্মসূচি হলো:
১ জুলাই: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ, আহত ও পঙ্গুতবরণকারীদের জন্য দেশব্যাপী শাখায় শাখায় দোয়া অনুষ্ঠান।
আরো পড়ুন:
৫ আগস্টকে নতুন বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করা উচিত: জামায়াতের আমির
ইসলামী দলগুলোর ভোটের বাক্স হবে একটি: রফিকুল ইসলাম
২-৪ জুলাই: দরিদ্র, অসহায়, দুস্থ ও ইয়াতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ।
৮-১৫ জুলাই: শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে জামায়াত নেতাদের সাক্ষাৎ, মতবিনিময় ও দোয়া অনুষ্ঠান।
১৬ জুলাই: রংপুরে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান।
১৯ জুলাই: জামায়াত ঘোষিত ৭ দফা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ। একই দিন শহীদ পরিবারের জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে জামায়াত আমিরের অংশগ্রহণ।
২০-২৪ জুলাই: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য ও গণপ্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম।
২৫-২৮ জুলাই: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ওপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
২৯-৩০ জুলাই: নারী ও ছাত্রীদের উদ্যোগে আলোচনা সভা।
১ আগস্ট: জাতীয় সেমিনার (শহীদ স্মারকের ইংরেজি ও আরবি অনুবাদের মোড়ক উন্মোচন)।
১-৩ আগস্ট: ছাত্রদের উদ্যোগে আলোকচিত্র প্রদর্শনী কর্মসূচি।
৫ আগস্ট: দেশব্যাপী গণমিছিল পালন এবং রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে অংশগ্রহণ।
৬-৮ আগস্ট: সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী ও আলেম-ওলামাদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন অন ষ ঠ ন আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ৬০ ছাত্রনেতার বিবৃতি
জুলাই ঘোষণাপত্রকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণামূলক প্রহসন উল্লেখ করে ঘোষণাপত্রটি প্রত্যাখ্যান করেছেন গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ৬০ ছাত্রনেতা। তারা শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনগণকে অংশীদার করে নতুন ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি জানান ছাত্র নেতারা। এতে বলা হয়, হাজারো শহীদ এবং আহত ভাইবোনের রক্তাক্ত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচার থেকে মুক্ত করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণ বিদ্যমান শোষণ-নিপীড়নমূলক পুলিশ, আদালত, আইন-সংবিধান তথা পুরোনো ব্যবস্থার কর্তৃত্ব চূড়ান্তভাবে অস্বীকার করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চব্বিশের জুলাই ঊনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানের মতো সামরিক শাসনকে মেনে নেয়নি। আবার নব্বইয়ের মতো কেবল ব্যক্তি স্বৈরাচারীর অপসারণকেই মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেনি বরং রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙক্ষার মধ্য দিয়ে গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের বৈপ্লবিক চেতনাকে জাগ্রত করেছে। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের আকাঙক্ষা অনুসারে নতুন কল্যাণমূলক, গণবান্ধব রাষ্ট্র তৈরির দায়িত্ব পালনে অগ্রসর ভূমিকায় হাজির হয়ে গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা যাদের ডাকে বিশ্বাস স্থাপন করে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
ছাত্রনেতারা বিবৃতিতে বলেন, গত ৫ আগস্ট পুরোনো শোষণমূলক আমলাতন্ত্র, লুটেরা শক্তি ও পুরোনো দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের সমর্থনে একটি প্রতারণামূলক ও অর্থহীন ডকুমেন্টকে জুলাই ঘোষণাপত্র নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা, জুলাই ঘোষণা ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানায়। পাশাপাশি শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন ও প্রকৃত ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন গণবান্ধব সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানায়।
এসব দাবি বাস্তবায়নে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা তথা পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, নারীসমাজ, কৃষক-শ্রমিক, পেশাজীবীসহ ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, হাজারো শহীদ ও আহত গাজী ভাই-বোনদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। তাদের অপরিসীম সাহস ও দেশপ্রেমকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে আমরা সত্যিকার গণবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রাম যেকোনো মূল্যে চলমান রাখবো।’
বিবৃতিতে সই করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরিফ সোহেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল্লাহ সালেহীন, মো. ওয়াহিদ উজ জামান, হামজা মাহবুব, মো. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. রাসেল আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবলী সাদী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল তানভীর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাকিব হোসাইন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজিফা জান্নাত, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. রাসেল, ঢাকা কলেজের মো. রাকিব, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসাদ বিন রনি, শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম নীরব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণা রিয়া, স্টেট ইউনিভার্সিটির মিশু আলী সুহাস, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের সিনথিয়া জাহিন, বিএল কলেজের (খুলনা) সাজিদুল ইসলাম প্রমুখ।