হ্যালো জুলাই, আছি তোমাদের পাশে : আসিফ
Published: 1st, July 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলোতে অনলাইন-অফলাইনে যেসব সাংস্কৃতিক তারকারা সরব ভূমিকা রেখেছেন, তাদের মধ্যে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর অন্যতম। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তিনি শুরু থেকেই প্রকাশ করেছেন অকুণ্ঠ সংহতি।
আজ (১ জুলাই) সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আবারও সামাজিক মাধ্যমে সরব হলেন ‘বাংলা গানের যুবরাজ’খ্যাত এই শিল্পী।
এ সংগীতশিল্পী স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “হ্যালো জুলাই। জানি তোমাদের আশ্রয় দরকার নেই, তবুও আমরা আছি তোমাদের পাশে। স্যালুট।’’
আফিস সবসময় জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের প্রেরণা ও ভালোবাসা জানিয়ে আসছেন। গত বছর (২০২৪) ২৮ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে তার সঙ্গে একই ছবিতে দেখা গেছে।
সেই ছবি আসিফ ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছিলেন, “জুলাই বিপ্লবের দুই সফল অধিনায়ক এসেছিলেন ধন্যবাদ জানাতে জেন জেডের পক্ষ থেকে। তাদের সঙ্গে দেশ, সমাজ, রাজনীতির পাশাপাশি সংগীত আর মিডিয়া নিয়েও গল্প হলো। এরা যথেষ্ট জ্ঞানী এবং স্মার্ট। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ খুব স্ট্রেইটকাট ছেলে, সারজিস আলম মৃদুভাষী।”
তিনি আরও লিখেছিলেন, “আমিও তাদের আমাদের জেড ফোর্সের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছি। ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লবে বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছিল দুঃসহ অবস্থা থেকে। ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লব এনে দিয়েছে আওয়ামী-বাকশালীদের খুনিতন্ত্র থেকে মুক্তি। জেড ফোর্সের নভেম্বর বিপ্লব আর জেন জেডের জুলাই বিপ্লব সমুন্নত থাকুক স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাসে। ভালোবাসা অবিরাম।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সফলতা আনতে কী করতে হবে সে বিষয়ে গত বছর আসিফ তার ফেসবুকে লিখেছেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আসল সফলতা আসবে ছাত্র-ছাত্রীদের সময়মতো বিয়ে করার মাধ্যমেই। আমি ২৪-২৫ বছর বয়সে বিয়ের পক্ষে। এতে সংসার শুরু করা যায় দ্রুত। তারাও বাবা-মা হতে পারে, আমরাও দাদা-নানা হতে পারি সুন্দর সময়ে। কবে স্টাডি শেষ হবে, তারপর প্রতিষ্ঠা পাবে, তারপর টাকা জমিয়ে বিয়ে করতে হবে! এর মধ্যে চলে যাবে যৌবনের সুন্দর সময়।”
তিনি আরও লিখেছিলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য, ছাত্র আন্দেলেনের বাঘা বাঘা নেতা এবং তাদের সহকর্মীরা এখনো ব্যাচেলর। অথচ আমি ওই বয়সে দুই ছেলের বাবা হয়েছি। তাদের উচিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় তরুণদের বিয়ের জন্য একটা পদ্ধতি তৈরি করা।”
ঢাকা/রাহাত//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।