হাজারো বন্দীর মধ্যে শুধু পাঁচজনের মাথায় কেন ‘লাল টুপি’
Published: 2nd, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাড়ে পাঁচ হাজার বন্দী রয়েছেন। এঁদের মধ্যে হাজতিদের (যাঁদের মামলা বিচারাধীন) গায়ে থাকে সাধারণ পোশাক। আর কয়েদিদের (যাঁদের সাজা হয়েছে) পরনে থাকে বিশেষ পোশাক—সাদার ওপর ডোরাকাটা জামা, মাথায় সাদা টুপি। কিন্তু বন্দীদের মধ্যে পাঁচজন আলাদা। তাঁদের মাথায় সাদা নয়, আছে লাল টুপি। ওই পাঁচজন হলেন ফরহাদ হোসেন, মো.
কারাবিধি অনুযায়ী, যেসব বন্দী পালিয়ে গিয়ে ধরা পড়েন, তাঁদের মাথায় ‘লাল টুপি’ পরানো হয়। কারা সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৬ মার্চ ভোর সোয়া পাঁচটায় তৎকালীন কারারক্ষী নাজিম উদ্দিন কর্ণফুলী ভবনের বিশেষ ওয়ার্ডের (দুর্ধর্ষ বন্দীদের ওয়ার্ড) তালা খোলার পর কৌশলে পালিয়ে যান বন্দী ফরহাদ হোসেন। ওই দিন ট্রেনে প্রথমে ঢাকা, পরে নরসিংদীতে ফুফুর বাড়িতে চলে যান। ৯ মার্চ ভোরে নরসিংদী জেলায় ফুফুর বাড়ি থেকে জেলপালানো ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর কারাগারে আসার দিন থেকে ফরহাদের মাথায় ওঠে লাল টুপি। পরে এই মামলায় ফরহাদের এক বছরের সাজা হয়।
২০২১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সদরঘাট থানার এসআরবি রেলগেট এলাকায় আবুল কালাম আবু নামের এক ভাঙারি ব্যবসায়ীর বুকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকালে কালাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। ওই ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি কারাগারে আসেন ফরহাদ। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।
চট্টগ্রাম কারাগার থেকে হাজিরা দিতে গিয়ে আদালতে পুলিশের হেফাজত থেকে গত ২৯ এপ্রিল এপ্রিল পালিয়ে যান লোহাগাড়া থানার হত্যা মামলার আসামি ইকবাল হোসেন ও সীতাকুণ্ড থানার মাদক মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন। অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পালানোর ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন। পালানোর সপ্তাহখানেক পর দুজনই গত ৭ মে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে এলে তাঁদেরও পরানো হয় লাল টুপি।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে কারাগার থেকে বন্দী পালানোর ঘটনা ‘আড়ালের’চেষ্টা২৬ মে ২০২৫চট্টগ্র্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভাঙা সড়ক মেরামতে ৫০০ কোটি টাকা চান চসিক মেয়র
এক বর্ষায় চট্টগ্রাম নগরে ভেঙেছে ৩৮৮ সড়ক। আবার অরক্ষিত নালা-নর্দমা ও খালে পড়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এখন এসব ভাঙা সড়ক সংস্কার ও নিরাপত্তাবেষ্টনী দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ চেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।
সিটি করপোরেশনের আর্থিক সংকটের কারণে এ অর্থ বরাদ্দ দিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে গত মঙ্গলবার চিঠি দেন মেয়র শাহাদাত হোসেন। তবে আর্থিক বরাদ্দ চাইলেও তা পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেননা এর আগে সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, বর্জ্য অপসারণে যন্ত্রপাতি কেনার প্রকল্প অনুমোদনসহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ চাইলেও তা মেলেনি বলে খোদ মেয়রই অভিযোগ করেছিলেন।
চট্টগ্রাম নগরে পাঁচ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি রাস্তাঘাট ভেঙে বেহাল হয়েছে। ৩৮৮টি সড়কের ১৪২ কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছর ভেঙেছিল ১০০ কিলোমিটার। ২০২৩ সালে ৫০ কিলোমিটার, ২০২২ সালে ১০০ কিলোমিটার ও ২০২১ সালে ৩৬ কিলোমিটার সড়ক নষ্ট হয়েছিল।
গত ছয় বছরে অরক্ষিত খাল ও নালায় পড়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৫ সালে দুজন, ২০২৪ সালে তিনজন, ২০২৩ সালে তিনজন, ২০২১ সালে পাঁচজন ও ২০২০ সালে দুজনের প্রাণহানি হয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ জুলাই হালিশহরের আনন্দপুর এলাকায় তিন বছর বয়সী হুমায়রার মৃত্যু হয় মায়ের কর্মস্থলের পাশের নালায় পড়ে। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল নগরের কাপাসগোলায় হিজড়া খালে রিকশা উল্টে পড়ে গেলে মায়ের কোল থেকে পড়ে মৃত্যু হয় ছয় মাসের শিশু আনাবিয়া মেহেরিন সেহরীশের।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নগরের ভাঙা সড়ক, নালার ঝুঁকিপূর্ণ স্ল্যাব এবং অরক্ষিত নালা ও খালের তালিকা করেছে। তালিকা অনুযায়ী ১৪২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে প্রয়োজন হবে ৪২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ১৮ হাজার ৬৬৩ বর্গমিটার স্ল্যাব ঠিক করতে লাগবে ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। অরক্ষিত নালা ও খালে নিরাপত্তাবেষ্টনী দিতে হবে ২১ কিলোমিটার। এতে খরচ হবে ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
সড়কে সৃষ্ট বড় গর্তে জমে আছে পানি। গাড়ি চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন চালকেরা। গত বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট এলাকায়