গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’
Published: 25th, July 2025 GMT
গোপালগঞ্জ জেলায় ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের হামলার ঘটনার পর দুই দিনব্যাপী সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধানের পর আসক বলছে, গোপালগঞ্জে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার ঘটনা নাগরিকের সভা-সমাবেশের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে আসক।
২১ থেকে ২২ জুলাই আসকের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গোপালগঞ্জে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। সহিংসতার ঘটনায় নিহত, আহত, আটক-গ্রেপ্তার হওয়া নাগরিকদের পরিবার ও স্বজনদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সাধারণ নাগরিক, পেশাজীবী এবং কারাগার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আসকের প্রতিনিধিরা। পরে আজ শুক্রবার নিজেদের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে আসক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আসক মনে করে, গোপালগঞ্জে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। এ ছাড়া ১৬ জুলাই রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার ঘটনা নাগরিকের সভা–সমাবেশের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছে। আসক এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়।’ এতে বলা হয়, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা আসককে জানিয়েছেন, এনসিপির নেতারা স্বল্পসংখ্যক সমর্থকের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন। বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগকে লক্ষ্য করে কিছু আক্রমণাত্মক মন্তব্য করা হয়। এই মন্তব্যের পরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং পরে সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এনসিপির নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ‘সাধারণ জনতা’ রাস্তায় নেমে আসে, একপর্যায়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আসকের প্রতিবেদন বলছে, গোপালগঞ্জের সমাবেশের দিন সকাল থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং তাদের সমর্থকেরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তাঁদের হাতে লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র ছিল।.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ ১৬ জ ল ই ঘটন র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।
নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।
এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।