ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির যাত্রী ছাউনির কোণে থেমে ছিল একটি রিকশা। অনেকেই ভেবেছিলেন হয়তো চালক একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। সারা দিনের ক্লান্তি তো আর কম নয়! কিন্তু না পথচারী গায়ে হাত দিতেই বুঝলেন তিনি আর নেই। 

মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, অনেকক্ষণ আগেই তিনি মারা গেছেন।

এখনও নাম পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ বলছে, চেষ্টা চলছে। অনেকে সিটের আসনে আধা শোয়া অবস্থায় থাকা ছবিটা শেয়ার করছেন পরিচয় শনাক্তের জন্য। 

হামিদ হাসান নামে একজন ওই ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “একজন পথচারী বিকেলে দেখেছিলেন তাকে ঘুমন্ত অবস্থায়। কয়েক ঘণ্টা পর আবার যখন ওই পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখনও একইভাবে বসে আছেন তিনি। কিন্তু এবার মনটা কেমন যেন কেঁপে উঠল। গায়ের ওপর হাত রাখতেই বুঝলেন ঘুমিয়ে নেই তিনি। ফিরে গেছেন না-ফেরার দেশে।” 

“রিকশার ওপরেই মৃত্যু হয়েছিল তার। নীরবে, একা। হয়তো স্ট্রোক করেই শেষ নিঃশ্বাসটা ফেলেছিলেন। কোনো শব্দ নেই, কোনো আর্তনাদ নেই শুধু একটুকরো নিঃশব্দ বিদায়। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম এসে মরদেহের দায়িত্ব নিয়েছে। এখনো তার পরিচয় জানা যায়নি।” 

তিনি আরো লেখেন, “মানুষের জীবন কতটা অস্থায়ী, কতটা অনিশ্চিত! হয়তো শুধু একটু বিশ্রাম নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য তাকে চিরবিশ্রামের দেশে পাঠিয়ে দিল।” 

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিঠু জানান, নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা/বুলবুল/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আরও উত্তপ্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি এক সপ্তাহ পার হয়েছে। সাত দিন ধরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যেসব উত্তপ্ত কথা চালাচালি হয়েছে, তাতে আশঙ্কা ছিল যে কোনো সময় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাবে। ইরান-ইসরায়েল পরস্পরকে অবিশ্বাসের কথা জানায়। পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের বক্তব্যে নাখোশ হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সব সহযোগিতা বন্ধ ঘোষণা করে ইরান।

ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলে ট্রাম্প আবারও হামলা চালানোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন। এ অবস্থায় যত দিন যাচ্ছে, ততই যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। গতকাল সোমবার ‘ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির এক সপ্তাহ : যা এখনও অজানা’ শীর্ষক এপির প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার কথা উঠে আসে।  

গত ১৩ জুন ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরে ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালালে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত শুরু হয়ে যায়। পরে শেষ পর্যন্ত ২৩ জুন যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হলেও সব পক্ষ সম্মত হয় ২৫ জুন।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বিশ্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভঙ্গুর শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলেও অনেক কিছু এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কতটা পিছিয়ে পড়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু আলোচনা ফের শুরু হওয়ার আভাস মিলেছে। ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু এই পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে গাজায় ২০ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবেন কিনা, তা এখন বড় প্রশ্ন।  

ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন হামলায় ইরানের ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে। তবে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়নি বলে জানানো হয়েছে। 

এরই মধ্যে রোববার আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সিবিএসের ফেস দ্য নেশন অনুষ্ঠানে বলেন, ইউরেনিয়াম শোধন, রূপান্তর ও সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি ইরানি স্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনও কিছু টিকে আছে। যেহেতু সক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হয়নি, তারা আবারও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ শুরু করতে পারে। তিনি বলেন, আইএইএ যদি সম্পূর্ণ পরিদর্শনের অনুমতি পায়, তাহলে ক্ষতি নিরূপণ করা যাবে।     

যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পর ইরানের ওপর কয়েক দশক ধরে চলা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়টি বিবেচনা করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ইরান কর্মসূচি থেকে সরে এলে দু’দেশের বাণিজ্য খাত ব্যাপক সম্ভাবনাময় হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু এই সম্প্রীতির আলোচনা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। 

যুদ্ধবিরতির পর যখন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি জনসমক্ষে দাবি করেন, তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের মুখে চড় বসিয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত আলোচনা প্রত্যাহার করে নেন ট্রাম্প। ইরান ট্রাম্পের এই অবস্থানকে ‘গেম’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।  

অন্যদিকে সাইবার যুদ্ধের মাধ্যমে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শক্তিমত্তা দেখিয়েছে। এটিকে হুমকি মনে করে ওয়াশিংটন। তেহরানের হ্যাকার গোষ্ঠী ইতোমধ্যে মার্কিন ব্যাংক, প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান, জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। যদিও এখনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাঘাত তারা ঘটাতে পারেনি। মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ইরানের সাইবার হুমকির ব্যাপারে পাবলিক সতর্কতাও জারি করেছে। সংস্থা বা কোম্পানিগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।   
এদিকে গতকাল ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বলেছেন, তিনি ইরানের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন না বা তাদের কিছু দিচ্ছে না। এর আগে চাউর হয়, বেসামরিকভাবে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে ট্রাম্প প্রশাসন। 

ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তখত-রাভানচি বিবিসিকে বলেছেন, নতুন আলোচনার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের ইরানের হামলার হুমকির বিষয়টি প্রত্যাহার করতে হবে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের কাছে লেখা এক চিঠিতে ইরান দাবি করেছে, ‘১২ দিনে যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল দায়ী’ জাতিসংঘ যেন এটাকে স্বীকৃতি দেয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি এই চিঠি লেখেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কারের আলোচনা থাকলেও বাস্তব প্রতিফলন নেই: জোনায়েদ সাকি
  • এখন গান আছে কিন্তু তাতে দরদ নেই: সাবিনা ইয়াসমিন
  • সোনাক্ষী আর চুপ থাকতে পারলেন না
  • শেকড়ে ফেরাল ফুটবল, ট্রায়ালের ফলাফল কবে
  • আরও উত্তপ্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক
  • ৫০০ বছরের তেঁতুল গাছ
  • বন্দর-কাস্টমসের কার্যক্রম সচল হলেও কাটেনি ভোগান্তি
  • হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের লাশ: প্রশ্ন অনেক, উত্তর খুঁজছে পুলিশ
  • ৩৩৬ কোটি টাকার পথে চলে না ট্রেন