আইফোনে গুগলের ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করেন অনেকেই। তাই আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য নিজেদের ক্রোম ব্রাউজারে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল। নতুন এ সুবিধা চালুর ফলে আইফোনে এক ক্লিকেই ক্রোম ব্রাউজারের এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা যাবে। ফলে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট  ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে সহজ হবে।

ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ক্রোম ব্রাউজারের একাধিক অ্যাকাউন্ট একসঙ্গে ব্যবহার করতে গিয়ে প্রায়ই ব্যবহারকারীদের বারবার সাইন ইন ও সাইন আউট করতে হয়। নতুন এ সুবিধা চালুর ফলে এখন আর সেই ঝামেলায় পড়তে হবে না। গুগলের হালনাগাদ করা ক্রোম ব্রাউজারে এক ক্লিকেই সহজে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে যাওয়া যাবে। প্রতিটি অ্যাকাউন্টের ব্রাউজিং তথ্য যেমন ট্যাব, ইতিহাস, পাসওয়ার্ড ও বুকমার্ক সম্পূর্ণ আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা হবে। ফলে ব্যক্তিগত ও পেশাগত ব্যবহারের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য বজায় থাকবে এবং তথ্য হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

গুগলের তথ্যমতে, ব্যবহারকারী যখন প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করবেন, তখন গুগল ক্রোম তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেবে। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা বুঝতে পারবেন যে তিনি একটি নিয়ন্ত্রিত মাধ্যমে প্রবেশ করছেন, যেখানে ব্রাউজিং তথ্য এবং নিরাপত্তা নীতিমালা আলাদা নিয়মে পরিচালিত হবে।

প্রাথমিকভাবে নতুন এ সুবিধা শুধু প্রতিষ্ঠান–নিয়ন্ত্রিত বা ‘ম্যানেজড এন্টারপ্রাইজ অ্যাকাউন্ট’ ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করতে পারবেন। ব্যক্তিগত গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা আপাতত এর আওতাভুক্ত নন। যখন কোনো ব্যবহারকারী প্রথমবার ম্যানেজড অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করবেন, তখন ক্রোম একটি অনবোর্ডিং স্ক্রিনে জানিয়ে দেবে কীভাবে ব্যক্তিগত ও পেশাগত তথ্য আলাদা রাখা হয়েছে।
সূত্র: টেকলুসিভ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক অ য ক উন ট ব যবহ র আইফ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ

কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।

তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।

স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।

জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