সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন আদালত। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তাকে সশরীর আদালতে হাজির হয়ে মামলার অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকার সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মাঈন উদ্দিন চৌধুরী।

এডিসি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন আদালত। ১৪ সেপ্টেম্বর আদালত তাঁকে সশরীর হাজির হতে বলেছেন।

এক যুগ পর এই হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৪ নভেম্বর মামলার আগের তদন্ত সংস্থা র‍্যাবের কাছ থেকে নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পিবিআই। সংস্থাটি এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।

এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

আজিজুল হক। তিনি গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘র‍্যাবের কাছ থেকে মামলাসংশ্লিষ্ট সব কাগজপত্র বুঝে পেয়েছি। তদন্তকাজ নতুন করে শুরু করেছি।’

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে গতকাল এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন ছিল। কিন্তু পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১২০ বার পেছানো হয়।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ও রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন।

সাগর–রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১২০ বার পেছাল২২ ঘণ্টা আগে

তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র‍্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে র‍্যাব আদালতকে জানিয়েছিল, সাগর–রুনির বাসা থেকে জব্দ করা আলামতের ডিএনএ পর্যালোচনায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুরুষের উপস্থিতি মিলেছে। অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুরুষকে শনাক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিসেস (আইএফএস) ল্যাবে ডিএনএ পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে তাঁদের ছবি তৈরির চেষ্টা চলছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএ ল্যাবের ফলাফল জেনেছে র‍্যাব। তবে অজ্ঞাতপরিচয় দুজনের ডিএনএ থেকে ছবি তৈরির সন্তোষজনক ফল আসেনি।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে দুজন জামিনে, অন্য ছয়জন কারাগারে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক তদন ত র ড এনএ

এছাড়াও পড়ুন:

কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়াল আদালতে হাজিরা দিলেন ইনু, মেনন, পলকসহ ৯ আসামি

সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুসহ ৯ জন কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান সোমবার ভার্চ্যুয়ালি তাঁদের হাজিরা নেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. মাঈন উদ্দিন চৌধুরী।

পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভার্চ্যুয়ালি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেকমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানসহ ৯ জন।

আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ অনুযায়ী ভার্চ্যুয়াল আদালত চালুর বিষয়ে ৬ আগস্ট ঢাকার সিএমএম মোস্তাফিজুর রহমান অফিস আদেশ জারি করেন। সেই আদেশে বলা হয়, ঢাকার সিএমএমসহ বিভিন্ন আদালতে চাঞ্চল্যকর মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় প্রতিদিন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রচুরসংখ্যক আসামিকে বিভিন্ন যানবাহনে আনা–নেওয়া করা হয়। এই আসামিদের মধ্যে জঙ্গিসহ ভয়ংকর সন্ত্রাসী এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত আসামিরা রয়েছেন। এই আসামিদের আদালতে আনা–নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রায়ই নিরাপত্তাঝুঁকি দেখা যায়।

এই আসামিদের প্রতি জনগণের প্রচণ্ড ক্ষোভ থাকায় জনগণ আদালত প্রাঙ্গণে প্রায়ই তাঁদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। এমন পরিস্থিতি অবসানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচার শাখার বিজ্ঞপ্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন অনুযায়ী অডিও, ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ, মামলার শুনানির নির্দেশনা রয়েছে। ওই আইন অনুযায়ী ঢাকার সিএমএম আদালতের ২৮ নম্বর আদালতের এজলাস কক্ষ ডিজিটাল কোর্ট রুম হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ জন্য জুম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ২৮ নম্বর আদালতে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবারও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, হাসানুল হক ইনুসহ বেশ কয়েকজন আসামির ভার্চ্যুয়ালি হাজিরা শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

জানতে চাইলে জুনাইদ আহ্‌মেদ পলকের আইনজীবী ফারজানা রহমান ও আনিসুল হকের আইনজীবী আসিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে তাঁদের মক্কেলদের হাজিরা দেওয়ার তথ্য জানা নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়াল আদালতে হাজিরা দিলেন ইনু, মেনন, পলকসহ ৯ আসামি
  • সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১২০ বার পেছাল
  • চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো মোজাম্মেল বাবুকে