নারীদের জন্য ৫% আসন কি দয়াদাক্ষিণ্য, পোশাক খাতে রেমিট্যান্স কারা দেয়
Published: 9th, August 2025 GMT
ছবি: প্রথম আলো
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যে সিনেমা বাঁচিয়েছিলো ছয় জনের প্রাণ
পপ সংস্কৃতিতে পালানোর গল্পগুলো অনেক বেশি প্রাধান্য পায়। সেটা হোক গল্প, উপন্যাস, নাটক কিংবা সিনেমা। পলায়নের গল্পগুলো রোমাঞ্চ, সাহস এবং সিনেমাটিক স্বাধীনতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়ে থাকে। এসব গল্প মানুষকে উৎসাহিত করে। আর সেই পলায়নের গল্পে যদি বাস্তব জীবনের উপাদান থাকে, তাহলে গল্পটি আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে।
দিনটি ছিলো ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর। অর্থাৎ ৪৬ বছর আগে, ইরানের উত্তেজিত জনতা তেহরানে মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালিয়েছিললেন। প্রচুর ভাঙচুর চালিয়েছিলেন এবং কূটনীতিক ও বেসামরিক নাগরিকসহ ৬৬ জন আমেরিকানকে জিম্মি করেছিলো। ওইদিন আতঙ্কিত আমেরিকানরা গোপন সরকারি নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলে, প্রাণ বাঁচাতে এদিক-ওদিক দৌড়াদৌড়ি করতে শুরু করেছিলেন। আর ইরানের রাস্তাঘাটে অবস্থান নিয়েছিলেন বিপ্লবীরা। তারা আমেরিকানদের খুঁজছিলেন। যাকে পাচ্ছিলেন তাকেই গুলি করে হত্যা করছিলেন।
আরো পড়ুন:
বিকেলের নাস্তায় থাকুক ‘মিষ্টি কুমড়ার স্যুপ’
মৃত্যুর প্রতীক ‘পপি ফুল’
দূতাবাসে যারা আটকে পড়েন তাদের মধ্যে ছ’জন ভবনের পিছনের দরজা দিয়ে পালাতে সক্ষম হন। পরে এ রবার্ট অ্যান্ডার্স নামের এক কূটনীতিক কানাডার কূটনীতিক জন শিয়ারডাউনকে সাহায্যের জন্য ফোন করেন। পালিয়ে আসা দলটির মধ্যে চার জন শিয়ারডাউনের বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকেন। বাকি দু’জনকে কানাডার রাষ্ট্রদূত কেনেথ টেলরের বাসভবনে রাখা হয়েছিলএই খবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছোনোর পর ইরানে পণবন্দি মার্কিন কূটনীতিবিদদের মুক্ত করতে বিপজ্জনক অপারেশন চালায় সিআইএ। তবে তারাও মার্কিন নাগরিকদের বার করে আনার ব্যাপারে খুব একটা আশাবাদী ছিল না। ইতিহাসে এই উদ্ধার অভিযান ‘ইরান হস্টেজ ক্রাইসিস’ হিসাবে পরিচিত।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের প্রতিনিধি এবং তেহরানে থাকা অন্যান্য দেশের কূটনীতিকেরা পণবন্দিদের মুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। আমেরিকার অ্যাটর্নি জেনারেল রামসে ক্লার্কের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলও আলোচনায় বসতে চেয়েছিল। ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ছিল। তাকেও ইরানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
শেষে দূতাবাস আক্রমণের দিন যে ছয় জন প্রাণ হাতে করে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন তাদেরও নিরাপদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইএ-কে। শেষতক কূটনীতিবিদদের উদ্ধার করতে জীবন বাজি রেখে অগ্নিগর্ভ তেহরানে ঝাঁপ দেন সিআইয়ের গোপন উদ্ধার অভিযানের বিশেষজ্ঞ টনি।
সিনেমার শুটিংয়ের আড়ালে টনি উদ্ধার করেছিলেন সহ-নাগরিকদের। সিআইয়ের সদর দফতরে বসে ক্ষুরধার মস্তিষ্কের টনি ছকে ফেলেন অভিনব পরিকল্পনা।এই অপারেশনের সাঙ্কেতিক নাম ছিল ‘কানাডিয়ান ক্যাপার’।
দুইমাসেরও বেশি সময় ধরে ছয়জনকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা চলে। ১৯৮০ সালের ২৭ জানুয়ারি ছিল সেই দিন। সকালে, তারা তেহরান বিমানবন্দরে পৌঁছান। সামনে ইরানি নিরাপত্তার কঠোর তল্লাশি, শেষ মুহূর্তে এক অফিসার প্রশ্ন করেন, ‘সিনেমার নাম কী?’ টনি হেসে জবাব দেন, ‘আর্গো’। তেহরানের বিমানবন্দরে শেষ মুহূর্তের ছাড়পত্র পান টনি মেন্ডেজ এবং ছয় কূটনীতিক। কানাডিয়ান সরকারের সহায়তায় ইরান থেকে পালিয়ে আসতে সমর্থ হন তারা। ভুয়া কানাডিয়ান পাসপোর্টকে হাতিয়ার করে নির্বিঘ্নে শত্রুশিবির ত্যাগ করেন টনি-সহ ছয় কূটনীতিক।
সূত্র: এনডিটিভি
ঢাকা/লিপি