চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে প্রায় দুই বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বোরোচর গ্রামে পানিতে পড়ে যায় ওই শিশু। পরে তাকে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত শিশুর নাম রবিউল। সে মতলব উত্তর উপজেলার বোরোচর গ্রামের জয়নাল আবেদীন ও নাসিমা আক্তার দম্পতির ছেলে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির উঠানে খেলছিল রবিউল। ওই সময় ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন মা নাসিমা। আর বাবা জয়নালও বাড়ির বাইরে ছিলেন। একপর্যায়ে শিশুটি বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। খোঁজাখুঁজির পর ওই পুকুরে শিশুটির ভাসমান দেহ দেখতে পান স্বজনেরা। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে স্বজনেরা মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। পরে সেখানে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে জরুরি বিভাগের সামনে চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন নাসিমা আক্তার। তিনি চিৎকার করে উপস্থিত স্বজনদের উদ্দেশে বলেন, ‘পানিতে ডুইবা আমার জাদু মরে নাই। তারে আমার কোলে দেও। অন্য হাসপাতালে নিয়া চিকিৎসা করামু। সুস্থ কইরা বাড়িত নিয়া ভাত খাওয়ামু। পোলা ছাড়া আমি ক্যামনে বাঁচুম।’

সন্তান হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন শিশুটির বাবা জয়নাল আবেদীনও। হাসপাতালের সামনে একটি অটোরিকশায় উঠতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভুলের লাইগা ছেলেডা মইরা গেল। এই দুঃখ ভুলুম ক্যামনে?’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরের ‘ক্ষুদে মেসি’ সোহানের দায়িত্ব নিল বিএনপি

চাঁদপুরের ‘ক্ষুদে মেসি’ হিসেবে খ্যাত অসাধারণ প্রতিভাবান ক্ষুদে ফুটবলার সোহানের দায়িত্ব নিয়েছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক চাঁদপুরে এসে ফুটবলের সরঞ্জাম ও নগদ অর্থ দিয়েছেন ৫ বছর বয়সী সোহানকে। 

আমিনুল হক বলেছেন, “সোহানের দায়িত্ব এখন থেকে বিএনপি নিয়েছে। তারেক রহমানের নির্দেশেই তার দায়িত্ব নেওয়া হলো। সোহানের বয়স ৭ বছর হওয়ার পর বিকেএসপি কিংবা যেকোন ভালো মানের ফুটবল ক্লাবে তাকে ভর্তি করা হবে।”

আরো পড়ুন:

বিএনপি ভোটে জিতলে তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী: হুমায়ূন কবির

রাজশাহী নগর বিএনপির সম্মেলনে তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন

তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে সোহানের ফুটবল খেলার দক্ষতা দেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশেই আমি দলের হয়ে সোহানের বাড়িতে ছুটে এসেছি। কিছু আর্থিক সহায়তা সোহানের জন্য দলের পক্ষে দেওয়া হলো। এখন থেকে প্রতি মাসে সোহানের জন্য আর্থিক সহায়তা পাঠানো হবে।”

আমিনুল হক আরো বলেন, “শুধু সোহান নয়, এরকম গ্রাম-গ্রামান্তরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে নিয়ে কাজ করার মানসিকতা আছে বিএনপির। যদি আগামীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় বিএনপি আসে, তাহলে অবশ্যই এর সুফল এই ক্ষুদে খেলোয়াড়রা পাবে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সোহানদের পাশে সব সময় থাকব, এ আশ্বাস দিচ্ছি।”

২০১৯ সালের ২২ আগস্ট চাঁদপুরের মতলব উত্তরের জহিরাবাদ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাড়ে পাঁচ আনী গ্রামের প্রধানিয়া বাড়িতে মো. সোহেল প্রধান ও রেহেনা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় সোহান প্রধান। সে এখন কেজি ওয়ানে পড়ে।

মাত্র আড়াই বছর বয়সে দাদা মৃত শাহ আলম প্রধান একটি ফুটবল কিনে দেন সোহানকে। সেটা দিয়েই হয় তার ‘পায়ে খড়ি’। প্রতিদিন বাবার কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে সোহান। 

মাত্র ছয় বছর বয়সে সোহানের ফুটবল খেলার স্কিল ও ড্রিবলিং দেখে অনেকেই অবাক হন। তার ড্রিবলিংয়ের একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা নজরে এসেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকের। 

সোহানের বাবা মো. সোহেল প্রধান বলেছেন, “আমি এই দেশে জন্ম নিয়ে সার্থক। আমার ছেলেকে আজকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়েছে। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই তারেক রহমান ও আমিনুল হককে। আমাদেরকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে, এটা কখনোই ভোলার নয়। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমার ছেলে একদিন অনেক বড় ফুটবল খেলোয়াড় হবে।” 

তিনি বলেন, “আমি ২৫ বছর ধরে সাইকেল মেকানিক হিসেবে কাজ করছি। এ আয় দিয়ে সংসার চালাচ্ছি। সোহানকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। সে বড় হয়ে একজন ভালো মানের ফুটবল খেলোয়াড় এবং দেশের সম্পদ হবে। কিন্তু, আর্থিক সঙ্কটে আমি ঠিকমতো সোহানের যত্ন নিতে পারছি না। তাই, সবার কাছে সহযোগিতা চাই, যাতে সোহানকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।”

শিশু সোহান বলে, “আমার বাবাই আমাকে ফুটবল খেলা শিখাচ্ছে। আমি নিয়মিত বাবার দোকানের সামনের রাস্তায় ও পাশের বালুর মাঠে ফুটবল খেলি। আমি যাতে একজন দক্ষ ফুটবল খেলোয়াড় হতে পারি, সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি।”

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেছেন, “সোহানের ফুটবল দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি অভিভূত। তার প্রতিভা যাতে কোনো সীমাবদ্ধতায় থেমে না যায়, সেজন্য তার ও তার পরিবারের পাশে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন থাকবে। তার জন্য কী করা যায়, সে বিষয়ে কাজ করব।”

ঢাকা/জয়/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁদপুরের ‘ক্ষুদে মেসি’ সোহানের দায়িত্ব নিল বিএনপি