Prothomalo:
2025-11-17@10:11:16 GMT

ফুলের সংশয়

Published: 9th, August 2025 GMT

এই অবেলায়

ফুলের মাঝখানে মৃত মথ থেমে আছে

আচ্ছন্নতা, প্ররোচনা

এই দুপুর, বিকেল কিংবা সন্ধ্যাও

শিমুল একগুচ্ছ

ফুলেদের ঘুরবার অতীত জানা নেই

যেন-বা নিয়তি বিশেষ নয়

নয় হারানো প্রণয়মায়া শুধুই ফিরে পাওয়ার ভেতর

আরোহণ ও বিরাজনে কী নিখুঁত ছাপা ভেতর!

এই মায়া মন ভরে লিখতে চাই

অভ্যন্তর জগতের সব

মেঘমন্দ্র কোনো পুষ্পরেণু নয়

আমি তবে ভ্রমণে কেন রেখে আসি

সুনীল উৎকণ্ঠা আমার—

যে উৎকণ্ঠা আমাকে দৃশ্যের ব্যবধান শিখিয়েছিল

শিখিয়েছিল একমাত্র চোখই তো জলের সন্ধিস্থল

চোখ তারে কোরো না অনুসরণ

ভাবো সে-ও তো

পাতালের দিকে উড়ে চলা পাখি সুপ্রধান

একটি ফড়িং খেলা করে

সেখানে চোখ উড়ে গেল অনর্থক

অথচ গতি তারও নিচে থাকতে পারে

এক নিরাকার পরম সত্তার

দেব-দেবীদের পৃথিবীতে

ও আত্মা আমার; তুমি কি তবে

শাশ্বত ও চৈতন্যের কারণ

কেননা সংকেতের আদৃত জুড়ে ছড়িয়েছে যত

অন্তিমের বেদনাব্যস্ত বাতাস

লিপ্ত ধূলির পথ

অবসন্ন রথের রজনী

যেখানে কোনো জিজ্ঞাসা নেই

নেই সূর্যাস্তের নিচে চাপা পড়া কোনো ছাতিম ফুলের ঘ্রাণ

তা বলাই বাহুল্য—বিচ্ছেদের ফুলগুলো বড় শীর্ণ

মুথাঘাসে একদল সান্ধ্য জোনাক

পৃথিবীর প্রথম বাতিটি জ্বালিয়ে দিয়েছিল

শুধু তারার আলোর পূর্বাভাসকে উসকে দিতে

কী তাহাদের বিস্ময় জানা হয় নাই

আমি গাছে হেলান দিয়ে সম্পৃক্ত হতে গিয়ে জেনেছি

মানুষের মতো গাছেদের বেঁচে থাকার জীবনে

কোনো প্রেমিক–প্রেমিকা নাই

চন্দ্র—প্রতাপে যদিও জেনে গেছি

প্রেম একটা ফুলের সাথে একটা প্রজাপতির

নৈমিত্তিক ঘটনা

তবে আমার কী সাধ্য আছে

জমানো দ্বিধার কাছে স্বপ্ন–চাওয়া

যতটা সম্ভব মুছে যাক বিরহের সুর

ফুলেদের ভাষায় বিরহ হয়তো দৈব্য আঁধারে

বাতাসনির্ভর এক সফর—

সেই সফরে পরাগায়নের গান

না হয় থাকুক একটি একলিঙ্গ ফুলের কাছে

কিছুটা সম্মোহন

যে হারায় নিয়ে দ্বৈতবাদ

তার কী কথা! মৃত্যুমুখী সেই তো সুন্দর

এই যে ভাবছি, বলেই

বিম্বাধর ফল সুন্দর, আছে ব্যথা

কিন্তু আমি বলব অনেক গল্প জমে আছে

কামিনীগাছটার বিচ্যুত সন্ধ্যায়

শূন্যতায় কেবল শূন্যতা

কথা আকীর্ণ হয়ে যায় অলৌকিকতায়

আজ বাতাসে অ্যালকোহল

দীর্ঘ পথ উৎস আর ধারা

দুপুর তাই এমন

চঞ্চল পাতারাও মন ভরে বেড়ে উঠছে

যেন সমূহ দ্বার নীত সম্ভাষণ

যতটা দাবি করছি, ইচ্ছেরা তত

অপ্রত্যাশিত থেকে যাচ্ছে

থেকে থেকে মনে পড়ছে

আমার জন্য কী তবে স্মৃতিই যথেষ্ট

সাক্ষাতের দুনিয়ায় আল্লাহ মেহেরবান

মিথ ও মৃত্যুর মধুবন

অন্তঃসুরে চেনা সব গান

ঘুমের ভেতর এত আকর্ষিক হয় কেন?

