বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২০২৪ সালে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা। আর দলটি এ বছর ব্যয় দেখিয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে ২০১৩ সালে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। এরপর চলতি বছর নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় এক যুগ পর আবার হিসাব দিল দলটি। গত ২৯ জুলাই জামায়াত এ হিসাব দেয়।

এর আগে ২৭ জুলাই আয়ে–ব্যয়ের হিসাব দেয় বিএনপি। সেই হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপির মোট আয় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। একই সময়ে দলটির ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা। এই অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা আছে।

ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা জানান, ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২৮টি দল আয়–ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে। এর মধ্যে জামায়াতের আয় ও ব্যয় অন্য সব দলের চেয়ে বেশি।

২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির আয় হয়েছে ২ কেটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা; দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। দলের হিসাবে জমা আছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।

এ বছর আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয় করেছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪৪ টাকা। গণ অধিকার পরিষদের আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮ টাকা।

ইসি সূত্র জানায়, বাকি দলগুলোর আয়-ব্যয় জামায়াতের চেয়ে অনেক কম।

দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ভোটে না থাকলেও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীও ঘোষণা করে দিয়েছে দলটি। গত বছরের ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ের নির্বাচনী তৎপরতায় ব্যয়ের প্রতিফলনও রয়েছে অডিট রিপোর্টে।

কোন খাতে কত আয় জামায়াতের

জামায়াতের জমা দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, দলের কর্মী ও সদস্যদের দেওয়া চাঁদা থেকে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা থেকে এসেছে ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

কোন খাতে কত ব্যয়

জামায়াতে ইসলামী বলেছে, বিগত বছরে তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে কর্মীদের বেতন–ভাতা ও বোনাসে, ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা।

বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।

প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা।

ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল খ ৩৮ হ জ র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%

এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের

থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।

থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।

সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এফএওর সূচক কমেছে

প্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।

চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের

অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নীরবতা ভেঙে হঠাৎ রাজনীতিকে ‘না’ বলে দিলেন শমসের মুবিন চৌধুরী
  • পাড়ার মঞ্চ থেকে বড় পর্দায় 
  • বিকল্প শক্তির উত্থানে নভেম্বরের শেষে ‘জাতীয় কনভেনশন’ করবে বাম ঘরানার দলগুলো
  • থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%