বন্দর-কাস্টমসের কার্যক্রম সচল হলেও কাটেনি ভোগান্তি
Published: 30th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস পুরোপুরি সচল হলেও দুশ্চিন্তা কাটছে না রপ্তানিকারকদের। কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে দু’দিনে ১৯টি বেসরকারি ডিপোতে জমেছে ১৪ হাজার ৮৯৪টি রপ্তানি কনটেইনার। এসব কনটেইনার যাওয়ার কথা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে। জাহাজজট ও শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে এখন চাইলেও এসব কনটেইনার জাহাজে ওঠাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সস্পন্ন করতে না পারায় শনি ও রোববার যে চার হাজার কনটেইনার জাহাজে ওঠানো যায়নি, তার অর্ধেক এখনও পড়ে আছে ডিপোতে।
এদিকে, গতকাল অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসে শনি ও রোববারের জমে থাকা কাজ শেষ করতে পারেনি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবারে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার রাজম্ব কম অর্জিত হবে এই কাস্টমসে। বন্দরে আসা পণ্য শুল্কায়ন করে প্রতিদিন গড়ে ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করে এই কাস্টম হাউস।
বন্দর কাস্টমস সচল হওয়ার পর গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ৯১৫ একক রপ্তানি কনটেইনার বন্দরে পাঠাতে পেরেছে ডিপো কর্তৃপক্ষ। ডিপোতে আসছে আরও কয়েক হাজার কনটেইনার। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত এক দিনেই ২ হাজার ৭৯৬টি গাড়ি ডিপোতে এসেছে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে। রপ্তানি পণ্য নিয়ে এখনও ডিপো ও বন্দরের আশপাশে দাঁড়িয়ে আছে সহস্রাধিক ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান ও ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘দুই কনটেইনার আমদানি পণ্য ১৫ দিন ধরে পড়ে আছে বন্দরে। এ ছাড়া ঢাকায় বিমানবন্দরে আটকে আছে আমার রপ্তানি
পণ্য। কর্মবিরতি, কলমবিরতি, শাটডাউনসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচির কারণে বড় ক্ষতি হচ্ছে।’ হা-মীম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক কাজী আবদুল আলীম বলেন, ‘বেসরকারি বিভিন্ন ডিপোতে আমাদের ৫২
কনটেইনার রপ্তানি
পণ্য আটকে ছিল। কিছু পাঠাতে পারলেও এখনও কিছু কনটেইনার রয়ে গেছে। বন্দরে আটকে আছে সোডা অ্যাশ, সোডিয়াম সালফেটসহ গার্মেন্টের বিভিন্ন কাঁচামালভর্তি প্রায় ৭০টি কনটেইনার। এসব পণ্যের জন্য এখন প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা ড্যামারেজ দিতে হচ্ছে। পণ্য খালাসের চেষ্টা করেও শিডিউল পাচ্ছি না কাস্টমসের।’
বেসরকারি ডিপো থেকে প্রতিদিন দুই
হাজার দুইশ থেকে আড়াই হাজার রপ্তানি কনটেইনার পাঠানো হয় বন্দরে। এসব কনটেইনার পরে তোলা হয় জাহাজে। কিন্তু বেসরকারি ডিপোতে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার ছিল ১৪ হাজার ৮৯৪ একক। গতকাল এক দিনে রপ্তানি পণ্যবোঝাই গাড়ি ডিপোতে এসেছে ২ হাজার ৭৯৬টি। এখনও সহস্রাধিক গাড়ি রপ্তানি পণ্য নিয়ে অপেক্ষায় আছে।
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন,
‘কাস্টমস কর্মকর্তারা না আসায় ডিপোতে
শুল্কায়ন কার্যক্রম টানা দুই দিন বন্ধ ছিল। এ জন্য রপ্তানি কনটেইনারের জট তৈরি
হয়েছে। রোববার রাত থেকে রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন আবার শুরু হলেও এরই মধ্যে ১৪ হাজার ৮৯৬ একক রপ্তানি কনটেইনার জমে গেছে ডিপোতে। প্রতিদিন যোগ হচ্ছে আরও সহস্রাধিক কনটেইনার।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব সরক র ক স টমস গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভয়াবহ আগুন কলকাতার বড়বাজারে, ঘটনাস্থলে দমকলের ২০ ইঞ্জিন
কলকাতার পুলিশ হেডকোয়ার্টার লালবাজারের কাছে বড়বাজারের এজরা স্ট্রিটের একটি গুদামে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। শনিবার ভোর রাতে আগুন লাগলেও সেই আগুন সকাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বরং দ্রুত আগুন ছড়াচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের অন্তত ২০টি ইঞ্জিন। ল্যাডারের সাহায্য নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ইঞ্জিনের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার ভোর ৫টা নাগাদ গুদামে আগুন লেগে যায়। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং প্রচুর বৈদ্যুতিক তার ছিল গুদামে। মজুত করা ছিল অনেক দাহ্য পদার্থ। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভালো করে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে আকাশ। চারদিক ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। কীভাবে এই আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বৈদ্যুতিক সামগ্রী থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। কেউ কেউ শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনার কথা বলছেন।
আরো পড়ুন:
ভারত যাচ্ছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা
চীন সীমান্তের পাশে নতুন বিমানঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত
যদিও ফায়ার সার্ভিসের তরফে সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কিছু নিশ্চিত কিছু জানাতে পারেনি, তারা আগুন নেভাতেই এখনো পর্যন্ত ব্যস্ত। পুলিশ ও দমকল সূত্রে খবর, ভোরে ওই গুদাম থেকে কালো ধোঁয়া বার হতে দেখে স্থানীয়রাই দমকলকে জানান। ঘনবসতি এলাকা হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। গুদাম থেকে পাশের আবাসনেও ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। একাধিক বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর। ভিতরে কেউ আটকে পড়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে দমকলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, দমকলে খবর দেওয়া হলেও তারা দেরিতে এসেছে। ফলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