চারুকলায় বর্ষা উৎসব ঘিরে প্রাণের মেলা
Published: 11th, August 2025 GMT
বর্ষার আবহে ঢাকার চারুকলার বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হলো নৃত্যানুষ্ঠান ‘ঘনঘটা’।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নৃত্যশিল্পী অর্থী আহমেদের নির্দেশনায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে অর্থী আহমেদ ডান্স একাডেমি।
গত ৮ আগস্ট খোলা আকাশের নিচে মঞ্চস্থ এই পরিবেশনায় অংশ নেন ১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সী মোট ১১০ জন শিল্পী। তাদের মধ্যে ছিলেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, গবেষক, সাংবাদিক, শিক্ষক, সমাজকর্মী, গৃহিণী ও শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার এবং লিঙ্গের মানুষ।
আয়োজকরা জানান, ‘ঘনঘটা’ কেবল একটি নৃত্যপ্রযোজনা নয়, বরং এটি নতুন করে শুরু করার উৎসব—যেখানে বয়স কোনো বাধা নয়, আর মনের ভেতরে চেপে রাখা স্বপ্নকে ডানা মেলতে দেওয়া হয়। গ্ল্যামারের বাহুল্য এড়িয়ে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে অনুষ্ঠিত এ পরিবেশনায় ফুটে উঠেছে আবেগ, সতেজ সৌন্দর্য ও নিবিড় অনুভব।
অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণকারীরা কেউ পেশাদার নৃত্যশিল্পী নন; বরং নিছক শখ থেকেই নাচের প্রতি তাদের এই ভালোবাসা। আয়োজকদের ভাষায়, সমাজের চিরাচরিত ধারণা ভেঙে নিজের ইচ্ছেগুলোকে মুক্তি দেওয়ার উৎসবই ছিল ‘ঘনঘটা’।
ঢাকা/সুমি/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব
অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।
হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।
নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।
আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।
অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।
লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।
সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।
শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।