জাবিতে ছাত্রদলের কমিটিতে পদ পেয়েছে ছাত্রলীগসহ অপরাধীরা
Published: 9th, August 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৭টি হলের নতুন কমিটি ও বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে ঘোষিত কমিটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী, হত্যা মামলার তিন পলাতক আসামি, মাদকসেবী, ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত এবং বিভিন্ন সময় মাদক ও ছিনতাইয়ের দায়ে বহিষ্কৃতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ দিয়ে জাবিতে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুটি পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এবং জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দীন মোহাম্মদ বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
জাবিতে আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু
জাবিতে বামপন্থিদের মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনি
ঘোষিত দুই কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কমিটিতে পদ পেয়েছেন ২৩ জন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী, মাদকসেবী ছয়জন, ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে এক অভিযুক্ত, একজন ছিনতাইকারী এবং র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত তিনজন শিক্ষার্থী ।
বর্ধিত কমিটি এবং হল কমিটির পদধারীদের মধ্যে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন, যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে পদ পাওয়া ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাকুর বাপ্পী, সদস্য হিসেবে পদ পাওয়া ৪৫তম ব্যাচের আবু বক্কর সিদ্দিক সোহাগ, ৪৯তম ব্যাচের আল আমিন, সাবরিনা সুলতানা সুরভী, ৫০তম ব্যাচের সাইফ বিন মাহবুব, কাজী মৌসুমি আফরোজ, শাহাদাত হোসেন আকুল, শাবাব সবুজ অর্নব, জাহিদ খান, ফিরোজ আহমেদ রিমন, সোহাগ আহমেদ, ইমন মোল্লা, ৫১তম ব্যাচের রাশেদ ইসলাম, শিপন হোসেন, সতীর্থ বিশ্বাস বাধন, ইমরান নাজিজ, মো.
এদের মধ্যে যুগ্ম-আহ্বায়ক শাকুর বাপ্পি বিশ্ববিদ্যালয়ের কামাল উদ্দিন হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক সোহাগের নামে চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি, নিরাপত্তা কর্মীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে এবং তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
১০ নম্বর হলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন মোল্লা ছাত্রলীগ নেতা জোবায়েদ আশিকের অনুসারী ছিলেন। সদস্য আল আমিন ১০ নম্বর হল ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি করতেন এবং তিনি ছাত্রলীগ সেক্রেটারি হাবিবুর রহমানের অনুসারি ছিলেন।
ফজিলাতুন্নেসা হলের সেক্রেটারি সাবরিনা সুলতানা সুরভী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জমান সোহেলের অনুসারী, ১০ নম্বর হলের সভাপতি সাইফ বিন মাহবুব ছাত্রলীগ নেতা লিটনের অনুসারী, রোকেয়া হলের সভাপতি কাজী মৌসুমি আফরোজ ৫ আগস্টের পূর্বে রোকেয়া হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী, সদস্য শাহাদাত হোসেন আকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী, সদস্য শাবাব সবুজ অর্ণব ২১ নম্বর হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি করতেন ও হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী ছিলেন। শহীদ রফিক জব্বার হলের সভাপতি জাহিদ খানও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী শিপন হোসেন এবং সতীর্থ বিশ্বাস বাধন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। মাদক সেবনে যুক্ত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল।
সদস্য ইমরান নাজিজ ২১ নম্বর হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বহিরাগত চার স্কুলছাত্রকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করেছিল।
তাজউদ্দিন আহমেদ হলের সেক্রেটারি মো. হাসান মাহমুদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ নম্বর হল ছাত্রলীগে যুক্ত ছিলেন এবং সেক্রেটারি লিটনের অনুসারী ছিলেন। শহীদ সালাম-বরকত হলের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আলিফ হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন। কামাল উদ্দিন হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি খাইরুল ইসলাম নাহিদ ২১ নম্বর হল ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন এবং হল ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন।