দুচোখ বন্ধ এই দেহ জমিন

একটি মেরুন নক্ষত্রের চাহনিতে

আকাশে বাড়িয়ে রেখেছি হাত

যদি মেঘ হতো স্বর্ণলতা, নিদেনপক্ষে বাড়াতাম বুক

একটুর জন্য খুব কাছে যাবার অপেক্ষায়

আমি তার দায় এড়াতাম

আজ ফিরে যেতে থামি, দেখি

মেঘ বাড়িয়েছে শাবক এক হাত

মানুষ কেন সমুদ্রে যায়?

মানুষের আছে নাকি অবসর

চাঁদের আলোয় জোয়ার-ভাটায়

দূরে যে সুন্দরের কুঞ্জন

জলের নকশা আর অথির বিন্যাস

সেখানে পৃথিবীর কবে থেকে

অরুণ মাঝিরা জামার ভেতর আঁকতে শিখেছিল

কম্পন রেখার অভিজ্ঞান

যদি ধরি উওলোফ ভাষা

ভাষার ভেতর ততটা অতীত বর্তমান নেই

মেঘের ছায়া এসে থেমে আছে অবিচলতায়

এইসব বিবশ দুপুর

পাতার হরণে উড়োপাতাদের শ্রদ্ধা অশেষ

হাতের সিগারেট পুড়ে যায়

এতক্ষণে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছ তুমি

ভাবছ দুপুর দু প্রহর

তোমার হাতঘড়ি হৃদয়ের পাশে রেখে

কোন রাগ মুছে যায়

কোন তারা নিভে যায় সুষুপ্ততায়

নিদ্রা ভেঙে যদি দেখি ক্রান্তদর্শী চাঁদ

হে আশ্চর্য দরবার

মধ্যরাত চোখ তুলে তাকানো যাবে না

কারণ করুণানির্ভর

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ভ তর

এছাড়াও পড়ুন:

জানমালের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়কে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অনলাইনে কর্মসূচি দেয়। এই কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা অব্যাহত আছে। জননিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা রয়েই গেছে। পুলিশ আশঙ্কা করছে, আগামীকাল (১৭ নভেম্বর) পর্যন্ত এ ধরনের চোরাগোপ্তা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটতে পারে। ফলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিক থেকে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আদৌ সেটা যথেষ্ট কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন ও সংশয় থেকে যাচ্ছে। 

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, মানিকগঞ্জ, বরগুনা ও গাজীপুরে চারটি বাসে ও আশুলিয়ায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়। ঢাকায় পাঁচ জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্প থেকে ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বাসে আগুন দিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় মানুষের ধাওয়ায় নদীতে পড়ে এক তরুণের মৃত্যু হয়। 

১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা দেন। আওয়ামী লীগ সেদিন অনলাইনে লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং ৭ নভেম্বর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছেন্ন কিছু নাশকতার ঘটনা শুরু হয়। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ২৯টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলপুরে একটি বাসে আগুন দিলে ঘুমিয়ে থাকা এক ব্যক্তি নিহত হন, আহত হন আরও একজন। মানিকগঞ্জে গভীর রাতে বাসে আগুন দিলে একজন গুরুতরভাবে দগ্ধ হন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চোরাগোপ্তা ককটেল বিস্ফোরণ ও ঝটিকা মিছিলও হয়েছে। ব্যাংক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাশকতার ঘটনাও ঘটেছে। 

সামগ্রিকভভাবে নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়ানো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও নাশকতাকারীদের ধরতে বিশেষ অভিযানের পরও নাশকতা থামানো যাচ্ছে না। ঢাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করায় নাশকতার ঘটনা কিছুটা কমলেও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে। ফলে যেসব জেলায় নাশকতার ঘটনা বেশি ঘটছে, সেসব জায়গায় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে হবে। 

কার্যক্রম নিষিদ্ধ কোনো রাজনৈতিক দলের আইনগতভাবে কর্মসূচি পালনের কোনো সুযোগ নেই। নাশকতা ঠেকাতে সরকারকে অবশ্যই কঠোর অবস্থান নিতে হবে। সেই দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। গত এক সপ্তাহে প্রায় ১৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে নাশকতা ঠেকানোর নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীদের যেভাবে মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে, তাতে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও বেড়েছে। 

বাংলাদেশের রাজনীতিতে কর্মসূচির নামে সহিংসতা, বাসে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা এবং এসব নাশকতা প্রতিরোধের নামে পাল্টা কর্মসূচি আকছার দেখা যায়। রাজনৈতিক দলগুলো নাগরিকদের জিম্মি করে কর্মসূচি পালন করতে অভ্যস্ত। এতে শেষ পর্যন্ত নাগরিকেরাই দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েন, নাশকতার আগুনে মৃত্যু হয়, সর্বস্ব হারান। এই ধারার সংঘাতময় রাজনীতির অবসান চান নাগরিকেরা। রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখা প্রয়োজন যে নাশকতা ঠেকানো ও নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারের দায়িত্ব পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। 

আইসিটিতে শেখ হাসিনার রায় ঘিরে নাগরিকদের মধ্যে যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তা প্রশমন করতে হবে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জানমালের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন