ফতুল্লায় আবির ফ্যাশন নামে একটি রপ্তানীমুখী পোশাক কারখানায় শ্রমিক ছাটাইকে কেন্দ্র করে অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩০ জুন) সকালে ফতুল্লার কুতুবআইল এলাকার কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

এসময় ওই কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে আশপাশের আরো ৮টি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। সেই সাথে এদিন সকাল থেকে শুরু করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিলো ফতুল্লার শিল্পাঞ্চল। শেষ পর্যন্ত এই ঘটনায় কোন মিমাংসা না হওয়ায় আবির ফ্যাশন লে-অফ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।

স্থানীয়রা জানান, সকাল ৮টায় শ্রমিকরা আবির ফ্যাশনে এসে লে-অফ ঘোষণার নোটিশ দেখতে পেয়ে উত্তেজিত হয়। এরপর অন্তত এক হাজারের মত শ্রমিক এক সাথে হয়ে আশপাশে অবস্থিত মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ, মেট্রো নিটিং, ক্যাট টেক্স, পলমল গ্রুপ, টাইম সোয়েটার, আজাদ ফ্যাশনসহ অন্তত ৮টি কারখানার গেটে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এসময় কারখানা গুলোর মালিকপক্ষ ভয়ে শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে মালিক ও শ্রমিক উভয়পক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন।

এতে শ্রমিকরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় আলোচনা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

শ্রমিকদের দাবি, ছাটাই বন্ধসহ ৮ দফা মেনে না নিলে আন্দোলন চলবে। কাজ করলে কারখানার সকল শ্রমিক কাজ করবে নয়তো কেউ কাজ করবে না। মালিকপক্ষকে একতরফা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার সহ ৮টি দাবি জানানো হয়েছে। মালিকপক্ষ দাবি মেনে না নেয়ায় আলোচনা থেকে শ্রমিকরা বেরিয়ে এসেছে। আন্দোলন চলবে।

আবির ফ্যাশনের ম্যানেজার সাগর মল্লিক বলেন, আমাদের কারখানায় ৩ হাজার শ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে গার্মেন্টসে রয়েছে ২৪শ। গার্মেন্টসের মধ্যে ২০৫জন শ্রমিককে আমরা চিহ্নিত করেছি যারা সবসময় নানা অজুহাতে বিশৃঙ্খলা সৃস্টি করেন।

আমাদের ধারণা কোন একটি চক্র গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংস করে দিতেই শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। গত কয়েক দিনে ওই শ্রমিকরা গার্মেন্টসে তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, রোববার সন্ধ্যায় আবির ফ্যাশনে কিছু শ্রমিক তান্ডব চালিয়েছে। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি এজাহার দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজ বিকেল ৪টার পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র ম ন টস গ র ম ন টস ম ল কপক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি পরিবহনে আগুন দিয়ে নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০ জন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

হামলাকারীরা দলীয় স্লোগান ও রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়ে পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে। 

জানাগেছে, গত শনিবার (১৫ নভেম্বর) ভোরে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

এরআগে , গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে। পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

দুটি নাশকতার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িতদের শনাক্তে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলছে বলে জানা গেছে।

মিনিবাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শনিবার ভোরে মিনিবাস চালক সোহাগ মিয়া (৩৮) স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ভুক্তভোগী চালক দাবি করেন, এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুড়ে যাওয়া মিনিবাসটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়।

অন্যদিকে সিএনজি চালক মো. বাবুল মিয়া (৫৪) অভিযোগ করেন, গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে।

পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, আমরা প্রতিটি নাশকতার ঘটনা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করছে, তারা যেই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় সন্ত্রাস ও নাশকতা ঠেকাতে রিয়াদ চৌধুরীর নির্দেশে বিক্ষোভ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা
  • সোনারগাঁ উপজেলা তাঁতীদলের কমিটি ঘোষণা
  • ফতুল্লায় আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করতে রিয়াদ চৌধুরীর নির্দেশে বিক্ষোভ