কাজী নজরুল হলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাকিব মাওলা আল বেরুনী হল এবং সদস্য রাশেদ ইসলাম ভাসানী হল ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। মিজানুর রহমান ফায়েজের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অভিযুক্তদের পূনর্বাসনের অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, কমিটিতে পদ পেয়েছেন ভ্রূণহত্যায় অভিযুক্ত ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী সৈয়দ শাহ শাফায়েত ঋদ্ধ। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে প্রফেশনাল মাস্টার্সে অধ্যয়নরত আছেন। তার বিরুদ্ধে গত ৯ মে জাবির যৌন নিপীড়ন সেলে এক নারী শিক্ষার্থী বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম মোল্লা হত্যার মামলার তিন পলাতক আসামি হামিদুল্লাহ সালমান (সভাপতি, রবীন্দ্রনাথ হল ও বর্ধিত কমিটির সদস্য), রাজু আহমেদ (যুগ্ম আহ্বায়ক) ও মোহাম্মদ রাজন মিয়া (সদস্য) পদ পেয়েছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটজনের নাম উল্লেখ এবং আরো ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে এবং তাদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করে।
এছাড়াও কমিটিতে পদ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভজিৎ বিশ্বাস আব্দুস সায়েম, আশরাফুল ইসলাম শামিম। এদের মধ্যে শুভজিৎ বিশ্বাসকে শহীদ রফিক জব্বার হলে জুনিয়রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করে এবং কিছুদিন আগে ঢাকার একটি মন্দিরে নাশকতার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ছাড়া পেয়ে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। এছাড়া আব্দুস সায়েম ও আশরাফুল ইসলাম শামিমকে র্যাগিংয়ের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সতর্ক করে এবং অর্থদণ্ড দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভগের শিক্ষার্থী সাদিক ইয়াসির গত ৪ আগস্ট কাজী নজরুল ইসলাম হলে মাদক সেবনকালে হাতেনাতে আটক হন। সদস্য পদ পাওয়া ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. জেরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবনকালে আটক হন। এছাড়া শহীদ রফিক-জব্বার হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবেশ আল মুবিন নাফির নামে মাদক গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ড্রপআউট শিক্ষার্থী।
ঢাবিতে হল কমিটি ঘোষণার পর পদ পাওয়া অনেকের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে, যা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাবিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে কি না জানতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হয়। কিন্তু তারা কোনো মাধ্যমেই সাড়া দেননি।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন র অন স র ছ ত রদল র আহ ব য ক র হল র স ল ইসল ম র রহম ন ত কম ট কম ট ত সদস য আহম দ গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
জাবিতে ছাত্রদলের কমিটিতে পদ পেয়েছে ছাত্রলীগসহ অপরাধীরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৭টি হলের নতুন কমিটি ও বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে ঘোষিত কমিটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী, হত্যা মামলার তিন পলাতক আসামি, মাদকসেবী, ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত এবং বিভিন্ন সময় মাদক ও ছিনতাইয়ের দায়ে বহিষ্কৃতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ দিয়ে জাবিতে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুটি পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এবং জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দীন মোহাম্মদ বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
জাবিতে আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু
জাবিতে বামপন্থিদের মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুয়োধ্বনি
ঘোষিত দুই কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কমিটিতে পদ পেয়েছেন ২৩ জন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী, মাদকসেবী ছয়জন, ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে এক অভিযুক্ত, একজন ছিনতাইকারী এবং র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত তিনজন শিক্ষার্থী ।
বর্ধিত কমিটি এবং হল কমিটির পদধারীদের মধ্যে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন, যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে পদ পাওয়া ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাকুর বাপ্পী, সদস্য হিসেবে পদ পাওয়া ৪৫তম ব্যাচের আবু বক্কর সিদ্দিক সোহাগ, ৪৯তম ব্যাচের আল আমিন, সাবরিনা সুলতানা সুরভী, ৫০তম ব্যাচের সাইফ বিন মাহবুব, কাজী মৌসুমি আফরোজ, শাহাদাত হোসেন আকুল, শাবাব সবুজ অর্নব, জাহিদ খান, ফিরোজ আহমেদ রিমন, সোহাগ আহমেদ, ইমন মোল্লা, ৫১তম ব্যাচের রাশেদ ইসলাম, শিপন হোসেন, সতীর্থ বিশ্বাস বাধন, ইমরান নাজিজ, মো. হাসান মাহমুদ, আব্দুল্লাহ আলিফ, খাইরুল ইসলাম নাহিদ, মো. রাকিব মাওলা, রাশেদ ইসলাম, মিজানুর রহমান ফায়েজ এবং ৫২তম ব্যাচের নিয়ামুল মেরাজ মাহিন।
এদের মধ্যে যুগ্ম-আহ্বায়ক শাকুর বাপ্পি বিশ্ববিদ্যালয়ের কামাল উদ্দিন হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক সোহাগের নামে চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি, নিরাপত্তা কর্মীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে এবং তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
