মিশিগানের ওয়ালমার্টে ছুরি হামলায় আহত ১১
Published: 27th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ট্রাভার্স সিটিতে একটি ওয়ালমার্ট স্টোরে স্থানীয় সময় শনিবার রাতে ছুরিকাঘাতে অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় একজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে।
গ্র্যান্ড ট্রাভার্স কাউন্টির শেরিফ মাইকেল শিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ১১ জন আহত হওয়া অবশ্যই মর্মান্তিক, তবে ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ- আরো বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রকাশ
বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান: দার
ঘটনার সময় আশপাশে থাকা ক্রেতারা আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শী ৩৬ বছর বয়সী টিফানি ডেফেল বলেন, আমি ও আমার বোন পার্কিং লটে ছিলাম, হঠাৎ চারপাশে চিৎকার আর বিশৃঙ্খলা। এটা সত্যিই ভীতিকর ছিল। এটা সিনেমার মতো লাগছিল- বাস্তবে এমন কিছু ঘটবে ভাবিনি। ট্রাভার্স সিটিতে এমন ঘটনা কল্পনা করা যায় না।
উত্তর মিশিগানের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল মুনসন হেলথকেয়ার সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে জানিয়েছে, ১১ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের মুখপাত্র মেগান ব্রাউন বলেন, আহতদের সবাই ছুরিকাঘাতের শিকার। তিনি আরো জানান, আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।
কাউন্টির শেরিফ শিয়া বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ফোল্ডিং-স্টাইল ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তি মিশিগানেরই বাসিন্দা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিস্তারিত পরিচয় জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
রাজ্যের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার এক বিবৃতিতে বলেন, এই নির্মম সহিংসতায় আহতদের প্রতি আমাদের গভীর সহানুভূতি রইল।
ওয়ালমার্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য। আহতদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি জানাচ্ছি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
এফবিআইয়ের উপ-পরিচালক ড্যান বোঙ্গিনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে বলেছেন, ব্যুরো কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সাড়া দিচ্ছেন।
ট্রাভার্স সিটি মিশিগানের একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। এটি চেরি উৎসব, ওয়াইন এবং লেক মিশিগানের তীরবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। ডেট্রয়েট থেকে প্রায় ২৫৫ মাইল (৪১০ কিলোমিটার) উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ট্র্যাভার্স সিটি।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র আহতদ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
বাংলাদেশে পুলিশে পেশাদারি মনোভাব গড়ে না ওঠার জন্য এই বাহিনীকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারকে দায়ী করছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, বিভাজিত সমাজে ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’—এমন নানা তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।
আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে এ বৈঠক আয়োজন করে প্রথম আলো ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতি। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। একটি প্রবন্ধ তুলে ধরেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অবসরপ্রাপ্ত) ও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াসমিন গফুর।
নিজের পেশাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, ‘আমি দুই সরকারপ্রধানের (সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গেই কাজ করেছি। অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়ে একটা ভদ্রতা, সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে হয়। দেখা করলে অনেক কথার পরও বা অল্প কথার পরও ‘এ কি আমাদের?’—এমন কথা শুনলে প্রথমেই বিব্রত বোধ করতে হয়।’
সরকারের পরিবর্তনে পুলিশে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে প্রভাবিত হওয়ার উদাহরণ দিয়ে মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘বাড়ি ফরিদপুর যদি হয় বা ফরিদপুরের আশপাশে হয়, কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না। আবার আরেক সময় বগুড়ায় বাড়ি, ঝিনাইদহে বাড়ি, দিনাজপুরের বাড়ি, তাহলে চাকরিতে নেওয়া যাবে না বা ক্ষেত্রবিশেষে পদোন্নতি হবে না।’ এ ধরনের মনোভাব থেকে বের হতে না পারলে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার বা পেশাদারি মনোভাব ফেরানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও আচরণের পরিবর্তন না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে নুরুল হুদা বলেন, ‘এক অদ্ভুত ব্যাপার। এখানে দুই হাজারের মতো লোক মারা গেল। অথচ বিহেভিয়ারে চেঞ্জ নেই।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার অন্তরায় হিসেবে নিয়োগে দুর্নীতি এবং সমাজে বিভাজনকে চিহ্নিত করেন সাবেক এই পুলিশপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এই যে প্রচুর সংখ্যার লোক পয়সা দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছে বা এখানে হলে...অনেক পয়সা হয়, এই অ্যাটিচিউড (আচরণ) থাকলে তো ল এনফোর্সমেন্ট (আইনশৃঙ্লা নিয়ন্ত্রণ) মুশকিল। আর ল এনফোর্সমেন্টের আরেকটা বড় জিনিস হচ্ছে আমি যে সমাজে কাজ করতে যাচ্ছি, সেই সমাজ কতখানি বিভাজিত।’
সংস্কারের পটভূমিতে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের কর্মপদ্ধতি জানতে চেয়েছেন নুরুল হুদা। পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এই গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম আকবর আলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি কাজী মো. ফজলুল করীম বৈঠকে অংশ নেন।