‘ভাইকে মেরে ফেলল, কিছুই করতে পারলাম না’
Published: 30th, June 2025 GMT
ভালো নেই ছোট পর্দার দর্শকপ্রিয় মুখ সামিরা খান মাহি। রবিবার (২৯ জুন) জানান, তার কাজিন আবু শাহেদ রাসেল মারা গেছেন। তবে মাহির অভিযোগ, চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে তার ভাই। তার ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে মাহি তার ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। একটিতে এ অভিনেত্রী বলেন, “আমার ভাইটা চলে গেল। ওকে মেরে ফেলল আর আমরা কিছুই করতে পারলাম না।”
অন্য একটি স্ট্যাটাসে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন সামিরা খান মাহি। এ লেখার শুরুতে মাহি বলেন, “আমি গভীর শোকের সাথে জানাচ্ছি, আমার কাজিন ছোট ভাই যে আমাদের সাথে আমাদের বাসায় থাকত একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। একটি নোয়া গাড়ি ২-৩ বার ধাক্কা দিয়ে ওকে ফেলে দেয়, গাড়িটি পানিতে পড়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট পর দুইজন মানুষ গাড়ির গ্লাস ভেঙে পানির নিচ থেকে ওকে তোলে। কিন্তু এরপর যা ঘটে, সেটা আরো ভয়ংকর।”
আরো পড়ুন:
মানুষ জীবনের স্বাদ হারায় অস্থিরতায়, স্বাধীনতা স্বেচ্ছাচারে: আফজাল হোসেন
মেহজাবীনের বোন মালাইকার ‘অনুতপ্ত’
দুর্ঘটনার পর মাহির ভাইকে হাসপাতালে নেওয়া হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নেয়নি। এ অভিযোগ করে মাহি বলেন, “হাসপাতাল ওকে ভর্তি নেয়নি, কারণ ওরা চিন্তা করছিল কোথাকার কে এসেছে, বিল দেবে কিনা, পরিবার কারা— এই সব হিসাব। একজন মানুষের জীবন তাদের কাছে মূল্যবান ছিল না। এরপর ওকে নেওয়া হয় সরকারি হাসপাতালে, কিন্তু সেখানকার ব্যবস্থাপনাও অগোছালো। যথাযথ চিকিৎসা হয়নি।”
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সামিরা মাহি বলেন, “আমার প্রশ্ন, প্রথমে কি আসা উচিত— একজন মানুষের জীবন, না টাকা-পয়সার হিসাব? একটা মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে, আর একটি গাড়িও দাঁড়ায় না—এ কেমন মানবতা? মানুষ কি সত্যিই এতটা নির্দয় হয়ে গেছে?”
মানবতা ফিরে আসার প্রার্থনা করে মাহি বলেন, “এই সমাজ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, মনুষ্যত্ব— সবকিছু আজ প্রশ্নের মুখে। আমার ভাই আর নেই, কিন্তু আমি চাই না অন্য কারো পরিবারের সাথে এমন হোক। আজকে আমার ভাই কাল আপনার। মানবতা ফিরে আসুক, মানুষের প্রাণই হোক অগ্রাধিকার।”
এদিকে, দেশের একটি গণমাধ্যমকে মাহি জানান, গত শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তার কাজিন আবু শাহেদ রাসেল। ফেনী থেকে ঢাকা ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারান তিনি।
মাহি বলেন, “ও আমাদের বাসায় থাকত। দুই দিনের জন্য ফেনী গিয়েছিল বন্ধুর বিয়ে খেতে। ফেনী থেকে ফিরছিল। কুমিল্লার ময়নামতি ক্রস করার পর দুর্ঘটনা ঘটে। রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে ওর গাড়িকে বড় একটি গাড়ি ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। অনেক পানি ছিল। মূল রাস্তা থেকে পুকুরটা দেখাও যাচ্ছিল না। পাশাপাশি দুর্ঘটনার সময় আর কোনো গাড়িও ছিল না সেখানে। একটা বাইক ছিল। ওই বাইক আরোহীরা ওকে দেখেন। ওনারাই নিকটস্থ হাসপাতালে নেনে। ওই হাসপাতালে না রাখলে পাশের আরেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে এক ঘণ্টার মতো বেঁচে ছিল আমার কাজিন।”
কাঁদতে কাঁদতে মাহি বলেন, “ওকে যে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল সেখানকার লোকজন বলেছেন ইন্টার্নাল বিল্ডিংয়ের কারণে মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু রাখতে পারছিল না। কারণ নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল।”
শাহেদের সঙ্গে ছিল মাহির বাগদত্তা সাদাত শাফি নাবিলের ভিজিটিং কার্ড। উদ্ধারকারীরা ওই কার্ড থেকে নাম্বার নিয়ে শাফির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে শাহেদের মৃত্যু সংবাদ দেন।
ভাই হারিয়ে শোকগ্রস্ত মাহি। আইনি পদক্ষেপ নিতে চান কি না জানতে চাইলে মাহি বলেন, “কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে জানি না। পেছনে থেকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে। কোন গাড়ি, কী গাড়ি কিছুই জানা নেই। তাছাড়া গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে দাফন হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ নিতে হলে লাশের পোস্ট মর্টেম প্রয়োজন হয়। আমরা চাইনি কোনো কাটাছেড়া করা হোক।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক দ র ঘটন ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
গৃহকর্তাকে থাপ্পড় দিয়ে ডাকাত বলে, ‘বসতঘরে সিসি ক্যামেরা কেন লাগিয়েছিস’
বসতঘরের জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকার সময় ডাকাত সদস্যরা ক্লোজ সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরার সংযোগ কেটে দেয়। এরপর বসতঘরের ভেতরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পরিবারের সদস্যদের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। এ সময় এক ডাকাত গৃহকর্তার গালে কষে থাপ্পড় দিয়ে বলে, ‘পুরো বসতঘরে সিসি ক্যামেরা কেন লাগিয়েছিস?’
আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মাদ্রাসাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই এলাকার একটি বাড়িতে বসবাস করেন ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন, বেলাল উদ্দিন ও জালাল উদ্দিন। তাঁরা তিনজনই আপন ভাই। ডাকাতেরা ওই বাড়ির তিনটি আলমারি থেকে চার ভরি সোনা, দুই লাখের কাছাকাছি টাকা ও দুটি মুঠোফোন লুট করে নিয়ে যায়।
আজ বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহবার সাকিব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার কিছু আলামত পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাটি বিভিন্নভাবে তদন্ত করছে। ডাকাতির শিকার পরিবারের লোকজন সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি।’
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়ির বাইরে ও ভেতরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন বাড়ির মালিক জালাল উদ্দিন। ভোররাতে ১০ থেকে ১২ সদস্যের মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাত তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরার কারণে ডাকাতেরা বাড়ির মূল দরজা দিয়ে আসতে না পেরে একটি কক্ষের জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকে। এ সময় পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করার পর একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর ডাকাত দলের সদস্যরা তিন ভাইয়ের রুমে থাকা আলমারির চাবি নিয়ে সোনা, টাকা ও মুঠোফোন লুট করে।
জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে কেন সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছি, তা জানতে চেয়ে ডাকাত দলের এক সদস্য আমাকে একটা চড় মারে। তবে এরপর পরিবারের অন্য সদস্যদের গায়ে আর হাত তোলেনি ডাকাতেরা।’
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।