রাজশাহী কলেজের সামনে এক মাস ধরে চলছে ফুটপাতের স্ল্যাব চুরির ঘটনা আর এর করুণ পরিণতি হলো একজন শিক্ষার্থীর নালায় পড়ে গুরুতর আহত হওয়া। সম্প্রতি সেখানে একই ধরনের আরও ঘটনা ঘটেছে। এটি আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার অবহেলা ও উদাসীনতার উদাহরণ। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে এমন ঝুঁকিপূর্ণ ফুটপাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, প্রায় এক মাস রাজশাহী কলেজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে, যেখানে হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে, সেখানে ফুটপাতের স্ল্যাব চুরি হচ্ছে। প্রায় ৫০০ মিটার সড়কের দুই পাশে থাকা ফুটপাত থেকে অন্তত ২০টি স্ল্যাব চুরি হয়ে গেছে। গত বছরও শহরের বিভিন্ন রাস্তা থেকে স্ল্যাব ও লোহার ফ্রেম চুরি হয়েছিল, কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। এবারও স্ল্যাব চুরির ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে জানা গেছে, কিন্তু সেটি সমস্যার সমাধান করতে পারেনি।
নালায় পড়ে আহত হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। স্থানীয় লোকজন গত ১০ দিনে অন্তত চারজনকে এই ফুটপাতে পড়ে যেতে দেখেছেন। এটি স্পষ্ট করে যে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে এবং কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পরও কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একজন কলেজের ফটকের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি নিজের ছেলেকে আহত হওয়ার পর নিজেই চোর ধরার জন্য পাহারা দিচ্ছেন, কিন্তু তাতেও কোনো ফল হচ্ছে না।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল অবিলম্বে এই অরক্ষিত ফুটপাত মেরামত করা এবং স্ল্যাব চুরি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। শুধু কাগজে-কলমে ব্যবস্থা নিয়ে নাগরিকদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলে রাখা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য শহরে আসে, কিন্তু শহরের অব্যবস্থাপনা তাকে হাসপাতালের বিছানায় ঠেলে দেয়, এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে?
এ ঘটনা একটি সতর্কতা। অবিলম্বে রাজশাহী কলেজের সামনের ফুটপাত সংস্কার করা হোক। একই সঙ্গে নগরজুড়ে এ ধরনের অরক্ষিত স্থানগুলো চিহ্নিত করে জরুরি ভিত্তিতে সেগুলোর মেরামতের ব্যবস্থা করা হোক। নগর কর্তৃপক্ষের প্রধান দায়িত্ব নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই দায়িত্ব পালনে তাদের ব্যর্থতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। স্ল্যাব চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর হতে হবে। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিন নিয়ে বের হয়ে অনেক অভিযুক্ত ব্যক্তি একই কাজে জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের কীভাবে এ অপরাধকর্ম থেকে বিরত রাখা যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ র স মন ফ টপ ত কল জ র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
টের স্টেগেনের অধিনায়কত্ব কেড়ে নিল বার্সা, নতুন অধিনায়ক কে
ঝামেলার শুরুটা করেছিলেন মার্ক–আন্দ্রে টের স্টেগেন।
চোটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে মাঠের বাইরে বার্সেলোনার জার্মান গোলকিপার। বার্সেলোনা চেয়েছিল, লা লিগার চোট–বদলি নিয়মের অধীনে নতুন গোলকিপার হোয়ান গার্সিয়াকে নিবন্ধন করাতে। কিন্তু টের স্টেগেন সাফ জানিয়ে দেন, নিজের চিকিৎসা–সংক্রান্ত কোনো তথ্য তিনি লা লিগার কাছে দেবেন না। এতে গত জুনে এস্পানিওল থেকে আনা গোলকিপার হোয়ান গার্সিয়াকে নিয়ে বার্সার পরিকল্পনা আর এগোয়নি।