১০ নম্বর হলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন মোল্লা ছাত্রলীগ নেতা জোবায়েদ আশিকের অনুসারী ছিলেন। সদস্য আল আমিন ১০ নম্বর হল ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি করতেন এবং তিনি ছাত্রলীগ সেক্রেটারি হাবিবুর রহমানের অনুসারি ছিলেন।
ফজিলাতুন্নেসা হলের সেক্রেটারি সাবরিনা সুলতানা সুরভী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জমান সোহেলের অনুসারী, ১০ নম্বর হলের সভাপতি সাইফ বিন মাহবুব ছাত্রলীগ নেতা লিটনের অনুসারী, রোকেয়া হলের সভাপতি কাজী মৌসুমি আফরোজ ৫ আগস্টের পূর্বে রোকেয়া হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী, সদস্য শাহাদাত হোসেন আকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী, সদস্য শাবাব সবুজ অর্ণব ২১ নম্বর হলের ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি করতেন ও হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী ছিলেন। শহীদ রফিক জব্বার হলের সভাপতি জাহিদ খানও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী শিপন হোসেন এবং সতীর্থ বিশ্বাস বাধন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। মাদক সেবনে যুক্ত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল।
সদস্য ইমরান নাজিজ ২১ নম্বর হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বহিরাগত চার স্কুলছাত্রকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করেছিল।
তাজউদ্দিন আহমেদ হলের সেক্রেটারি মো. হাসান মাহমুদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ নম্বর হল ছাত্রলীগে যুক্ত ছিলেন এবং সেক্রেটারি লিটনের অনুসারী ছিলেন। শহীদ সালাম-বরকত হলের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আলিফ হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন। কামাল উদ্দিন হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি খাইরুল ইসলাম নাহিদ ২১ নম্বর হল ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন এবং হল ছাত্রলীগের ব্লকে থাকতেন।
কাজী নজরুল হলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাকিব মাওলা আল বেরুনী হল এবং সদস্য রাশেদ ইসলাম ভাসানী হল ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। মিজানুর রহমান ফায়েজের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অভিযুক্তদের পূনর্বাসনের অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, কমিটিতে পদ পেয়েছেন ভ্রূণহত্যায় অভিযুক্ত ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী সৈয়দ শাহ শাফায়েত ঋদ্ধ। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে প্রফেশনাল মাস্টার্সে অধ্যয়নরত আছেন। তার বিরুদ্ধে গত ৯ মে জাবির যৌন নিপীড়ন সেলে এক নারী শিক্ষার্থী বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম মোল্লা হত্যার মামলার তিন পলাতক আসামি হামিদুল্লাহ সালমান (সভাপতি, রবীন্দ্রনাথ হল ও বর্ধিত কমিটির সদস্য), রাজু আহমেদ (যুগ্ম আহ্বায়ক) ও মোহাম্মদ রাজন মিয়া (সদস্য) পদ পেয়েছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটজনের নাম উল্লেখ এবং আরো ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে এবং তাদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করে।
এছাড়াও কমিটিতে পদ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভজিৎ বিশ্বাস আব্দুস সায়েম, আশরাফুল ইসলাম শামিম। এদের মধ্যে শুভজিৎ বিশ্বাসকে শহীদ রফিক জব্বার হলে জুনিয়রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করে এবং কিছুদিন আগে ঢাকার একটি মন্দিরে নাশকতার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ছাড়া পেয়ে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। এছাড়া আব্দুস সায়েম ও আশরাফুল ইসলাম শামিমকে র্যাগিংয়ের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সতর্ক করে এবং অর্থদণ্ড দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভগের শিক্ষার্থী সাদিক ইয়াসির গত ৪ আগস্ট কাজী নজরুল ইসলাম হলে মাদক সেবনকালে হাতেনাতে আটক হন। সদস্য পদ পাওয়া ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. জেরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবনকালে আটক হন। এছাড়া শহীদ রফিক-জব্বার হলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবেশ আল মুবিন নাফির নামে মাদক গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ড্রপআউট শিক্ষার্থী।
ঢাবিতে হল কমিটি ঘোষণার পর পদ পাওয়া অনেকের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে, যা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাবিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে কি না জানতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হয়। কিন্তু তারা কোনো মাধ্যমেই সাড়া দেননি।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী