১০ মাসেও উদ্ধার হয়নি সিসি ক্যামেরার ডিভিআর
Published: 13th, August 2025 GMT
রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় একটি আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে মারধরের পর জমির মালিকের ছেলে তানজিল জাহান ইসলাম ওরফে তামিম (৩৪) মারা যান। তিনি দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা ছিলেন। নিহত যুবকের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু ঘটনার ১০ মাসেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি।
পুলিশ সূত্র বলছে, মারধরের ভিডিওর যে ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল, সেটির ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার বা ডিভিআর গায়েব করা হয়েছে। সেটা এখনো উদ্ধার করা যায়নি। এটা উদ্ধার হলে এ হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মারধরের ভিডিওর ফুটেজ উদ্ধার না হলেও মামলার বাদীর বাসার সিসি ক্যামেরার ডিভিআর উদ্ধার করা হয়েছে। সেটার ফরেনসিকের জন্য আদালতের মাধ্যমে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) পাঠানো হয়েছে। তবে সিআইডি থেকে এখনো প্রতিবেদন আসেনি।
হাতিরঝিল থানা–পুলিশের পর মামলাটি এখন তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো.
গত বছরের ১০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরা মহানগর প্রজেক্টের বক্ল-ডির নির্মাণাধীন ভবনের অষ্টম তলার করিডরে জমির মালিক সুলতান আহমেদ ও তাঁর ছেলে ও আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ভাগাভাগি নিয়ে এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে হামলায় জমির মালিকের ছেলে তানজিল আহত হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
ঘটনার এক দিন পর হাতিরঝিল থানায় ১৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুনকে। মামলায় তিন নম্বর আসামি করা হয় প্লিজেন্ট প্রোপার্টিজ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএনপির নেতা শেখ রবিউল আলমকে। এ ঘটনার পর গত বছরের ১৪ অক্টোবর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলমের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পিবিআইয়ে হস্তান্তরের আগে মামলাটি তদন্ত করেছে হাতিরঝিল থানা–পুলিশ। হাতিরঝিল থানার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আরাফাত বিন ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের অনেকেই এখন জামিনে রয়েছেন।
ফ্ল্যাট নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জমির মালিক সুলতান আহমেদের। তবে মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুনকে। আবাসন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাঁর শ্বশুরের কেনা একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তিনি। মোহাম্মদ মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফ্ল্যাট নিয়ে জমির মালিকের সঙ্গে আবাসন প্রতিষ্ঠানের ঝামেলা। ঘটনার সময় আমি আমার ফ্ল্যাটের ভেতরে ছিলাম। কিন্তু মামলায় আমাকে আসামি করা হয়েছে। পরে আমার শ্বশুরের ফ্ল্যাটটিও জোর করে দখল করে নেওয়া হয়েছে।’ তাঁর দাবি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিও তাঁর বাসার ক্যামেরার। ঘটনার দিন বাসার দরজা ভেঙে সিসি ক্যামেরার ডিভিআর জোর করে নিয়ে গেছে। এরপর তাঁকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ডিভিআরটি উদ্ধার করলে এ হত্যা মামলার রহস্য বেরিয়ে আসবে। এই ডিভিআর উদ্ধারে তাঁর স্ত্রী নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে আদালতে অপর একটি মামলা করেছেন।
ছেলে হত্যা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী নিহতের বাবা সুলতান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতি তিনি জানেন না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক তদন ত কর ড ভ আর ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে এসআইকে ছুরিকাঘাত করে পালাল আসামি, আটক ১৬
চট্টগ্রাম নগরে আসামি ধরতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) আহত হয়েছেন। তাঁর নাম আবু সাঈদ ওরফে রানা। তিনি নগরের বন্দর থানায় কর্মরত। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে বন্দর থানার ঈশান মিস্ত্রির ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
জানতে চাইলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মো. শাকিল ওরফে চাকু শাকিল নামের এক ছিনতাইকারীকে ধরতে এসআই আবু সাঈদসহ পুলিশের তিন-চারজনের একটি দল অভিযানে গিয়েছিল। এ সময় শাকিল ওই এসআইয়ের ঘাড় ও মাথায় ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। শাকিলের সঙ্গে তাঁর কয়েকজন সহযোগীও ঘটনাস্থলে ছিলেন।
খবর পেয়ে এসআই আবু সাঈদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয় জানিয়ে ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, আসামি শাকিলের বিরুদ্ধে ১৫ থেকে ২০টি মামলা রয়েছে। ছুরিকাঘাতে এক এসআইকে আহত করার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁর ১৬ জন সহযোগীকে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করেছে। শাকিলকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।