আরও পড়ুনবিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনা দলের কে কত গোল করেছেন, ট্রফি জিতেছেন কে বেশি১ ঘণ্টা আগেএবার পাল্টা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিল বার্সা। গতকাল টের স্টেগেনের কাছ থেকে অধিনায়কত্ব কেড়ে নিয়েছে কাতালান ক্লাবটি। এ নিয়ে বার্সার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মার্ক–আন্দ্রে টের স্টেগেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কার্যক্রম শুরুর পর এবং বিষয়টি পুরোপুরি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পরিচালক পর্ষদ ও কোচিং স্টাফের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে ক্লাব সাময়িকভাবে তাকে মূল দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ এ সময়টায় বর্তমান সহ–অধিনায়ক রোনালদ আরাউহো প্রথম অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছে বার্সেলোনা।
হাঁটুর চোটে গত মৌসুমে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন টের স্টেগেন। গত মাসের শেষ দিকে পিঠে অস্ত্রোপচার হয়। তখন জানানো হয়, অন্তত তিন মাস বাইরে থাকতে হবে ৩৩ বছর বয়সী ফুটবলারকে। লা লিগার নিয়ম অনুযায়ী, কোনো খেলোয়াড় যদি চার মাসের বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকেন, তাহলে তাঁর বার্ষিক বেতনের ৮০ শতাংশ বেতন বাবদ ক্লাবের মোট খরচের হিসাব থেকে বাদ দেওয়া যাবে।
লা লিগার নিয়ম অনুযায়ী, সব দলকে বেতন সীমা নীতি মেনে চলতে হয়। টের স্টেগেন বার্সায় সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া খেলোয়াড়দের একজন। তাঁর বেতনের ৮০ শতাংশ হিসাব থেকে বাদ দিতে পারলে ক্লাবটির জন্য বেতন সীমা নীতি মেনে অন্য একাধিক খেলোয়াড় নিবন্ধন করানোর পথটা সহজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনচীন সফর বাতিল করে অক্টোবর ও নভেম্বরে যাদের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা৫ ঘণ্টা আগেবার্সা চেয়েছিল, টের স্টেগেনের বেতনের কিছু অংশ ব্যবহার করে চোট–বদলি নিয়মে একজন গোলকিপার লা লিগায় নিবন্ধন করাতে। কিন্তু ঝামেলা হলো, চোট-বদলির নিয়ম ব্যবহার করতে হলে আগে চোট পাওয়া খেলোয়াড়ের লিখিত সম্মতি লাগে। এতে তাঁর স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করতে পারে লা লিগা। কিন্তু টের স্টেগেন এই তথ্য দিতে রাজি না হওয়ায় চোট–বদলি নিয়ম কাজে লাগাতে পারবে না বার্সা। আর এখন বার্সেলোনার যা আর্থিক অবস্থা, টের স্টেগেনের বেতনের বড় অংশ হিসাব থেকে বাদ দিতে না পারলে লিগে তারা নতুন কোনো খেলোয়াড়কে নিবন্ধন করাতে পারবে না। টের স্টেগেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি মাত্র তিন মাস মাঠের বাইরে থাকবেন। লা লিগার নিয়ম অনুযায়ী, অন্তত চার মাস মাঠের বাইরে থাকলে সেটাকে দীর্ঘমেয়াদি চোট হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
টের স্টেগেনের সঙ্গে বার্সার এই ঝামেলা ক্লাবটির আর্থিকভাবে ভোগান্তিরও একটি উদাহরণ। কয়েক বছর ধরেই আর্থিক সমস্যায় ভুগে নতুন খেলোয়াড় সই করানো নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে বার্সাকে।
লা লিগার নতুন মৌসুমে বার্সেলোনা প্রথম ম্যাচটা খেলবে ১৬ আগস্ট, মায়োর্কার বিপক্ষে। কিন্তু এর আগে নতুন আনা গোলরক্ষক গার্সিয়াকে নিবন্ধন করাতে না পারলে ভালো ঝামেলায় পড়বেন বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক। ইনাকি পেনা এখন দলে একমাত্র ফিট গোলকিপার, যিনি লিগে নিবন্ধিত। আরেক গোলকিপার ভয়েচেক সেজনিরও নিবন্ধন বাকি।