চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস পুরোপুরি সচল হলেও দুশ্চিন্তা কাটছে না রপ্তানিকারকদের। কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে দু’দিনে ১৯টি বেসরকারি ডিপোতে জমেছে ১৪ হাজার ৮৯৪টি রপ্তানি কনটেইনার। এসব কনটেইনার যাওয়ার কথা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে। জাহাজজট ও শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে এখন চাইলেও এসব কনটেইনার জাহাজে ওঠাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সস্পন্ন করতে না পারায় শনি ও রোববার যে চার হাজার কনটেইনার জাহাজে ওঠানো যায়নি, তার অর্ধেক এখনও পড়ে আছে ডিপোতে। 
এদিকে, গতকাল অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসে শনি ও রোববারের জমে থাকা কাজ শেষ করতে পারেনি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবারে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার রাজম্ব কম অর্জিত হবে এই কাস্টমসে। বন্দরে আসা পণ্য শুল্কায়ন করে প্রতিদিন গড়ে ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করে এই কাস্টম হাউস।

বন্দর কাস্টমস সচল হওয়ার পর গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ৯১৫ একক রপ্তানি কনটেইনার বন্দরে পাঠাতে পেরেছে ডিপো কর্তৃপক্ষ। ডিপোতে আসছে আরও কয়েক হাজার কনটেইনার। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত এক দিনেই ২ হাজার ৭৯৬টি গাড়ি ডিপোতে এসেছে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে। রপ্তানি পণ্য নিয়ে এখনও ডিপো ও বন্দরের আশপাশে দাঁড়িয়ে আছে সহস্রাধিক ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান ও ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘দুই কনটেইনার আমদানি পণ্য ১৫ দিন ধরে পড়ে আছে বন্দরে। এ ছাড়া ঢাকায় বিমানবন্দরে আটকে আছে আমার রপ্তানি 
পণ্য। কর্মবিরতি, কলমবিরতি, শাটডাউনসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচির কারণে বড় ক্ষতি হচ্ছে।’ হা-মীম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক কাজী আবদুল আলীম বলেন, ‘বেসরকারি বিভিন্ন ডিপোতে আমাদের ৫২

কনটেইনার রপ্তানি 
পণ্য আটকে ছিল। কিছু পাঠাতে পারলেও এখনও কিছু কনটেইনার রয়ে গেছে। বন্দরে আটকে আছে সোডা অ্যাশ, সোডিয়াম সালফেটসহ গার্মেন্টের বিভিন্ন কাঁচামালভর্তি প্রায় ৭০টি কনটেইনার। এসব পণ্যের জন্য এখন প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা ড্যামারেজ দিতে হচ্ছে। পণ্য খালাসের চেষ্টা করেও শিডিউল পাচ্ছি না কাস্টমসের।’

বেসরকারি ডিপো থেকে প্রতিদিন দুই 
হাজার দুইশ থেকে আড়াই হাজার রপ্তানি কনটেইনার পাঠানো হয় বন্দরে। এসব কনটেইনার পরে তোলা হয় জাহাজে। কিন্তু বেসরকারি ডিপোতে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার ছিল ১৪ হাজার ৮৯৪ একক। গতকাল এক দিনে রপ্তানি পণ্যবোঝাই গাড়ি ডিপোতে এসেছে ২ হাজার ৭৯৬টি। এখনও সহস্রাধিক গাড়ি রপ্তানি পণ্য নিয়ে অপেক্ষায় আছে। 
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, 

‘কাস্টমস কর্মকর্তারা না আসায় ডিপোতে 
শুল্কায়ন কার্যক্রম টানা দুই দিন বন্ধ ছিল। এ জন্য রপ্তানি কনটেইনারের জট তৈরি 
হয়েছে। রোববার রাত থেকে রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন আবার শুরু হলেও এরই মধ্যে ১৪ হাজার ৮৯৬ একক রপ্তানি কনটেইনার জমে গেছে ডিপোতে। প্রতিদিন যোগ হচ্ছে আরও সহস্রাধিক কনটেইনার।’ 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব সরক র ক স টমস গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক

৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।

তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।

আরো পড়ুন:

গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি

চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।

ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”

সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছুটি শেষে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।”

২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ভবন ধস: ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও আটকা ৯১ জন
  • বাজেট বিল নিয়ে অচলাবস্থা, শাটডাউনের পথে যুক্তরাষ্ট্র
  • পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক