মহাসড়কের পাশে পড়ে ছিল মোটরসাইকেলচালকের মরদেহ। শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থাকায় প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা ছিল, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা গেছেন। তখন থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। তবে সাত মাস পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা গেছে, তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গতকাল সোমবার তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে মাগুরায় এ ঘটনা ঘটে। পরদিন ভোরে সদর উপজেলার জাগলা চারা বটতলা এলাকায় মাগুরা-যশোর মহাসড়কের পাশ থেকে রফিকুল ইসলাম (৪০) নামের ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি সদর উপজেলার গোয়ালবাড়ি গ্রামের প্রয়াত আক্কাস মোল্যার ছেলে। রফিকুল জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক লীগের সহপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম দিনে কাজ করার পাশাপাশি রাতে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করতেন। ঘটনার আগের দিন রাত আটটার দিকে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। পরদিন ভোরে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি পুলিশ। স্বজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তিনি আগে স্ট্রোক করেছেন। এ জন্য পুলিশ ধারণা করে, স্ট্রোক করেই হয়তো মারা গেছেন। তবে গত সপ্তাহে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

বিষয়টি জানার পর গত রোববার নিহতের স্ত্রী স্বপ্না খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী রাতে যাঁদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন, এমন ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মামলার পর সন্দেহভাজন হিসেবে পৌরসভার পারলা বিশ্বাসপাড়ার রুস্তম বিশ্বাসের ছেলে মোস্তাক বিশ্বাস (৪৫), জাগলা উত্তর পাড়ার একাব্বর মোল্লার ছেলে আনিসুর রহমান (৪৭) ও একই গ্রামের একলাছ উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম (৪০) নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

নিহতের স্বজনেরা জানান, জাগলা এলাকায় রাতে জুয়া খেলা হতো। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক আসতেন। সেখানে লোক আনা-নেওয়া করতেন রফিকুল ইসলাম। সেখানে কোনো বিষয় নিয়ে বিরোধ থেকে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিহতের স্ত্রী মামলা করেছেন। সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। কেন বা কারা তাঁকে হত্যা করেছে, এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার হওয়া যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হত র স ল ইসল ম র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

চোর সন্দেহে ৩ জনকে গণপিটুনি, একজনের চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা

মাদারীপুরে চোর সন্দেহে তিন জনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। তাদের মধ্যে একজনের দুই চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়। এতে তার দুটি চোখই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রবিবার (১০ আগস্ট) ভোররাতে সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম মাঠ বাঘাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

তিনজন হলেন- ওই এলাকার ওয়াজেদ শেখের ছেলে জাকির শেখ (৫০), একই এলাকার আলতা মাতুব্বরের ছেলে ইসরাফিল মাতুব্বর (৪০) এবং শ্রীনদী রায়েরকান্দি গ্রামের সিরাজ শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার (২৭)।

আরো পড়ুন:

কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে নির্যাতনের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

গাজীপুরে সাবেক সিভিল সার্জনের বাড়িতে ডাকাতি

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুরি-ডাকাতি রোধে পশ্চিম মাঠ বাঘাবাড়ি এলাকায় নিয়মিত পাহারা দেন স্থানীয় যুব সমাজ। রবিবার ভোররাতে ওই তিনজনের রহস্যজনক চলাফেরা দেখে ধাওয়া দেয় এলাকাবাসী। পরে তিনজনকে আটক করে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এ সময় জাকির শেখের দুই চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করে। এর মধ্যে গুরুতর আহত জাকির শেখকে প্রথমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

মাদারীপুরে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, ‘‘এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/বেলাল/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় টাকা চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, আটক ৩
  • মুরগির ডাক শুনে ঘরের দরজা খুলতেই খুন হন জসীম
  • স্ত্রীর চরিত্র খারাপ বলায় পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হত্যা
  • চোর সন্দেহে ৩ জনকে গণপিটুনি, একজনের চোখ তুলে ফেলার চেষ্টা