টাঙ্গাইলে ফারুক হত্যা: খালাসপ্রাপ্ত ১০ আসামিকে আত্মসমর্পণের নিরদে
Published: 12th, August 2025 GMT
টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাইসহসহ খালাসপ্রাপ্ত ১০ আসামিকে নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং বিচারপতি মো. সগির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ গত ২৩ জুলাই এই আদেশ দেন। সেইসঙ্গে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার নথিও তলবের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
খালাসপ্রাপ্ত ১০ আসামির মধ্যে আমানুর রহমান খান রানার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা রয়েছেন। অন্যরা হলেন, সানোয়ার হোসেন সানু, নাসির উদ্দিন নূরু, বাবু, ফরিদ হোসেন, মাসুদুর রহমান, আলমগীর হোসেন চাঁন।
আরো পড়ুন:
বাবাকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলায় ছেলে গ্রেপ্তার
স্ত্রী হত্যার দায়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার আমৃত্যু কারাদণ্ড
হাইকোর্টের এই আদেশ রবিবার (১১ আগস্ট) ডাকযোগে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এবং চিফ জুডিশিয়াল আদালতে পৌঁছায়। তবে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিষয়টি জানা যায়। উভয় আদালতের সংশ্লিষ্ট বিভাগ হাইকোর্টের আদেশের কপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ফারুক আহমেদের ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন বলেন, ‘‘গত ২ ফেব্রুয়ারি নিন্ম আদালতে মামলার রায় হয়। সেখানে দুইজন আসামির যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ হয়। মামলার মূল আসামি সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাইসহ ১০ আসামি বেকসুর খালাস পান। এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিলের উদ্যোগ নেয়নি। তাই আমি নিজে উচ্চ আদালতে আপিলের উদ্যোগ নিয়েছি। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটরি অনুবিভাগ আমাকে গত ২৬ জুন ‘নিজ দায়িত্বে ও নিজ খরচে’ ফৌজদারি রিভিশন মামলা দায়েরের অনুমতি দেয়। অনুমোদন পাওয়ার পর হাইকোর্টে আপিল দায়ের করি।’’
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুলাই বিচারপতি মো.
টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান বহুল আলোচিত ফারুক হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মোহাম্মদ আলী ও কবির হোসেন নামক দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। মোহাম্মদ আলী ১০১৪ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ফারুক হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তার জবানবন্দিতে এই হত্যার সঙ্গে আমানুর রহমান খান রানা ও তার ভাইদের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তিনি পলাতক রয়েছেন। অপর দন্ডিত কবির হোসেন ২০১৪ সাল থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
ঢাকা/কাওছার/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আম ন র রহম ন খ ন র ন ফ র ক আহম দ ব চ রপত
এছাড়াও পড়ুন:
উখিয়ায় একে-৪৭সহ তরুণের আত্মসমর্পণ, বিজিবি বলছে আরাকান আর্মির সদস্য
কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে অস্ত্রসহ এক তরুণ আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে তিনি বিজিবি সদস্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
বিজিবি বলছে, আত্মসমর্পণ করা তরুণ সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্য। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের একটি ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর কাছে একটি একে-৪৭ রাইফেল, দুটি ম্যাগাজিন ও ৫২ রাউন্ড গুলি ছিল। আরাকান আর্মির ওই সদস্য নিজেকে জীবন তঞ্চঙ্গ্যা (২১) নামে পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গর্জবুনিয়া গ্রামে বলে দাবি করছেন তিনি।
বিজিবি উখিয়া ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক দাবি করেছেন। তাঁর পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাই করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছেন। তাঁর দাবি, ওই ক্যাম্প থেকে আরও অন্তত ৩০০ আরাকান আর্মি সদস্য পালিয়েছেন, যাঁদের কেউ কেউ যেকোনো সময় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারেন।
বিজিবি জানিয়েছে, অস্ত্র ও গুলিসহ ওই ব্যক্তিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং উখিয়া থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে থেমে থেমে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, আরাকান আর্মির সঙ্গে আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) বা আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
বিজিবি কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম বলেন, শূন্যরেখা থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে গোলাগুলি হয়েছে। তবে কোনো গুলি বাংলাদেশের ভেতরে আসেনি।